Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কাউকে মৃত্যুদন্ড না দেয়ায় ক্ষোভ

প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গুজরাট দাঙ্গার রায়ে ভুক্তভোগীদের অসন্তোষ, আপিলের সিদ্ধান্ত
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের গুজরাটে ২০০২ সালে ভয়াবহ দাঙ্গার সময় গুলবার্গ সোসাইটিতে গণহত্যার ঘটনায় ১১ জনকে যাবজ্জীবন, ১২ জনকে ৭ বছর এবং একজনকে ১০ বছরের কারাদন্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গত শুক্রবার বিশেষ আদালতের দেয়া ওই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন দাঙ্গায় নিহত সাবেক সংসদ সদস্য এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া জাফরি। তিনি বলেছেন, আমি এই সাজায় খুশি নই। দোষীদের কম সাজা দেয়া হয়েছে। আমাকে ফের প্রস্তুত হতে হবে। আইনজীবীদের সঙ্গে রায় সম্পর্কে আলোচনা করে এগোতে হবে। আমি কোনো সুবিচার পাইনি।
গুলবার্গ সোসাইটিতে গণহত্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সেদিন সকাল ৭টা থেকে আমি সেখানেই ছিলাম। আমি নিজের চোখে সবকিছু দেখেছি। আমার চোখের সামনেই কত মানুষকে নির্মমভাবে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিল। আমার স্বামী আহসান জাফরিকেও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। এসব ঘটনায় দোষীদের কি এতো কম সাজা পাওয়া উচিত? এটা ভুল বিচার। বেশির ভাগ  লোককে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সবাইকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া উচিত ছিল। বিশিষ্ট সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদ বলেন, এই বিচারে হতাশ হয়েছি। যে ১১ জনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ছিল তাদের তো যাবজ্জীবন হওয়ারই ছিল। কিন্তু অন্য ১২ জনকে মাত্র ৭ বছরের কারাদ- দেয়া ঠিক হয়নি। কয়েক ঘণ্টা ধরে অপরাধীরা মুসলমানদের পুড়িয়ে হত্যা করেছিল। আমার মতে এটা দুর্বল জাজমেন্ট। এ নিয়ে আমরা আপিল করব।
গত শুক্রবার দেয়া রায় সম্পর্কে কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভির বলেছেন, গণহত্যাকারীদের রেহাই দেয়া উচিত নয়। অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (মিম) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেছেন, যদি সুশীল সমাজের ইতিহাসে গুলবার্গ হত্যাকা- সবচেয়ে কালো অধ্যায় হয়, তাহলে এই মামলায় দোষীদের মৃত্যুদ-  দেয়া উচিত। যাবজ্জীবন বা ১০ বছরের সাজা যথেষ্ট নয়। এই মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর আর সি কোদকার বলেন, ২০০২ সালের ঘটনা সুশীল সমাজের কাছে অন্ধকারতম দিন ছিল। টুইটারে আশীষ ত্রিবেদী নামে একজন উপহাস করে লিখেছেন, ওয়াও! সুতরাং আমি ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ এবং হত্যা করতে পারি। মাত্র ৭ বছরের জেল হবে! তাও আবার ১৪ বছর পরে। গুজরাটের হিন্দু হওয়ার জন্য আমার গর্ববোধ হচ্ছে!  রাকেশ বুটকরি নামে একজন লিখেছেন, এ দেশে কি কেবল মৃত্যুদ-ের সাজা মুসলিমদের জন্য? করমবীর সিং ব্রার নামে একজন বলেন, গুলবার্গ মামলায় কারো মৃত্যুদ- হয়নি এটা লজ্জার কথা! তারা সন্ত্রাসী, তাদের ওইরকমই শাস্তি দরকার।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি একদল হিংস্র জনতা মুসলিম অধ্যুষিত গুলবার্গ সোসাইটি আবাসনে আগুন ধরিয়ে দিলে প্রাণ হারান সাবেক কংগ্রেস সংসদ সদস্য এহসান জাফরিসহ ৬৯ জন মুসলিম। দীর্ঘ ১৪ বছর পর গত ২ জুন আহমেদাবাদের বিশেষ আদালত এ সংক্রান্ত এক রায়ে ২৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত এবং ৩৬ জনকে বেকসুর খালাস দেয়। বিবিসি, এনডিটিভি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাউকে মৃত্যুদন্ড না দেয়ায় ক্ষোভ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ