Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইতিহাসে ভুলে যাওয়া প্রথম মুসলিম নোবেল বিজয়ী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০১৯, ৬:৩৯ পিএম

বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানসূচক পুরস্কারগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নোবেল পুরস্কার। চলতি সপ্তাহে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, সাহিত্য এবং সর্বশেষ অর্থনীতিসহ মোট ৬টি ক্যাটাগরিতে প্রতিভাবানদের হাতে তুলে দেওয়া হয় এ বছরের পুরস্কারটি। ১৯০১ সাল থেকে সেসব ব্যক্তিদের সম্মানে নিয়মিত রয়্যাল সুইডিশ একাডেমী বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল প্রবর্তিত এ পুরস্কার প্রদান করে আসছে।

এর মধ্যে ১৯৭৯ সালে বিজ্ঞান ক্যাটাগরিতে নোবেল পুরস্কারটি তৎকালীন সময়ে এক বিশেষ কৌতূহলের সৃষ্টি করেছিল। তার আগে প্রায় সব জাতি, ধর্ম এবং বর্ণের লোকজন এই পুরস্কারটিতে ভূষিত হলেও, সে বছরই প্রথম কোনো মুসলিম নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। তখন বিজ্ঞানে ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কারটি পান আব্দুস সালাম নামের এক মুসলিম বিজ্ঞানী। অনেকটা বিস্মৃত হয়ে ওঠা সেই বিজ্ঞানী মূলত মৌলিক কণার মধ্যে দুর্বল ও তড়িৎ চৌম্বকীয় মিথষ্ক্রিয়া বিষয়ক তত্ত্বে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য পদার্থ বিজ্ঞান ক্যাটাগরিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।

পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত হলেও ধর্মীয় বিদ্বেষের শিকার হয়ে দীর্ঘদিন যাবত নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত ছিলেন বিরল প্রতিভার অধিকারী এ ব্যক্তিত্ব। যে কারণে এখন পর্যন্ত তার কোনো নাম কিংবা কথা উচ্চারিত হয় না পাকিস্তানে। বিশ্বের প্রথম মুসলিম হিসেবে নোবেল জয়লাভের মাধ্যমে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেওয়া এ বিজ্ঞানী এমনকি আজও ইতিহাসের পাতাতেও অবহেলিত।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘বিবিসি নিউজ’ জানায়, একজন বিজ্ঞানী হয়েও ইসলামের সব বিধি-নিষেধ পালনের কারণে শুরু থেকেই নিজ মহলে সমালোচিত ছিলেন সালাম। তাছাড়া আহমেদিয়াপন্থি মুসলিম হওয়ার সুবাদে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মুসলিমরাও তাকে প্রায়ই অপদস্থ করত। এরই প্রতিক্রিয়ায় আবদুস সালাম কোনো এক সময়ে বলেছিলেন, ‘ধর্ম সব সময়ই আমার মনে, আর বিজ্ঞান কেবলই আমার মস্তিষ্কে।’

দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করা দৃঢ়প্রতিজ্ঞা, দেশপ্রেমী ও বিজ্ঞানের একনিষ্ঠ এই সেবক শুরুতে তীব্র অভাব অনটনের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন। তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ উপনিবেশে বেড়ে ওঠা গুটিকয়েক মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যেও একজন। যে কিনা সে সময় বৃত্তি নিয়ে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পান। তবে সেখানেও তাকে তৎকালীন ইংরেজদের নিষ্ঠুর আচরণ ও বৈষম্যের শিকার সইতে হয়। তবে এত কিছুর পরও কখনো পিছপা হননি নিজের গবেষণা কাজে। একের পর এক ত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে পড়াশোনা শেষ করে অবশেষে নিজ দেশে ফিরে আসেন ক্যামব্রিজে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া এই আব্দুস সালাম। পরবর্তী সময়ে গণিত বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন লাহোর বিশ্ববিদ্যালয়ে। যদিও ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আহমেদিয়াপন্থি এই মুসলিমের নাগরিকত্ব বাতিলের ঘোষণা দেয় তৎকালীন পাক সরকার। যার প্রেক্ষিতে ১৯৫৩ সালে দেশত্যাগে বাধ্য হন বিজ্ঞানের একনিষ্ঠ এই সেবক। মূলত সে সময় তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি ও যুক্তরাজ্য তিন দেশই নাগরিকত্ব প্রদান করে।

এরপর থেকে পুরোদমে বিজ্ঞান গবেষণায় মনোযোগ দেন সালাম। এমনকি ইতালিতে গড়ে তোলেন একটি বিজ্ঞান একাডেমি। পরবর্তীকালে বাকি জীবন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়ালেও শেষ পর্যন্ত থিতু হন যুক্তরাজ্যে। তবে এতকিছুর বদলে অসাধারণ প্রতিভাবান এই বিজ্ঞানীর জীবন যেন রচনা করে গেছে নিজ দেশ এবং মানবতার এক করুণ ইতিহাস। যা আজও বিশ্বের অনেক লোকের কাছেই অজানা।

 



 

Show all comments
  • salim ১৬ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:০০ পিএম says : 1
    Strange!why inqulab said ahamaida. It will be KADIANI.
    Total Reply(0) Reply
  • Mustafizur Rahman Ansari ১৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
    He is a Brilliant for Since but his life style was Ahmadiya(Kadiani),Ahmadia and Muslim life style is far different.
    Total Reply(0) Reply
  • Mustafizur Rahman Ansari ১৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
    He is a Brilliant for Since but his life style was Ahmadiya(Kadiani),Ahmadia and Muslim life style is far different.
    Total Reply(0) Reply
  • kuli ২০ অক্টোবর, ২০১৯, ২:০৬ পিএম says : 0
    "আহমেদিয়াপন্থি মুসলিম" হা হা হা...... আহমেদিয়ারা হল কাদিয়ানি,আর কাদিয়ানিরা কাফের। তারা মির্জা গোলামকে শেষ নবি মনে করে।এরা ইসলামের সত্রু।এদেরকে ব্রিটিশরা তইরী করসিলও।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ