সউদী আরবে চলতি বছর থেকে পবিত্র ওমরাহ পালনে যাওয়া ব্যক্তিদের ১১ হাজার ১৫১ টাকা বেশি গুণতে হবে। একইসঙ্গে যেনতেন ভাবে থাকার হোটেল ও যাতায়াতে গাড়ির বুকিং দেখিয়ে আর ভিসা করা যাবে না। এ ছাড়া হোটেল বুকিং ও যাতায়াতের টাকাও আন্তর্জাতিক ব্যাংক হিসাবের (আইবিএএন) মাধ্যমে ভিসার আবেদনের সময়ই পরিশোধ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সউদী সরকার ওমরাহর ভিসা ফি নতুন করে ৩০০ সউদী রিয়াল (৬ হাজার ৭৬৫ টাকা) আরোপ, সউদী ওমরাহ কোম্পানির সার্ভিস চার্জ ১০৫ রিয়াল (২ হাজার ২৬৭ টাকা) ও ভিসা সার্ভিস বাবদ ৯৪ রিয়াল (২ হাজার ১১৯ টাকা) সুনির্দিষ্ট করে দেওয়ার কারণে এই খরচ বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে সার্ভিস প্রোভাইডিং সংস্থা মুনাচ্ছাকে ভিসা আবেদনের সময়ের মোট খরচের ২০ শতাংশ প্রদানের একটি বিষয় এখনো অমীমাংসিত রয়েছে। এই চার্জ আরোপ করা হলে খরচ আরও কয়েক হাজার টাকা বাড়বে।
এ ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত অঙ্কের অর্থ ছাড়াও হোটেল ও গাড়ি ভাড়ার টাকারও ২০ শতাংশ যুক্ত হতে পারে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে ফাইনাল সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
তবে সউদী সরকার ওমরাহর জন্য যে ফি ও অন্যান্য চার্জ নির্ধারণ করেছে তাতে হোটেল এবং যাতায়াতের খরচ বাদ দিয়েও আগের তুলনায় অতিরিক্ত ৩৫০ রিয়ালের কম-বেশি প্রদান করতে হতে পারে। সউদী সরকারের নির্দেশনার বাইরে সেখানে কারও কিছু বলার থাকে না।
এর আগে ওমরাহ ভিসার জন্য এজেন্সিগুলোকে মাত্র ২০০ থেকে ২৫০ রিয়াল পরিশোধ করতে হতো। এই অর্থ সউদী কোম্পানিগুলোর সার্ভিস চার্জসহ অন্যান্য চার্জের নামে নেওয়া হতো।
সউদী ওমরাহ কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতামূলকভাবে তাদের ভিসা প্রতি সার্ভিস চার্জ ৪০ রিয়াল থেকে ১০০ রিয়াল পর্যন্ত গ্রহণ করত। গাড়ি ভাড়া বাবদ গ্রহণ করত আরও ৫০ থেকে ৭০ রিয়াল।
এ ক্ষেত্রে ভিসা প্রদান করা ছাড়া সউদী হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের অন্য কোনো দায়িত্ব ছিল না এবং কোনো রকমের ফিও নিত না। আগের নিয়মে একটি হোটেল দেখিয়ে দিলেই হতো। কেউ চাইলেই কোনো ওমরাহ এজেন্সি থেকে তাদের সার্ভিস চার্জসহ ৭ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা খরচ করে ওমরাহ ভিসা নিয়ে নিজের উদ্যোগে ওমরাহ পালনে চলে যেতে পারত।
এ বছর থেকে সেটি আর সম্ভব নয়। প্রথম দিকে কিছু সংবাদমাধ্যমে ওমরাহ খরচ কমবে মর্মে ভুল তথ্য পরিবেশিত হওয়ার কারণে কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। আসলে এর আগে ওমরাহর ওপর সরকারের কোনো ফি ছিল না। এখন নতুন করে ৩০০ রিয়াল ধার্য হয়েছে। গত বছর ওমরাহ মৌসুমে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ ওমরাহ পালন করেছে।
এজেন্সিগুলো প্রথম দিকে সব খরচ মিলিয়ে সর্বনিম্ন ৬৫ হাজার টাকা থেকে ওপরের দিকে ওমরাহ প্যাকেজ দিয়েছিল। যদিও পরে মধ্যপ্রাচ্যগামী বিমানের ফ্লাইট সংকটের কারণে শেষের দিকে প্যাকেজ মূল্য অনেক বেড়ে যায়।
সউদী সরকার হজ ও ওমরাহ ভিসার জন্য নতুন করে ৩০০ রিয়াল ধার্য করলেও তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার ওমরাহর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ২ হাজার রিয়াল প্রদানের যে বাধ্যবাধকতা ছিল তা রাষ্ট্রীয় আদেশের মাধ্যমে তুলে নিয়েছেন। ফলে এখন কোনো ব্যক্তি নির্ধারিত ফি প্রদান করে যেকোনো সময়ই একাধিকবার ওমরাহ পালন করতে পারবেন। এর ফলে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব থেকে ওমরাহ যাত্রী অনেক বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।