পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সউদী আরবে হুন্ডির মাধ্যমে ওমরাহ ব্যয়ের টাকা পাঠানো বন্ধ হচ্ছে। ১৪৪১ হিজরিতে নতুন প্রক্রিয়ায় ওমরাহ ভিসা চালু করতে যাচ্ছে সউদী সরকার। অবৈধ চ্যানেলে হুন্ডির মাধ্যমে সউদীতে আর ওমরার টাকা পাঠানো যাবে না। বৈধ চ্যানেলে আইবিএএন-এর মাধ্যমে ওমরাযাত্রীর যাবতীয় ব্যয়ের টাকা সউদীতে পাঠাতে হবে। এতে উভয় দেশেরই প্রচুর রাজস্ব আয় হবে। এবার ওমরাযাত্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা ব্যয় বেড়ে যাবে। সউদী থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
চলতি বছর থেকে প্রত্যেক ওমরাযাত্রীর মক্কা-মদিনায় হোটেল ভাড়া, ট্রান্সপোর্ট ভাড়া ও মোফার ফি-এর টাকা একসাথে আইবিএএন-এর অ্যাকাউন্টে এবং আসা-যাওয়ার বিমানের কনফার্ম টিকিট পাঠালেই সউদী হজ মন্ত্রণালয় ওমরাহ মোফা ইস্যু করবে। এ নতুন প্রক্রিয়ায় ওমরাহ ভিসা চালু করতে সউদী কর্তৃপক্ষ নতুন সফটওয়্যার তৈরির কাজ জোরেশোরে শুরু করেছে। নতুন প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যেই মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার ওমরাযাত্রীরা সউদী আরবে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশ থেকে ওমরা কার্যক্রম চালু হতে আরো এক মাস সময় বিলম্ব হতে পারে বলে বৈধ ওমরাহ এজেন্সিগুলোর মালিকরা আভাস দিয়েছেন। ওমরাযাত্রীদের সকল ব্যয়ের টাকা আইবিএএন-এর অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সউদী আরবে পাঠাতে হবে গত পয়লা মহররম সউদী হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় ১৪৪১ হিজরি ওমরাহ কার্যক্রম পরিচালনার নীতিমালায় এমন নির্দেশনা জারি করেছে।
কিন্তু মক্কাস্থ বাংলাদেশ হজ মিশন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি এখনো অবহিত হতে পারেনি। মক্কাস্থ হজ মিশন ওমরা ব্যয়ের টাকা আইবিএএন-এর মাধ্যমে সউদীতে পাঠাতে হবে এমন জরুরি বিষয়টি লিখিত অথবা মৌখিকভাবে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে জানায়নি। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইনকিলাবকে বলেন, মক্কাস্থ হজ মিশন কর্তৃপক্ষ ওমরার টাকা আইবিএএন-এর মধ্যে সউদীতে পাঠাতে হবে এমন কোনো সউদীর দিকনির্দেশনা আমাদের অবহিত করেনি। সে জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় বৈধ হজ এজেন্সিগুলোক সউদীতে আইবিএএন-এর মধ্যে ওমরার টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখতে পারছে না। হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম রাতে ইনকিলাবকে বলেন, চলতি বছর থেকে ওমরার ব্যয়ের টাকা আইবিএএন-এর মাধ্যমে সউদী আরবে পাঠাতে হবে। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়-এর নির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি এখনো পাওয়া যায়নি। বৈধ ওমরাহ এজেন্সির তালিকা তৈরির কাজ চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। অন্যান্য বছর হুন্ডির মাধ্যমে ওমরার টাকা সউদী যেত এমন প্রশ্নের জবাবে হাব সভাপতি বলেন, তা জানি না । তবে ওমরাযাত্রীর মাধ্যমে সউদীতে টাকা পাঠানো হতো।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ১৪৪০ হিজরিতে বাংলাদেশ থেকে প্রায় পৌঁনে দুই লাখ যাত্রী ওমরাহ পালন করেছে। সরকার নির্ধারিত ১ হাজার কোটার অতিরিক্ত ওমরাযাত্রী সউদীতে পাঠানোর সাথে জড়িত অসাধু ওমরাহ এজেন্সিগুলোর তালিকা সংগ্রহের জন্য মক্কাস্থ হজ মিশনে চিঠি দিলেও তা অদ্যাবধি পাওয়া যায়নি। ফলে ধর্ম মন্ত্রণালয় তিন শতাধিক বৈধ ওমরাহ এজেন্সির তালিকা সউদী হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে পারছে না। সউদীতে কোটার অতিরিক্ত ওমরাযাত্রী পাঠানোর সাথে জড়িত ওমরাহ এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে।
আবাবিল হজ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আবু ইউসুফ কম টাকায় ওমরাযাত্রী সংগ্রহের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এক শ্রেণীর গ্রুপ লিডার মধ্যস্বত্বভোগী দালাল কম টাকায় ওমরাহ পালনের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রামে গ্রামে পাসপোর্ট ও টাকা সংগ্রহ করছে। এসব গ্রুপ লিডার কম টাকায় ওমরা করানো প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। তিনি বলেন, সউদী সরকারের নিয়ম অনুযায়ী এবার বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে ওমরাযাত্রীদের মক্কা-মদিনার হোটেল ভাড়া, ট্রান্সপোর্ট ভাড়া, ভিসা ফি-সহ যাবতীয় ব্যয়ের টাকা পাঠাতে হবে। কিন্তু অতিলোভী গ্রুপ লিডাররা মাত্র ৭০ হাজার টাকায় খাওয়া-দাওয়াসহ ওমরা পালন করানোর মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করছে। তিনি সুষ্ঠু ওমরাহ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে গ্রুপ লিডারদের অপতৎপরতা বন্ধের জোর দাবি জানান। গতকাল নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাবের একজন সদস্য জানান, কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের কৈয়াদদারি গ্রামের গ্রুপ লিডার তোফাজ্জল হোসেন মাষ্টার, ছেহেরিয়া গ্রামের আব্দুল কাদের ও মেছতলা গ্রামের মাসুম মাত্র ৭০ হাজার টাকায় ওমরা পালনের আশ্বাস দিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করছে দেদার। এছাড়া বগুড়ার শাহ আলী, সাতক্ষীরার সিদ্দিকুর রহমান, আল করিম, নেত্রকোনার আব্দুল্লাহও কম টাকায় ওমরাযাত্রীর পাসপোর্ট সংগ্রহ করছে বলে জানা গেছে।
গত মাসে সউদী হজ ও ওমরা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন বছরে তারা ১০ মিলিয়ন তথা ১ কোটি ওমরাহ ভিসা দেয়ার পরিকল্পনা করছে। এ জন্য তারা অনলাইনে ২৪ ঘণ্টায় ভিসা সুবিধা দেবে। কোনো ওমরাযাত্রীকে দূতাবাসে যেতে হবে না। সউদী আরবের ভিশন ২০৩০-এর লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে তারা বছরে প্রায় ৩ কোটি ভিসা দেবে।
সউদী সরকার বারবার ওমরাপালনকারী যাত্রীর ২ হাজার সউদী রিয়াল চার্জ মওকুফ করেছে। কিন্তু সকল ওমরাযাত্রীর সরকারি ফি ৩০০ রিয়াল, ইলেকট্রনিক সার্ভিস ফি-ভ্যাটসহ ৯৩ দশমিক ১৮৭৫ হালালা এবং ওমরাহ কোম্পানির সার্ভিস ফি ভ্যাটসহ ১০৫ রিয়াল ধার্য করেছে। এ ছাড়া মক্কা-মদিনায় হোটেল ভাড়া ও ট্রান্সপোর্ট ফি যুক্ত হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।