রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ঝিনাইদহের মাঠে মাঠে আমন ধানের ক্ষেতে বাদামি গাছ ফড়িং বা কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিনের মধ্যে জেলার সব উপজেলার মাঠের পর মাঠ ধানক্ষেতে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকের জমিতে পোকার আক্রমণে ধান শুকিয়ে যাচ্ছে। অনেকের আক্রমন শুরু করেছে। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে জেলার কৃষকরা। এ পোকার আক্রমণে চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এদিকে কৃষকদের আপদকালীন এ সময়ে কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পাশে না দাড়ালেও বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা সকাল-বিকাল খোঁজ নিচ্ছেন ও নানা পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। যদিও জেলার কৃষি অফিসগুলো বলছে, কারেন্ট পোকার আক্রমণ হলেও তা নিয়ন্ত্রনে আছে। ফলে ধানের ফলনে কোন সমস্যা হবে না। তারা ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের যে কোন কীটনাশক ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন।
দেখতে ছোট ছোট বাদামি পোকার মতো এই ফড়িং ধান গাছের রস চুষে নিচ্ছে। ফলে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ধান গাছ মরে হলুদ রং ধারণ করছে। এ পোকা প্রথমে ধান গাছের গোড়ায় আক্রমণ করায় কীটনাশক ছিটিয়েও দ্রুত দমন করা সম্ভব হচ্ছে। এই পোকা কোন এলাকায় আক্রমণ করলে দু’এক দিনের মধ্যে তা দ্রুত মাঠের পর মাঠ ছড়িয়ে পড়তে পারে। যে কারনে এ পোকাকে কারেন্ট পোকা বলে।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে ঝিনাইদহ জেলায় ১ লাখ ৫ হাজার ৬৪৬ হেক্টর জমিতে ধান চাষ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু চাষ হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ১২৫ হেক্টর জমি। যার মধ্যে বেশিরভাগ জমিতে চাষ হয়েছে স্বর্ণা জাত। এছাড়াও রয়েছে ব্রি-৪৯ জাত। কৃষি বিভাগের হিসাবে চাষকৃত জমি থেকে ৪ লাখ ৬২ হাজার ৪৪৩ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে। এ ধান থেকে ৩ লাখ ৫৮৮ মেট্রিক টান চাল উৎপাদন হবে। হিসাব অনুযায়ী প্রতি একরে ধান উৎপাদন হবার কথা ৪৫ মন। অবশ্য কৃষকরা বলছেন, পোকার আক্রমন দমন করা না গেলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে না।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উন্নত জাতের বীজ সংগ্রহ করে ধান চাষ করেছিলেন। সঠিক পরিচর্যা ও রোগ বালাই দমনে বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করে। বর্তমানে চাষ করা ধানের ফলন আসতে শুরু করেছে। কোন কোন জমিকে ধানের শীষ বের হয়েছে। এমনকি কিছু কিছু জমিতে ধান পাকা ধরেছে। কিন্তু হঠাৎ কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দেয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে জেলার কৃষকরা।
সরেজমিনে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাঠের পর মাঠ শত শত হেক্টর জমিতে এই কারেন্ট পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। কৃষকরা অভিযোগ, মাঠের পর মাঠ পোকার আক্রমণ হলেও সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তা বা মাঠকর্মীদের দেখা মিলছে না। গত কয়েকদিনে কৃষি অফিসের কাউকে দেখা যায়নি। ফলে তাদের কাছ থেকে কোন পরামর্শ বা সহযোগিতা পায়নি কৃষকরা। তবে, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা প্রতিদিন সকাল বিকাল এসে খোঁজ নিচ্ছে। কি ওষুধ দিতে হবে, কি পরিমাণ দিতে হবে তা দেখিয়ে দিচ্ছে ওই কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
তবে জেলা কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তারা ইউনিয়ন ও মাঠ পর্যায়ে রোগবালাই প্রতিরোধ ও রোগ বালাই দমনে নানা কৌশল এবং ওষুধের ব্যবহার বিষয়ে কৃষকদের ধারণা দিয়ে উঠান বৈঠক লিফলেট বিতরণ করে যাচ্ছেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ভিটশ^র গ্রামের কৃষক শরিফুর ইসলাম ও মন্টু দফাদার জানান, পোকার আক্রমণের পর থেকে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা প্রতিদিন গ্রামের মোড়ে মোড়ে এসে কৃষকদের সাথে কথা বলে পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন কৃষি কর্মকর্তা এলাকায় আসেনি বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহের কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুর রউফ জানান, দিনে গরম রাতে শীত এবং গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলে এই পোকার আক্রমণ বাড়ে। তবে আমরা শুরু থেকে গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক ও হাজার হাজার লিফলেট বিতরণ করে কৃষকদের সচেতন করা চেষ্টা করেছি। কিন্তু ধানের দাম কম হওয়া প্রথমে কৃষকরা গুরুত্ব দেয়নি বলে যোগ করেন। তবে, কারেন্ট পোকার আক্রমণ বেশি হলেও তা নিয়ন্ত্রণে আছে বলে দাবি এই জেলা কৃষি কর্মকর্তার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।