নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশেষ সংবাদদাতা : সুপার লীগে আজ দুই জায়ান্টের লড়াই। লড়াইয়ের মঞ্চটি রাজধানীর বাইরে, দর্শক-সমর্থকদের সীমিত প্রবেশাধিকার ভেন্যু বিকেএসপিতে! তারপরও লড়াইটি আবাহনীর জন্য যেখানে বদলা’র, সেখানে শিরোপা পুনরুদ্ধার লড়াইয়ে মোহামেডানের টিকে থাকার বড় পরীক্ষাও এই ম্যাচটি। অথচ, এই ভেন্যুতে টানাম ম্যাচে আবাহনী খেলার সুযোগ পেয়েও জায়ান্টদের বিপক্ষে দিতে পারছে না হুংকার, অন্যদিকে মোহামেডান ক্রিকেটাররাও এই ম্যাচটিকে ঘিরে পাচ্ছে না বাড়তি উত্তাপ! সমর্থকদের কাছে দু’দল দু’মেরুর বাসিন্দা, অথচ বর্তমানের প্রেক্ষাপট ভিন্নÑএক সঙ্গে একাডেমি ভবনে আবাসন দু’দলের,একসঙ্গে একাডেমি মাঠে অনুশীলন করছে দু’দলের ক্রিকেটাররা। গল্প-আড্ডায়ও একসঙ্গে তারা! তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে আশি-নব্বই দশকের সেই ক্রেজটাই যে নেই। দর্শকের মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচের ক্রেজে ফেলেছে ভাটা, তা মনে করছেন আবাহনী অধিনায়ক তামীমÑ ‘আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ খেলার আগে সবার মনে ভিতর একটা আলদা অনুভূতি কাজ করে। কিন্তু আগের মত দর্শক তো আর এখন আসেনা।’ ঘরোয়া ক্রিকেটে ১৬ বছর পার করে আবাহনী- মোহামেডান ম্যাচের অতীত উত্তাপ এখন আর পান না এনামুল জুনিয়রÑ ‘সত্যি বলতে কি আগের মত পাইনা।’
সমর্থকদের দল হয়েও কেন চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচটি হবে বিকেএসপিতে, এ প্রশ্ন তুলে ভেন্যু পরিবর্তনের আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি মোহামেডানের। তবে বিকেএসপিতে দর্শকহীন এবং অপেক্ষাকৃত ছোট মাঠে টানা ৪ জয়ে লাকি গ্রাউন্ডে মোহামেডানের বিপক্ষে অবতীর্ণ হতে পারছে আবাহনী। তবে নিজেদের পছন্দÑঅপছন্দের চেয়ে ফিকশ্চারে ভেন্যু নির্ধারণের এখতিয়ারের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন তামীমÑ ‘পুরো টুর্নামেন্টেই তো মিরপুরে তেমন একটা দর্শক দেখিনি। শিডিউলটা করে হলো সিসিডিএম। কে কার সাথে খেলবে কোথায় খেলবে এটা তারা নির্ধারণ করে। ভেন্যু কোন বড় ব্যাপার না খেলাটাই বড় ব্যাপার।’
চলমান প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না আবাহনীর। পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিং, ভেন্যু নির্বাচনে প্রভাব, সমালোচনায় জর্জরিত এই দলটির বিপক্ষে বিকেএসপিতে অবতীর্ণ হওয়ার আগে অবশ্য নেতিবাচক ভাবনা মাথায় আনার পক্ষপাতী নন মোহামেডানের বাঁ হাতি অভিজ্ঞ স্পিনার এনামুল জুনিয়রÑ ‘গত তিন চার বছরে মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচে আম্পায়ারিং নিয়ে সমস্যার কিছু হয়নি। আমাদের মাথায় এমন কিছু নেই। আবাহনীর সাথে প্রথম পর্বে ১-০ তে এগিয়েছিলাম, কালকের (আজ) ম্যাচ জিতে আবার শিরোপা লড়াইয়ে ফিরতে চাই।’ আম্পায়ারিং নিয়ে মন্তব্য না করে ম্যাচের দিকেই ফোকাস রাখতে চান তামীমÑ ‘আম্পায়ার নিয়ে কিছু কথা না বলাই ভালো। বড় ম্যাচে আমাদের কাজ হলো ভালো খেলা, আমরা সেদিকেই ফোকাস করছি।’
প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে মাত্র ২দিন আগে এই বিকেএসপিতে ঘটে গেছে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা, মাথা গরম হয়ে আম্পায়ারের সাথে বাকবিতÐায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলার বিরুপ প্রভাব পড়েছে ম্যাচে। স্থগিত হয়েছে ম্যাচটি। তাই শিরোপা লড়াইয়ে ফিরতে সুপার লীগে আজ মোহামেডানের বিপক্ষে ম্যাচটিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হচ্ছে আবাহনী অধিনায়ককেÑ ‘আমাদের জন্য ম্যাচটি খুব গুরুত্বপূর্ণ । চ্যাম্পিয়নশিপ রেসে থাকতে হলে দুই দলেরই মাস্ট উইন গেম। গত চার-পাঁচটা ম্যাচ যেভাবে খেলেছি তাতে এখন ভাল ছন্দে আছি, সে ছন্দ ধরে রাখার চেষ্টা থাকবে। নিঃসন্দেহে মোহামেডান শক্তিশালী দল। তাদের সাথে জিততে পারলে পয়েন্ট টেবিলে একটা ভালো অবস্থানে এসে যাব আমরা।’
উপল থেরাঙ্গা চলে যাবার পর টপ অর্ডারে ফাঁটল ধরেছে মোহামেডানের। মূল শক্তিটা ছিল বোলিং। সুপার লীগের প্রথম ম্যাচে বাঁ হাতি স্পিনার নাইম ইসলাম জুনিয়রের আঙুলে চোট, মাঠ থেকে এক সপ্তাহের জন্য ছিটকে পড়ায় এই ডিপার্টমেন্টের শক্তিও হয়েছে খর্ব। তার উপর নিয়মিত পেস বোলার শুভাশিষ এখন নেই ফর্মে। দলটির মূল শক্তি মিডল অর্ডার মুশফিকুর। তার রানে ফেরার দিকেই তাকিয়ে মোহামেডান। এনামুল জুনিয়র সে বার্তাই দিয়েছেনÑ ‘আমাদেরকে ভালো করতে হলে অবশ্যই মুশফিককে রান করতে হবে। সর্বশেষ ম্যাচে আমাদের সবকিছু একসাথে ঠিক হয়নি, ব্যাটিং বলেন আর বোলিং। আবাহনী এখন ভালো দল হয়ে গেছে। আবাহনীকে হারাতে হলে অবশ্যই ব্যাটে বলে সামঞ্জস্য রেখে পারফরম করতে হবে।’
তামীম,সাকিব,মোসাদ্দেকের সঙ্গে আবাহনীর শক্তি বাড়িয়ে নিতে উড়িয়ে আনা হয়েছে ভারতের টেস্ট ক্রিকেটার দিনেশ কার্তিককে। যেখানে মোহামেডানের মূল শক্তি ভারসাম্যপূর্ণ স্পিন, মুশািফকুর এবং শ্রীলংকান অল রাউন্ডার তিসারা পেরেরা। এই শক্তি দিয়েই আবাহনীকে হারানোর মতো সামর্থ রাখে মোহামেডান, সে বিশ্বাস বদ্ধমূল এনামুল জুনিয়রেরÑ ‘আমাদের বেশকিছু ভালো অলরাউন্ডার আছে। তারা পারফরম করলে ওদের দিনে অবশ্যই আমরা আবাহনীকে হারাতে সক্ষম। প্রথম পর্বে আবাহনীকে হারিয়েছি, সেই ম্যাচ আমাদেরকে প্রেরণা দিবে।’
গত ১২ জুন একটি স্ট্যাম্পিংয়ের আবেদনে আঙুল না তোলায় আম্পায়ার গাজী সোহেলের সঙ্গে যে ধরনের অঙ্গভঙ্গি করেছেন, করেছেন অখেলোয়াড়চিত আচররন,তাতে আচরন বিধি ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কারাদেশের খড়গ পড়ার কথা ছিল তামীমের। অথচ, ম্যাচ রেফারি রিপোর্ট না দেয়ায় গুরুপাপের পরও দÐ পেতে হয়নি আবাহনী অধিনায়ক তামীম ইকবালকে। ফলে আজ খেলছেন তিনি এবং দায়িত্বটা যথারীতি অধিনায়কের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।