মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের উদীয়মান রাজনীতিক কেটি হিল (৩২) মার্কিন কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেছেন। তারুণ্যদীপ্ত এই রাজনীতিকের সামনে খোলা অপার সম্ভাবনা। কিন্তু তার নগ্ন ছবি প্রকাশ ও বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগে সরগরম মার্কিন মুলুক। তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগে তদন্ত করছে প্রতিনিধি পরিষদের এথিকস কমিটি। একদিকে স্বামী কেনি হেসলেপ। অন্যদিকে ক্যাপিটল হিলে নির্বাচনী প্রচারণা বিষয়ক একজন সহযোগী। এই দু’জনের সঙ্গেই যৌন সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন কেটি হিল। তবে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেট দলের সদস্য কেটি। টুইটে বলেছেন, এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে যেহেতু তার বিরুদ্ধে এ নিয়ে তদন্ত চলছে তাই তিনি ভাঙা হৃদয় নিয়ে পদত্যাগ করছেন। টুইটারে তিনি পদত্যাগ সম্পর্কে লিখেছেন, আমি বিশ্বাস করি আমার নির্বাচনী দায়িত্ব, আমার সম্প্রদায় ও দেশের জন্য এটাই উত্তম। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
তার বিরুদ্ধে বিবাহবহির্ভূত ওই সম্পর্কের বিষয়ে তদন্ত করছে প্রতিনিধি পরিষদের এথিকস কমিটি। রক্ষণশীল বøগ রেডস্টেট সম্প্রতি একটি অভিযোগ করে রিপোর্ট প্রকাশ করে যে, কংগ্রেসে তার একজন পুরুষ সহকর্মীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল মিস কেটি হিলের। আলাদা এক রিপোর্টে এতে বলা হয়, কেটি হিল বাই-সেক্সুয়াল। অর্থাৎ তিনি পুরুষ ও নারী উভয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এর বাইরে তিনি তার নির্বাচনী একজন সদস্যের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। এতে তার সম্মতি ছিল। একই সঙ্গে তিনি তার স্বামীর সঙ্গেও সম্পর্ক স্থাপন করেন। ফলে ত্রিমুখী হয়ে ওঠে তার যৌন জীবন। এ ছাড়া ওই সাইটটি তার বেশ কিছু নগ্ন ছবিও প্রকাশ করে। এ কারণে প্রতিনিধি পরিষদের এথিকস কমিটি তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে।
কেটি হিল পুলিশের কাছে অনুরোধ করেছেন অনলাইনে তার যে নগ্ন ছবি প্রকাশ করা হয়েছে সে বিষয়ে যেন তারা তদন্ত করে। তবে তিনি কংগ্রেসের সহকারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক বা প্রেমের সম্পর্ক প্রত্যাখ্যান করেছেন। যদি এমন সম্পর্কের বিষয় প্রমাণিত হয় তাহলে তা হবে প্রতিনিধি পরিষদের আইন ভঙ্গ করা। তদন্তের বিষয়ে এথিকস কমিটি একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কারো বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার অর্থ এই নয় যে, সেখানে আইন ভঙ্গ হয়েছে। প্রতিনিধি পরিষদ গত বুধবার এই তদন্ত শুরু করেছে।
অন্যদিকে এরই মধ্যে কেটি হিল তার সমর্থকদের কাছে একটি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তাতে বলেছেন, ২০১৮ সালে নির্বাচনী একজন নারী স্টাফের সঙ্গে তার ‘রিলেশনশিপ’ গড়ে উঠেছিল। এই সম্পর্ককে তিনি অনুচিত বলে আখ্যায়িত করেছেন। তবে এই সম্পর্কের বিষয়ে কংগ্রেস মাথা ঘামাতে পারবে না। কারণ, কেটি হিল তার সরকারি দায়িত্ব নেয়ার আগে ওই ঘটনা ঘটেছিল। এতসবের পরে কেটি হিল রোববার পদত্যাগপত্রে বলেছেন, তিনি এ যাবত যেসব কাজ করেছেন তার মধ্যে সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করা। এতে তিনি আরো লিখেছেন, আমার গোপনীয় ব্যক্তিগত ছবিকে আমার বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এটা আমার গোপনীয়তার বিরুদ্ধে একটি আগ্রাসন। আমার এমন ছবি প্রকাশও অবৈধ। বর্তমানে এ বিষয়ে আইনগত সব বিষয় খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। যতক্ষণ কংগ্রেসে আছি, ততক্ষণ আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে, এর পরে কি প্রকাশ করা হবে এবং তা আমাকে কতটা আঘাত করবে।
মিস কেটি হিল এসবের জন্য তার স্বামীকে দায়ী করেছেন। কারণ, তারা বিচ্ছেদের প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। কেটি হিল মনে করেন, তার স্বামীই তাকে অবমাননা করার চেষ্টা করে থাকতে পারে। তিনি বলেছেন, তার বৈবাহিক জীবনের শেষ ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ বছরগুলোতে নির্বাচনী ওই স্টাফের সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্ক শুরু হয়েছিল। তার ভাষায়, আমি জানি এক্ষেত্রে উভয়ের সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্কও অনুচিত। এ জন্য আমি সমর্থকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।
কংগ্রেসের নির্বাচনী সময়কালে দু’বছর আগে তিনি স্বামী কেনি হেসলেপকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ এবং ‘লাভ অফ মাই লাইফ’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। তাদের বিয়ে হয়েছিল ২০১০ সালে। কিন্তু এখন সেই সম্পর্কে টান ধরেছে। তারা বিচ্ছেদের পথে রয়েছেন। তাই রোববারের বিবৃতিতে তিনি নিজেকে একজন যোদ্ধা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কেটি হিল বলেছেন, এখন আমার যুদ্ধ হলো এভাবে যারা নিষ্পেষণ করেন তাদেরকে পরাজিত করা। তারা বহু নারীকে ভিকটিমে পরিণত করছে। আমার এই লড়াই অসংখ্য নারী ও যুবতীকে আলোতে আসার পথ দেখাবে।
কেটি হিল হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার দক্ষিণে ২৫তম ডিস্ট্রিক্ট থেকে ২০১৮ সালে নির্বাচিত ডেমোক্রেট দলীয় সদস্য। একই সঙ্গে তিনি হাউজ ওভারসাইট অ্যান্ড রিফর্ম কমিটির ভাইস-চেয়ারওমেন। এই কমিটি প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আর্থিক বিষয়ে তদন্ত করছে। এর আগে তিনি অলাভজনক সংগঠন পিপল অ্যাসিসটিং দ্য হোমলেস-এর নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।