পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কতিপয় হিন্দুত্ববাদী ও মোদিপ্রেমী অখণ্ড ভারতের প্রেতাত্মা বাংলাদেশ থেকে ইসলামী শিক্ষা ও কৃষ্টি-কালচার ধ্বংসের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ধর্মীয় তথা ইসলামী শিক্ষাকে বাদ দেয়ার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে ইসলামিক শিক্ষা বিরোধী কোন তৎপরতা সহ্য করা হবে না। বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা সফল হবে না। শিক্ষা কারিকুলাম থেকে ইসলামী শিক্ষা বাদ দেয়ার চক্রান্তের প্রতিবাদে বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ আলোচনা সভা ও বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন। একই দাবিতে ইসলামী আন্দোলন আগামী ১০ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
খেলাফত মজলিস ঃ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ধর্মীয় তথা ইসলামী শিক্ষাকে বাদ দেয়ার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে ইসলামিক শিক্ষা বিরোধী কোন তৎপরতা সহ্য করা হবে না। এসএসসি, এইচএসসি সহ সকল বোর্ড পরীক্ষায় ধর্ম তথা ইসলামী শিক্ষা বিষয়কে বাধ্যতামূলক করতে হবে।
সোমবার রাতে পুরানাপল্টস্থ মজলিস মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজীজুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তাওহিদুল ইসলাম তুহিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের।
উম্মাহ কল্যাণ সংস্থা বাংলাদেশ ঃ আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি এবার আলিয়া মাদরাসার শিক্ষা কারিকুলামেও হিন্দুত্ববাদী শিক্ষা-সংস্কৃতি চালু করার হীন ও ঘৃণ্য চক্রান্তের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উম্মাহ কল্যাণ সংস্থা বাংলাদেশের সভাপতি মুহাম্মদ ইসমাঈল বুখারী ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মুহাম্মদ আমানত উল্লাহ।
গতকাল এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার আসল চাবিকাঠিই ইসলাম ও ইসলামী শিক্ষা। ইসলামী শিক্ষা-সংস্কৃতি ও কৃষ্টি-কালচার ধ্বংস করা গেলে এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিলিন হয়ে যাবে।
নেতৃদ্বয় বলেন, কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি যে, ইসলামী শিক্ষার প্রতি সহনশীল এ সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘাপটি মেরে থাকা কতিপয় হিন্দুত্ববাদী ও মোদিপ্রেমী অখণ্ড ভারতের প্রেতাত্মা বাংলাদেশ থেকে ইসলামী শিক্ষা ও কৃষ্টি-কালচার ধ্বংসের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। তারা ইসলামী শিক্ষা ও ধর্মীয় তাহজীব-তমদ্দুন ধ্বংস করে মোদির অখণ্ড হিন্দুস্তান প্রতিষ্ঠার খোয়াব দেখছে।
তারা বলেন, আমরা পরিষ্কার বলে দিতে চাই, ৯০% মুসলমানের এদেশে তাদের সেই দিবাস্বপ্ন পূর্ণ হতে দেয়া হবে না ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা সফল হবে না। ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার স্বকীয়তা রক্ষায় প্রয়োজনে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আমরা মাদরাসা শিক্ষা রক্ষায় এবং পৌত্তলিক অপসংস্কৃতি প্রতিরোধে ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনের ঘোষিত উদ্যোগ ও কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করছি।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি ঃ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ক্রমান্বয়ে ইসলামী ভাবধারা ও সুস্থ সংস্কৃতি ও কৃষ্টি-কালচার বাদ দিয়ে হিন্দুত্ববাদী ও পৌত্তলিক সভ্যতা-সংস্কৃতি তথা হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার নাস্তিক্যবাদী অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুফতী আবদুল কাইয়ুম।
এক বিবৃতিতে মুফতী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা পাশাপাশি আলিয়া মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলামিয়াতের পরীক্ষা বাদ দিয়ে তদস্থলে ইসলামের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক নানান বিষয় প্রতিস্থাপনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করে মুফতী আবদুল কাইয়ুম বলেন, এদেশে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীরা জেঁকে বসেছে। শিক্ষা, প্রশাসন, সিলেবাস প্রণয়ন সর্বক্ষেত্রে মোদিপন্থিরা আজ কলকাঠি নাড়ছে। আর এদেশের কতিপয় নাস্তিক্যবাদী শিক্ষাবিদ ও আমলা-কর্মচারী তাদের সমর্থন জোগাচ্ছে। স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমরা এটা মেনে নিতে পারি না।
মুফতী আবদুল কাইয়ুম আরো বলেন, সরকার ইসলামী শিক্ষার প্রতি যথেষ্ট আন্তরিক। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সরকার এই গুটিকয়েক হিন্দুত্ববাদী ও মোদিপ্রেমী চাটুকারদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা চালু ও বহাল রাখার স্বার্থে আমরা যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত আছি। এক্ষেত্রে জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের ডাকে সাড়া দিতে আমরা প্রস্তুত আছি।
কক্সবাজার ব্যুরো জানায়, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের ঘোষিত ১৩ দফার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে দেশের সকল আলেম ওলামা, পীর মশায়েখসহ তাউহীদ-রেসালতে বিশ্বাসীদের ঐক্যবদ্ধভাবে একই সুরে কথা বলার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন কক্সবাজার জেলা নেজামে ইসলাম পার্টির নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার বিকেলে ইনকিলাবের বিশেষ সংবাদদাতা ও কক্সবাজার ব্যুরো প্রধান শামসুল হক শারেকের সাথে মতবিনিময়কালে জেলার নেজামে ইসলাম পার্টির নেতৃবৃন্দ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের ১৩ দফার প্রতি সমর্থনের কথা জনান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি কক্সবাজার জেলা আমির মাওলানা আব্দুল খালেক নেজামী, জেলা যুগ্ম সেক্রেটারি হাফেজ আমানুল হক, জেলা অর্থ সম্পাদক মাওলানা নুরুল হক চকোরী ও জেলা সমাজ কল্যাণ সম্পাদক হাফেজ মোহাম্মদ সালেম।
নেজামে ইসলাম পার্টির নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান সময়ে দেশ,ধর্ম ও সংস্কৃতি রক্ষায় নিজেদের মধ্যকার সকল মতপার্থক্য ভুলেগিয়ে দেশের সকল আলেম ওলামা, পীর মশায়েখসহ তাউহীদ-রেসালতে বিশ্বাসীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। নেতৃবৃন্দ, নানা অজুহাতে গ্রেফতারকৃত নিরপরাধ আলেম ওলামাদের মুক্তির দাবি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।