Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে হেমন্ত

মো.আশিকুর রহমান টুটুল, লালপুর (নাটোর) থেকে | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০৪ এএম


হেমন্ত প্রেমী কবি জীবনানন্দ দাশের ‘নির্জন স্বাক্ষর’ কবিতায় হেমন্ত ধরা দিয়েছে। কবি তার ভাষায় লিখেছেন ‘যখন ঝরিয়া যাব হেমন্তের ঝড়ে, পথের পাতার মতো তুমিও তখন আমার বুকের পরে শুয়ে রবে?’। ঠিক তেমনি শরতের শেষে শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে হেমন্ত। হেমন্তের আগমনে প্রকৃতি সেজেছে এক অপরুপ সাজে। সন্ধ্যার মৃদু কুয়াশা, হিমেল বাতাস, রাতের রানী শিউলী, সকালে সবুজ ঘাসের মাথায় জমে থাকা শিশির কণাই জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে এসেছে হেমন্ত। হেমন্তর আগমন ঘটলেই যেন শান্ত হয়ে উঠে উত্তপ্ত এই প্রকৃতি। হেমন্তের আগমনে গ্রামের মেঠোপথে সকালে হাঠলেই পা ভিজে যাই শিশির কণাতে। তাই তো হেমন্তের আগমনে মাঠে মাঠে হেসে উঠেছে সোনালী ধান। পাকাধানের মৌ মৌ সুমৃষ্ট সুভাসে মুখরিত চারিপাশ। আর কয়দিন পরেই কৃষকের ঘরে ঘরে উঠবে রক্তজলকরা সোনালী রোপা ধান আর এই নতুন ধানের চাউল থেকে বাংলার গৃহবধুরা গুরা তৈরী করে নতুন খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরী করবে হরেক রকমের বাঙ্গালী পিঠা-পুলি। আসতে শুরু করবে মেয়ে-জামাই। বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশে প্রতি দুই মাস পর পর প্রকৃতি বদলায় তার রুপ আর রং। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে এখন দুইমাস পর পর ঋতু পরিবর্তন হয়না। ভৌগোলিক কারনে নাটোরের লালপুর উপজেলা সবচেয়ে উচুঁ ও কমবৃষ্টিপাতের এলাকা হিসেবে পরিচিত তার পরেও এবার এই উপজেলায় কার্তিকের শুরুতেই দেখাদিয়েছে শীত। সন্ধ্যার শুরুতেই মৃদুহিমেল বাসাত সাথে সাদা কুয়াশার চাদর ভোরে বাড়ি থেকে বের হলেই রাস্তার দুই ধারের দুর্বার ওপর ঘন শিশির কণা, মাঠে সোনালী রোপা ধানের শীষে শিশিরই জানান দিচ্ছে হেমন্ত প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে শীত। শীতের আগমনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে লেপ-তুষক তৈরীর কাজ। শুরু হয়েছে পথে ঘাটে চটি পেতে পুরাতন কাপড় বিক্রয়। বাজার গুলিতে উঠতে শুরু করেছে শীতের আগাম সবজি। স্থানীয়রা বলছে, ‘হেমন্ত মানেই যেমন শীতের আগমনী বার্তা। অপরদিকে গ্রামবাংলার মানুষের জীবনে হেমন্ত মানেই নবান্ন উৎসবের আমেজ। আগে হেমন্ত এলেই এই জনপদের মানুষের মাঝে আনন্দ বিরাজ করতো। গ্রামের পুরুষেরা সকাল থেকে শুরু করে জমিতে নতুন ধান কেটতো আর গৃহবধুরা লালপেড়ে শাড়ী পরে গ্রামের মেঠোপথ ধরে খাবার নিয়ে জমিতে যেতো। সারাদিনের কাটা ধান রাতভর বাড়িরর উঠানে মাড়াই করতো বাড়ির পুরুষেরা আর গৃহবধুরা সেই ধান রোদে শুকিয়ে ঘরে তুলতো। ঢেঁকিতে নতুন ধানের গুড়া তৈরী করে ঐতিহ্যবাহী নতুন খেজুরের গুড় দিয়ে প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে তৈরী হতো পিঠা-পুলি, খির ও পায়েশ আর গ্রাম গুলিতে পালিত হতো নবান্ন উৎসব কিন্তু বর্তমানে আধুনিকতার যুগে কালের আবর্তে এই গুলি এখন সবই যেন পুথি কথা হয়ে গেছে।’

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ