পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে বিশ^বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগের দাবি জানান আন্দোলনকারী শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। এছাড়া আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে পদত্যাগের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি আসন্ন ভর্তি পরীক্ষায় সকল ভবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে ভিসির ওপর নিষেধাজ্ঞার কথাও উল্লেখ করেন আন্দোলনকারীরা।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ সদস্য রাকিবুল রনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব ছাত্রলীগ নেতা চাঁদাবাজি করেছেন যারা টাকা পেয়েছেন তারা স্বীকার করেছেন যে ভিসি টাকা নাকি ছাত্রলীগ নেতাদের হলে পৌঁছে দিয়েছেন। এই লজ্জা আমরা আর রাখতে পারি না। জনগণের রক্ত পানি করা টাকা থেকে আপনি লুটপাট করবেন আর হাসি তামাশা করবেন তা হতে পারে না। আপনার পদত্যাগের মাধ্যমে রেহাই হবে না, আপনাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। শাস্তির মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নেন।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহŸায়ক জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, আমরা হুঁশিয়ারি জানিয়ে ভিসিকে বলতে চাই, আমাদের আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই ক্ষমতা ছেড়ে দেন। তা না হলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে আপনার পদত্যাগ নিশ্চিত করা হবে। জাহাঙ্গীরনগর কখনো কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেনি আর করবেও না।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তসলিমা সুলতানা বলেন, আমরা আজকের অবস্থানে আসতে বাধ্য হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এমন গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার পরে আর কোনোভাবেই এমন সম্মানীয় পদে থাকতে পারেন না।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার বলেন, সমগ্র রাষ্ট্রের জনগণ জেনে গেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। এই অবস্থায় দেশের কেউ চায় না, ভিসি পদে থাকুক। পাশাপাশি আমরা মনে করি, শুধুমাত্র পদত্যাগ এই অপরাধের শাস্তি হতে পারে না। এই সিস্টেমের পরিবর্তন দরকার। সারাদেশে স্বৈরাচারী কায়দায় যে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করার প্রবণতা দেখতে পাচ্ছি। এভাবে কোন বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ সব অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। যে দুর্নীতি হয়েছে তা রুখে দেওয়া।
ভ‚গোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নুরুল ইসলাম বলেন, ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম শুধু বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করেননি বরং এর সঙ্গে তার পুরো পরিবারকে জড়িয়েছেন। স্বামী, পুত্রকে সবরকম অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। আমরা ভিসির আশপাশের শিক্ষকদের জানাতে চাই, আপনারা এই দুর্নীতির ঘটনার পর তার পাশে না থেকে পদত্যাগে বাধ্য করবেন। জাহাঙ্গীরনগর আর এক মুহূর্তের জন্য এই দুর্নীতিবাজ ভিসিকে দেখতে চায় না।
দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ভিসি একবার বলছেন, ছাত্রলীগ তার কাছে চাঁদাবাজি করেছে, আরেকবার বলছেন চাঁদাবাজি করেননি। একজন ভিসি কোনোভাবেই এভাবে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিতে পারেন না। আমরা বারবার বলেছি ভিসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কখনো বলিনি, আপনি দুর্নীতিবাজ তবে আপনার কার্যক্রমের মাধ্যমে আপনি সেটা প্রমাণ করছেন। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। আপনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে এই অভিযোগ ফৌজদারি আইনে বিচার হওয়ার যোগ্য। যার সঙ্গে আপনার সম্পৃক্ততা থাকলে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
শিক্ষক শিক্ষার্থী ঐক্য মঞ্চের মুখপাত্র দর্শন বিভাগের অধ্যাপক জহির রায়হান বলেন, আমরা ভিসির পদত্যাগ চেয়েছি, কারণ ভিসি উন্নয়ন প্রকল্পকে ব্যবসা ক্ষেত্রে পরিণত করেছেন। ভিসির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তার বিচার রাষ্ট্রীয় আইনে চাই। আমরা আসন্ন ভর্তি পরীক্ষার সময় ভিসিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। কারণ এই অভিযোগ ওঠার পরে আমাদের কর্মস্থলে আর ভিসিকে দেখতে চাই না। ভিসিকে ১ অক্টোবরের মধ্যে পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে ভিসির পদত্যাগ নিশ্চিত করতে বাধ্য হব।’
এর আগে বুুধবার সন্ধ্যায় আন্দোলনকারী শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দীর্ঘ তিন ঘণ্টা আলোচনা শেষে নতুন কলা ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে ভিসির পদত্যাগ ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। তার সমর্থনে ও ভিসির বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে এই বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
তবে ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম আন্দোলন কিংবা আল্টিমেটামে পদত্যাগ করবেন না বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি কোনো আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করব না। আমাকে যারা এই পদে বসিয়েছেন, তারা চাইলে পদ ছেড়ে দেব। তাছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয় তো শুধু আন্দোলনকারীদের নয় আরও অনেকে তো আছে। তারা তো আর পদত্যাগ চাইছেন না।
তিনি আরও বলেন, মহামান্য প্রেসিডেন্ট যদি নির্দেশ দেন তবে পদ থেকে সরে যাব। যদি আমাকে নির্দেশ না দেন তবে আন্দোলনকারীদের গালমন্দ খেয়েও থাকতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।