মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের শুরুতে বারাক ওবামা পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছিলেন। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের শেষ বছর, গত মে মাসে প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জাপানের হিরোশিমা সফর করেন। জাপানে যে দুটি স্থানে যুক্তরাষ্ট্র আণবিক বোমা হামলা চালিয়েছে, এর মধ্যে হিরোশিমা একটি। ওবামার পারমাণবিক অস্ত্র হ্রাস ও এর বিস্তার রোধের পদক্ষেপে অগ্রগতি হয়েছে। ২০১০ সালে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি হয়েছে। বিস্ফোরণযোগ্য পারমাণবিক অস্ত্র যাতে ভুল হাতে না পড়ে, ধারাবাহিক কয়েকটি পারমাণবিক শীর্ষ সম্মেলন এ ব্যাপারে সহায়তা করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে পারমাণবিক কর্মসূচিতে ইরানকে আটকে দেয়া। গত বছরের জুলাইয়ে ইরানের সঙ্গে এমন সমঝোতা হয়েছে, যাতে অন্তত ১০ থেকে ১৫ বছর তাদের এ কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে। তবে একটি ক্ষেত্রে ওবামার ব্যর্থতার বিষয়টি সুস্পষ্ট। তার চোখের সামনেই উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি দিন দিন অটলভাবে বিপদসংকেত দিচ্ছে। তাদের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। ওবামার উত্তরসূরি যারা আসবেন, তাদের মেয়াদকালে কোনো এক সময় উত্তর কোরিয়া নিউইয়র্কে আঘাত হানার মতো শক্তি অর্জন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়াকে ওবামা পশ্চাৎ-শিখা হিসেবে রেখেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট যিনিই হোন না কেন, এই বিলাসিতায় গা ভাসাতে পারবেন না।
পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়কে স্তম্ভ হিসেবে ধরা হয়। তা হচ্ছে এর বিস্তার রোধ, প্রথমবার পারমাণবিক বোমা ব্যবহার, বিশেষ করে যেসব দেশে এই অস্ত্র নেই এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া। কিন্তু উত্তর কোরিয়া এসবের ওপর হাতুড়ি চালাচ্ছে। বিশ্বের ইতিহাসে আর কোনো দেশ নেই, যারা নিজের সম্পদের বড় একটি অংশ পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে ঢালছে। উত্তর কোরিয়ার কবজায় প্রায় ২০টির মতো পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতি ছয় সপ্তাহ অন্তর বা এমন সময়ের মধ্যে তারা নতুন করে পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত বাড়াচ্ছে। এ বছর উত্তর কোরিয়া আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ক্ষেত্রে যেসব পরীক্ষা চালাচ্ছে, তা নজিরবিহীন। মাটির নিচে তারা পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন বোমা ফাটানোর কথাও দাবি করেছে। দেশটি বিশ্বের কোনো নিয়মকানুনই যেন মানতে বাধ্য নয়। উত্তরাধিকার সূত্রে ক্ষমতায় আসা স্বৈরশাসক কিম জং উন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজে শত শত শ্রমিক ও তাদের পরিবারকে জোর করে কাজে লাগাচ্ছেন। এসব মানুষের মুক্তি বা বিচার পাওয়ার কোনো আশাও নেই। উত্তর কোরীয় এই নেতা দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলকে ‘অগ্নিসাগরে’ ফেলার হুমকি দিচ্ছেন বারবার। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার ভিত্তির ওপরই একটি রাষ্ট্র যৌক্তিকভাবে কাজ করে। কিন্তু কিম জং উন এত অস্বচ্ছ আর দুর্জ্ঞেয় যে কোত্থেকে কীভাবে তার সিদ্ধান্ত পরিচালিত হয়, তা জানা যায় না। পিয়ংইয়ংই মূলত নানা ঝুঁকির মধ্যে দেশের পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। কিম জং উনের প্রশাসনেই যেখানে ধস নামার ভয়, সেখানে কিম কখন যে পারমাণবিক বোমা হামলা চালানোর মতো বিপত্তি ঘটাবেন কে জানে? অনিশ্চয়তা, নির্মমতা আর নাজুক পরিস্থিতির দোলাচল কিম জং উনকে নিয়ে নীতিনির্ধারণে হতাশা তৈরি করেছে। বাইরের অনেকে চাপ প্রয়োগে কিম জং উনকে দিয়ে ভালো কিছু করাতে চান। গত মার্চে কিম পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ নিষেধাজ্ঞা জোরদার করে। উনের এই উসকানিমূলক আচরণে চীনও খানিকটা ক্ষুব্ধ হয়। এই পরীক্ষা চালানোর আগে তারাও এ ব্যাপারে কিছু জানত না। এখন তারাও উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবছে। এর মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক লেনদেন সীমিত করার বিষয়। তাই বলে চীন কিন্তু কিম উনকে উৎখাত করতে চায় না। কারণ, বর্তমান সরকারের পতন হলে চীনের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে উত্তর কোরীয় শরণার্থীদের বন্যা বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে দক্ষিণ কোরিয়ার ঘাঁটিতে অবস্থান নেয়া মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়বে। কিম আসলে কিন্তু এই সুযোগই নিচ্ছেন। চীনের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে ধুমসে পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন। দ্য ইকোনমিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।