পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজুর মনোনয়ন প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে এক ভিন্ন সমীকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচন। নির্বাচনে মহাজোট সমর্থিত জাতীয় পার্টির প্রার্থী রওশনপুত্র সাদ এরশাদ ও বিএনপি প্রার্থী রিটা রহমানের শক্ত প্রতিদ্ব›দ্বী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে আছেন এরশাদের ভাতিজা সাবেক সংসদ সদস্য হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ।
আপাত দৃষ্টিতে সাদ এরশাদের বিজয়ের পথ পরিস্কার মনে হলেও স্থানীয় এবং এরশাদ পরিবারের সন্তান হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফ শাহরিয়ারের কারণে সাদ’র বিজয়ের পথ ক্রমেই কঠিন হচ্ছে। ভোটাররা মনে করছেন, সাদ এরশাদ ও আসিফ শাহরিয়ার দুজনই এরশাদ পরিবারের লোক। তাদের মধ্যে আসিফ শাহরিয়ার সব সময় রংপুরে থাকেন যখন-তখন তাকে কাছে পাওয়া যায়। কিন্তু সাদ এরশাদ ইতিপূর্বে কোনদিন রংপুরে আসেননি এবং তাকে কাছে পাওয়া যাবে না। সুতরাং দুজনের মধ্যে যে কোন একজনকে ভোট দিলেই এরশাদকে ভোট দেয়া হবে। তাই যে আমাদের কাছে থাকেন তাকেই ভোট দেয়া উচিৎ। যদি তাই হয় তাহলে ভোটের সমীকরণ উল্টো দিকে মোড় নিলেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।
৯০’ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এরশাদ সরকারের পতন হয়। তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর তার প্রতি রংপুরের মানুষের মাঝে সম্পূর্ণ আলাদা এক সেন্টিমেন্ট তৈরী হয়। তিনি হয়ে যান ‘হামার ছাওয়াল’ এবং ‘প্রাণপ্রিয় নেতা’। সে কারণে জেল থেকেও তিনি এই অঞ্চলের ৫টি আসনে নির্বাচিত হন। ফলশ্রæতিতে গত ২৮ বছরের ইতিহাসে রংপুরে কখনোই পরাজিত হয়নি এরশাদ ও তার লাঙ্গল। কিন্তু এরশাদের মৃত্যুর পর পাল্টে যায় প্রেক্ষাপট। ‘রওশনপন্থী’ ও ‘কাদেরপন্থী’ এই দু’টি পক্ষে বিভক্ত হয়ে যায় জাতীয় পার্টি। ‘কাদেরপন্থী’রা উপ-নির্বাচনে স্থানীয় নেতাকে প্রার্থী করার দাবীতে সোচ্চার হয়ে উঠলেও শেষ পর্যন্ত তাদের দাবীকে অগ্রাহ্য করে রওশন পুত্র সাদকে প্রার্থী করায় ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারা সরাসরি ঘোষণা দেন সাদ’র পক্ষে কাজ না করার। এরমধ্যে এরশাদের ভাতিজা সাবেক সংসদ সদস্য আসিফ শাহরিয়ারও দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামেন। ফলে জাতীয় পার্টি রংপুরে ৩টি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে একটি পক্ষ সরাসরি স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদের ভাতিজা আসিফ শাহরিয়ারের পক্ষে বেশ জোরালো ভাবে মাঠে নামেন।
মূলত, এই উপ-নির্বাচনে ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে এই তিন প্রার্থীর মধ্যে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতি রংপুরের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা থাকায় এতদিন তারা অন্ধের মত সমর্থন দিয়ে গেছেন তাকে। তার অনুপস্থিতিতে এবারের নির্বাচনে ভোটারদের মূল চাওয়া ছিল স্থানীয় নেতা। কারণ গত তিন দশক থেকে তারা তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিকে কাছে পাননি। জরুরী প্রয়োজনেও যেতে পারেননি নিজ এলাকার এমপির কাছে। সেদিক থেকে দল-মত নির্বিশেষে সবার দৃষ্টি ছিল আওয়ামী লীগ প্রার্থী এ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজুর প্রতি। কিন্তু শেষ মুহুর্তে রাজু মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় হতাশ হয়ে পড়েন সাধারণ ভোটারগণ। আর এই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টায় মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন এরশাদের ভাতিজা আসিফ শাহরিয়ার। মূল প্রতিদ্ব›িদ্বতাকারী জাপার প্রার্থী সাদ এরশাদ ও বিএনপি প্রার্থী রিটা রহমান-দু’জনই বহিরাগত হওয়ায় এরশাদ পরিবারের সন্তান হিসেবে ইতিমধ্যে ভোটারদের সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে শক্ত অবস্থানও তৈরী করে নিয়েছেন তিনি। সাবেক এই সংসদ সদস্য রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেয়ার পর থেকেই দলে বহিষ্কৃত হয়ে আছেন।
এরশাদ পরিবারের সদস্য হিসেবে দলের কাছে আসিফ শাহরিয়ার এখন তুচ্ছ হলেও দিন দিন এই নির্বাচনকে ঘিরে তার পক্ষে তৈরি হচ্ছে জনসমর্থন। বিএনপিতে স্থানীয় প্রার্থী নেই। নেই জাতীয় পার্টিতেও। তাই দুই বড় দলের দুই প্রার্থীকে রংপুরবাসীর কাছে অপরিচিত এবং প্রবাসী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চলছে মনোনয়ন বঞ্চিতদের মধ্য থেকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।