পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শুদ্ধি অভিযান শুরু এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণার পর আতিঙ্কত হয়ে পড়েছেন প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করছে গোয়েন্দা সংস্থা, এমন খবর রটে গেছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চলমান শুদ্ধি অভিযানে যারা টার্গেটে রয়েছেন, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, দুর্নীতি বিরোধী অভিযান হচ্ছে একটি প্রশাসনিক অভিযান। প্রশাসনের কর্মকর্তারা সর সময় দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে সব সময় দায়িত্ব পালন করে।
বালিশ কান্ড, পর্দা কান্ড, বালিশের কভার কান্ড, মেডিক্যালের সরঞ্জাম ক্রয় কান্ড ও কর্মকর্তাদের কারণে-অকারণে বিদেশ সফর কান্ডের মতো নিজেদের অপকান্ডের কারণেই কর্মকর্তারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। বড় বড় প্রকল্পের সঙ্গে জড়িতদের আতঙ্ক সবচেয়ে বেশি। প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সবিচালয়ে জনপ্রশাসনসহ সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলা হচ্ছে। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা নিজেদের গুটিয়ে রাখছেন বলে জানা গেছে।
ইতোমধ্যে মাঠ প্রশাসনে কর্মরর্তা জেলা প্রশাসক (ডিসি) উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সহকারী কমিশনার ভূমি এবং বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু যেখানে শেষ করেছিলেন, এবার সেখান থেকেই তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু করেছেন। তবে পর্যায়ক্রমে ধীরে ধীরে। এর আরো বিস্তৃতি ঘটবে। ক্যাসিনোয় জুয়া-মদের আড্ডায় শুরু হওয়া অভিযান ইতোমধ্যে কার্যত দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে রূপ নিয়েছে। প্রশাসনে তেমন শুদ্ধি অভিযান চলবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে।
সরকারি দল থেকে অনুপ্রবেশকারী বিতাড়নের যে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে, প্রশাসনে তেমন কিছু ঘটে গেলে তার দায়িত্ব কে নেবে তা নিয়েই দুশ্চিন্তা। আদর্শিক চিন্তাভাবনাকে প্রাধান্য দিয়ে কর্মকর্তার তালিকা যাচাই-বাছাই করতে কিছুটা সময় যাচ্ছে। কিন্তু জানা যায়, ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা কিছু কর্মকর্তার পছন্দের ব্যক্তিকে পদোন্নতির তালিকায় ঢুকাতেই যাচাই-বাছাইয়ের নামে সময়ক্ষেপণ চলছে।
জানা গেছে, বর্তমান সরকার টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর বালিশ ক্রয় কান্ড, পর্দা ক্রয় কেলেঙ্কারি এবং স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি ধরা পড়েছে। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়, গণপূর্ত অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, রাজউক, ওয়াসাসহ বিভিন্ন অধিদপ্তর ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে এখন এক ধরনের থমথমে ভাব বিরাজ করছে। নানা প্রশ্নে আলোচনা-সমালোচনাও হচ্ছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে দুর্নীতি দমন কমিশন বেশ তৎপর। পাশাপাশি এই সংস্থার স্বাভাবিক দুর্নীতিবিরোধী অভিযানও চলছে। ইতোমধ্যে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এই সংস্থা গ্রেফতারও করেছে। মূলত সরকারি দল আওয়ামী লীগের ঘর থেকে শুরু হওয়া দুর্নীতি বিরোধী শুদ্ধি অভিযানের পর থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ সারাদেশেই বিরাজ করছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন এবং ভারত সফর শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আরেকটি ওয়ান-ইলেভেন রুখতেই এই অভিযান। এই অভিযান চলবে। দুর্নীতিবাজ যেই দলের হোক কাউকে ছাড়া দেয়া হবে না। আত্মীয়স্বজনকেও ছাড় দেয়া হবে না।
রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে জেলা ও থানা পর্যায় পর্যন্ত এক ধরনের ইতিবাচক নেতিবাচক আলোচনা চলছে। তবে বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ এই অভিযান পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রীর ওপর খুশিই হয়েছেন এমন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে। তবে দলের অভ্যন্তরে বিশেষ কিছু মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও এমপি এবং যুবলীগ-ছাত্রলীগে এ নিয়ে বেশ অস্বস্তি থেকে অসন্তোষই প্রকাশ করেছেন। প্রশাসনে অতিরিক্ত সচিব পদের পদোন্নতির সভা মাসখানেক আগে শেষ হলেও এ পর্যন্ত পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। বলা হচ্ছে আদর্শিক চিন্তাভাবনাকে প্রাধান্য দিয়ে কর্মকর্তার তালিকা যাচাই-বাছাই করতে কিছুটা সময় যাচ্ছে।
উপসচিব, যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে চাহিদা না থাকলেও পদোন্নতির ধারা থামছেই না। প্রশাসনে এই তিনটি পদের বিপরীতে এখনই কয়েক গুণ বেশি কর্মকর্তা রয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ অতিরিক্ত সচিব পদে আছেন চার গুণ। তার পরও এই পদে নতুন পদোন্নতির প্রক্রিয়া চলছে। নতুন পদোন্নতি প্রক্রিয়া শেষ হলে এই পদে কর্মকর্তার সংখ্যা বেড়ে হবে ছয় থেকে সাত গুণ। এতে করে প্রশাসন আরো ভারসাম্যহীনতার দিকে যাচ্ছে।
বাস্তবে সচিব পদ ছাড়া প্রশাসনের সব পদেই উল্টো অবস্থা বিরাজ করছে। অর্থাৎ যেখানে কর্মচারীর সংখ্যা বেশি থাকার কথা সেখানে কম আছে। যেখানে প্রয়োজন নেই সেখানেই আছে বেশি। প্রশাসনে অতিরিক্ত সচিবের অনুমোদিত পদ ১২২টি। বর্তমানে এই পদে আছেন ৪৫৮ জন। যুগ্মসচিবের পদ ৩৮৮টি, বর্তমানে আছেন ৮৪১ জন। উপসচিবের পদসংখ্যা এক হাজার ৩৩০টি, কর্মরত এক হাজার ৭০০ জন। কিন্তু এর উল্টো চিত্র নিচের দু’টি পদের ক্ষেত্রে। সিনিয়র সহকারী সচিবের অনুমোদিত পদসংখ্যা দুই হাজার ১৩১টি, এর বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত এক হাজার ৫২৭ জন। সহকারী সচিবের প্রায় দুই হাজার পদের চাহিদার বিপরীতে কর্মরত এক হাজার ৫৫৯ জন। তবে প্রশাসনের সর্বোচ্চ সচিব পদে ভারসাম্য বরাবরই বজায় রাখা হয়। বর্তমানে সচিব ও সচিব মর্যাদায় কর্মরত ৮২ জন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।