নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
নেপাল সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের ক্যাম্প থেকে বাদ পড়া দেশসেরা দুই টেবিল টেনিস (টিটি) তারকা মানস চৌধুরী ও সালেহা পারভীন সেতু ফেডারেশনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, তারা আইনগতভাবেই এ নোটিশের জবাব দেবেন। পেশাগত কারণে ক্যাম্পের অনুশীলনে নিয়মিত না থাকায় মানস ও সেতু’কে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পের দল থেকে বাদ দেয় ফেডারেশন। যার প্রতিবাদ স্বরুপ এ দুই তারকা খেলোয়াড় আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
মানস চৌধুরী বাংলাদেশ টেবিল টেনিসের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। জাতীয় টিটি এককে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন তিনি। ২০১০ ঢাকা এসএ গেমসে ব্রোঞ্জপদক জয়ী। র্যাাঙ্কিংয়ে বর্তমানে মানসের অবস্থান দুই। পেশায় একজন দন্ত চিকিৎসক। আসন্ন এসএ গেমসের ক্যাম্পে গত ২৫ আগস্ট যোগ দেয়ার পর পেশাগত কাজের জন্য ছুটি নিয়ে এখন চট্টগ্রামে আছেন তিনি। সাংসারিক খরচ চালানোর জন্য আসন্ন এসএ গেমসের ক্যাম্পে দু’বেলা অনুশীলন করতে পারবেন না- মর্মে আবেদন করেছিলেন এই চিকিৎসক। কিন্তু বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নির্দেশনা থাকায় তার আবেদন পত্র গ্রহণ করেনি ফেডারেশন। ফলে জাতীয় দলের ক্যাম্প থেকে বাদ দেয়া হয় মানসকে।
অন্যদিকে শিক্ষকতা পেশায় জড়িয়ে থাকায় স্কুল থেকে দু’বেলা অনুশীলনের জন্য ছুটি না পাওয়ায় একবেলাই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন ২০১০ এসএ গেমসে আরেক ব্রোঞ্জজয়ী সালেহা পারভীন সেতু। তার এই একবেলা অনুশীলনের কারণেই ক্যাম্প থেকে বাদ দেয়া হয় সেতু’কে। জাতীয় দল থেকে বাদ দেয়ার সু-নির্দিষ্ট কারণ জানতে সোমবার ফেডারেশনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান মানস ও সেতু। লিগ্যাল নোটিশে দুজনে তাদের বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মো: আতিকুল ইসলাম জোয়ারদারের মাধ্যমে পাঠানো সালেহার লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, আমার মোয়াক্কেলা সালেহা সেতু উত্তরার ডিপিএস, এসটিএস স্কুলে শিক্ষকতা করেন। টিটি ফেডারেশন থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে দুবেলা অনুশীলনের জন্য ছুটির আবেদন করলে তা মঞ্জুর করেনি স্কুল। তাই ১৭ সেপ্টেম্বর আমার মোয়াক্কেলাকে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। যেহেতু অনুশীলনের জন্য তিনি ছুটি পাননি, তাই বিওএ’র মাধ্যমে আবার মোয়াক্কেলার ছুটির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করে আমার মোয়াক্কেলাকে কোন কারণ না দর্শিয়ে কিংবা তার বক্তব্য না শুনে বেআইনিভাবে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার দু’দিনের মধ্যে ক্যাম্প থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা পত্র প্রত্যাহার করে আমার মোয়াক্কেলার অনুশীলনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। অন্যথায় আমার মোয়াক্কেলা আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন।’
এদিকে মানসের বিষয়ে লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, ‘আমার মোয়াক্কেল মানস চৌধুরী চট্টগ্রামের দন্ত চিকিৎসক। তার সাংসারিক খরচ, চেম্বার খরচ ও স্টাফদের বেতন বাবদ মাসে লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। যা তার পেশাগত কার্য পরিচালনার মাধ্যমে উপার্জন করেন। দন্ত চিকিৎসা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার বলে আমার মোয়াক্কেল না থাকলে চিকিৎসা প্রার্থীদের ক্ষতি হবে। তাছাড়া টিটি খেলাটি এখনো পেশা হিসেবে গ্রহন করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। তাই ক্যাম্পে না এসে সরাসির বাছাই প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়ার আবেদন করেছিলেন এককে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ও র্যাঙ্কিংয়ে দু’নম্বরে থাকা এই খেলোয়াড়। কিন্তু আমার মোয়াক্কেলকে কোনরুপ আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে নয় নম্বর খেলোয়াড়কে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার দু’দিনের মধ্যে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। অন্যথায় আমার মোয়াক্কেল আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন।’
এ প্রসঙ্গে টিটি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শেখ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘লিগ্যাল নোটিশ নিয়ে আমাদের কোনো ভাবনা নেই। তারা হয়ত মনে করেছে, তাদের আইনগত সুবিধা নেয়া উচিত। তাই তারা নোটিশ পাঠিয়েছে। আমরাও আইনগতভাবে জবাব দিব।’
মানস বলেন, ‘ফেডারেশন কর্তাদের অনেক অনুরোধ করেছি কিন্তু কাজ হয়নি। তারা এখন নিয়ম দেখাচ্ছেন, অলিম্পিকের দোহাই দিচ্ছেন। তারা দেশের কথা ভাবছেন না। এর আগেও তো আমি চট্টগামে থেকে অনুশীলন করে এসএ গেমস, কমনওয়েলথ গেমসে খেলেছি। এখন সমস্যা কি?’ এদিকে কোন নোটিশের ধার ধারেনি ফেডারেশন। বরং নতুন করে সিনিয়র খেলোয়াড় মৌমিতা আলম রুমীকে বাদ দিলো সিলেকশনের একদিন আগেই। রুমীর অভিযোগ, ‘ক্যাম্প কমান্ডারের আস্থাভাজন বিশেষ একজনকে সুবিধা দেয়ার জন্যই আমাকে অন্যায়ভাবে বাদ দেয়া হয়েছে। এতদিন কিছু বলেনি। আজ (মঙ্গলবার) নারী দলের সিলেকশন অথচ আগের রাতে (সোমবার) জানানো হয় আমাকে বাদ দেয়ার কথা।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।