চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
মুসলমান জাতি আল্লাহ-তায়ালার মনোনিত জাতি। আল্লাহ মানুষ বানিয়েছেন পবিত্র ফেরেস্তাদের সাথে অত্যন্ত দেমাক নিয়ে। পবিত্র কোরআনুল কারিমের সূরা আল-বাকারা বাইশ নং আয়াতে বর্ণিত “আল্লাহ তায়ালা ফেরেস্তাদের সাথে বলেছিলেন “হে ফেরেস্তাগণ আমি (আল্লাহ) আমার প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে চাই”। ফেরেস্তাগণ বলেছিলেন আল্লাহ ইতিপূর্বে আপনি জ¦ীন সৃষ্টি করেছেন তারা বিপদগামী তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই আছে। সুতরাং আমরা (ফেরেস্তা) আপনার ইবাদত করছি এবং করবো। আল্লাহ বলেন, হে ফেরেস্তাগণ আমি (আল্লাহ) যা জানি তোমরা তা জানো না। মুসলমান জাতি বাদশা জাতি। এই জাতিকে অনুকরণ অনুস্মরণ করবে অন্যান্য জাতি। দুঃখের বিষয় আজ মুসলমান জাতি কোথায় গিয়ে পৌঁছে গিয়েছে চিন্তা করা যায় না। কেন আজ মুসলমান জাতির অবক্ষয় হলো। কিসের আশায়, কিসের নেশায়, আজ দিনে দিনে মুসলমান বিপদগামী হচ্ছে। আল্লাহ-তায়ালার নিকট মনোনিত ধর্ম ইসলাম আর ইসলামের ছায়াতলে মুসলমান। মুসলমানের কাজ, কর্ম, চলা, ফেরা, দেখে অন্যান্য ধর্মের মানুষ শিখবে এবং গুনাগুন বিচার বিশ্লেষণ করে মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করবে। আজ মুসলমান সেই পথ থেকে সরে যাচ্ছে। মুসলমান জাতি যাদেরকে বিধর্মী বলেন সেই বিধর্মীদের মধ্যে মুসলমানের করণীয় কাজগুলো ঢুকে গিয়েছে। আর বিধর্মীদের করণীয় কাজগুলো মুসলমান জাতির মধ্যে ঢুকে পরেছে। পবিত্র হাদিস শরীফে বর্ণিত হুজুর (সঃ) বলেছেন, যিনি প্রতারণা করেন অথবা প্রতারণার আশ্রয় নেন, কাল কেয়ামতের দিন তার সুপারিশ করবেন না। তাহলে দেখুন ক্ষণস্থায়ী এই দুনিয়ার লোভে পরে কেন প্রতারণা করছেন। ভাল পণ্যের সাথে মন্দ পণ্য মিশ্রিত করে এক নম্বর বলে বাজারে চালিয়ে দিচ্ছেন। কাউকে ভাল চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে ধোঁকা দিচ্ছেন। মসজিদ মাদ্রাসায় কোরআনুল কারিমের নিচে বসে মিথ্যা বলছেন। নিজে যাহা করেন না তাহা অন্যের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। যাহা করেন তাহা প্রকাশ করছেন না। নিজে না করে অপরকে উপদেশ দিচ্ছেন। সবই ভুল, সবই অন্যায়। পদে পদে ঘুষ খাচ্ছেন, পদে পদে সুদ খাচ্ছেন। আজ একটা কথা না বললেই নয়। বিশে^ অনেক ধর্মের উৎসব পালিত হয়। আমরা কিছু দেখি কিছু দেখি না। যেগুলো দেখি তার বর্ণনা দিচ্ছি। খৃষ্টধর্মের পবিত্র বড় দিন। তাদের বড় দিন পালনে গরীব, ধনী, রাজা, বাদশা সকলের জন্য বড় দিন এবং সকলেই যেন আনন্দ উৎসব করতে পারে সেই জন্য তারা পণ্যের দাম কমিয়ে দেন। পক্ষান্তরে মুসলামান উল্টো পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর বা পবিত্র ঈদ-উল-আযহার সময়ে সকল পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে দেন। বেশী বেশী লাভের আশায়।
ছোট একটি গল্প বলছি, একটি ধর্মীয় উপাশনালয়ের পাশে ছোট একটি দোকান সাজিয়ে একজন মুসলমান প্রতিদিন কিছু পণ্য বিক্রয় করেন। ঐ দোকানের দেখা দেখি একজন অমুসলিম ছোট একটি দোকান সাজিয়ে কিছু পণ্য বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বসলেন। কিন্তু তার দোকানে খুব কম লোকই আসেন বেচা বিক্রিও কম হচ্ছে। লোকটার আর্থিক অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। বিষয়টি আগের দোকানদার অনুভব করলেন এবং ভাবলেন আল্লাহ-তায়ালা আমাকে অনেক কিছু দিয়েছেন। আমি যদি প্রতিদিন কিছুক্ষণের জন্য দোকান বন্ধ রাখি অথবা বেচা বিক্রি বন্ধ করে দেই তাহলে লোকটা হয়ত কিছু বেচা বিক্রি করে তার সংসারটি ভালভাবে চালাতে পারবেন। যেই চিন্তা সেই কাজ কিছুদিন পর দেখা গেল ঐ লোকটির অবস্থা ধীরে ধীরে ভাল হতে লাগলেন। একদিন লোকটি এক ক্রেতাকে জিজ্ঞেস করলেন ভাই উনার দোকান খোলা অথচ আপনারা সেখান থেকে পণ্য না কিনে ফেরত আসেন। ক্রেতা বলেন, তিনি এখন বিক্রি করবে না কারণ আজ যা বিক্রি হয়েছে তাতে তিনি খুব লাভবান হয়েছেন অথচ আপনি সারাদিন কিছুই বেচা বিক্রি করতে পারেননি তিনি তা দেখে আপনার ভালোর জন্য আপনার দোকানে ক্রেতাদেরকে পাঠাচ্ছেন। লোকটি তাঁর মহত্ত্ব দেখে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হলেন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন।
পরিশেষে, আমরা কি পারি না আদর্শ জীবন যাপন করতে? কারণ আমাদের ধর্মের আদর্শ কেন গ্রহণ করছি না। আমাদের মুসলমান ধর্মকে সকলে অনুকরণ করবে। আমরা সেই ধর্মের অনুসারী হয়েও কেন ভুল করছি। তাহলে কি আমরা মুসলমানগণ আল্লাহর পবিত্র বানী এবং নবী মুহাম্মদ (সঃ) এর হাদিস বিশ^াস করছি না। আসুন ইসলামের আলোকে অলোকিত হই পরিপূর্ণ জীবন গড়ি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।