পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে মজুরী বিতরণ এবং নারীর ক্ষমতায়নে এর প্রভাবের প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশে পরিদর্শনে আসা বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের নির্বাহী পরিচালকগণ। সোমবার (৪ নভেম্বর) আশুলিয়ায় নিউএজ গ্রুপের কারখানা পরিদর্শনে এসে প্রতিনিধিদল বিকাশে বেতন প্রদানে তৈরি পোশাক কর্মীদের জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং কারখানাগুলোর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির খোঁজখবর নেন। এ সময় তারা কর্মীদের কাজের পরিবেশ, একাউন্ট সুরক্ষিত রাখতে কর্মীদের জন্য বিকাশের প্রশিক্ষণ কর্মসূচীগুলো ঘুরে দেখেন এবং কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন। বিকাশ ও নিউএজ গ্রুপের কর্মকতাদের সাথেও নানান গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলেন তারা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কার্যক্রমগুলো কেমন চলছে, নি¤œমধ্যম আয়ের দেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চ্যালেঞ্জগুলো কী, ইত্যাদি বিষয়ে ধারনা নিতেই বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকগণ বাংলাদেশে এসেছেন। তারই অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের অন্তর্গত ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশনের অংশীদার বিকাশ ও নিউএজ গ্রুপের মত তাদের বিভিন্ন অংশীদ্বারদের সাথেও মতবিনিময় করেছেন প্রতিনিধিদল।
বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর সামগ্রিক পেমেন্ট ডিজিটাইজেশনে গুরুত্বারোপ করে বলেন, আর্থিক সেবা গ্রহনে এখনও দেশে জেন্ডার বৈষম্য রয়েছে এবং বিকাশের মত সেবাগুলো এই বৈষম্য দূর করতে ভূমিকা রাখছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী শ্রমিক নির্ভর তৈরি পোশাক খাতে ডিজিটাল বেতন বিতরণ নারীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
বিশ্ব ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর প্যাট্রিজিও প্যাগানো বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে আমরা ব্যাপক পরিবর্তন দেখেছি। আগে কারখানাগুলি নগদ টাকা বা ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন বিতরণ করত- যা ঝামেলাপূর্ণ এবং সময়সাপেক্ষ ছিল। ডিজিটাল পদ্ধতিতে বেতন বিতরণ কর্মী এবং মালিকপক্ষ উভয়ের জন্য লাভজনক। বৃহত্তম ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল সমৃদ্ধ বিকাশে বেতন প্রদান করে কারখানাগুলি আরও গতিশীল, উৎপাদনক্ষম এবং কর্মী বান্ধব হয়ে উঠছে।
নিউএজ গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প নিয়ে কথা বলেন এবং বেতন ডিজিটাইজেশনের উপর জোর দেন। তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে শ্রমিকদের সুবিধার সাথে সাথে প্রশাসনিক ব্যয় কমে, আর্ন্তজাতিক ক্রেতারা আকৃষ্ট হয় এবং কারখানার উৎপাদনও বৃদ্ধি পায়। তিনি আইএফসি ও বিকাশকে ধন্যবাদ জানান।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদল পর্যবেক্ষণ করেন, বেতন গ্রহণে কর্মীরা বিকাশকে সবচেয়ে সুবিধাজনক অপশন মনে করছেন। বিকাশে বেতন পাওয়া এবং সরাসরি বাড়িতে টাকা পাঠানোর সুযোগ তাদের জীবন সহজ করেছে। অন্য বিকাশ একাউন্টে টাকা পাঠানো ছাড়াও মোবাইল ফোন রিচার্জ, দোকানে পণ্য কিনে পেমেন্ট, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের মত কাজেও তারা বিকাশ ব্যবহার করছেন। বর্তমানে ২৮০টি তৈরি পোশাক কারখানার প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার পোশাক কর্মী বিকাশে বেতন পাচ্ছেন।
ব্র্যাক ব্যাংক, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানি ইন মোশন, বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের অর্ন্তগত ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশন, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং অ্যান্ট ফিনান্সিয়াল এর যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বিকাশ, ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ন্ত্রিত পেমেন্ট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস দিয়ে আসছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।