নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল প্রসঙ্গে একটা সময় বলা হতো, ব্যাটিংয়ে নামলে উইকেট হয়ে উঠতো বোলিং বান্ধব, আর বোলিংয়ে গেল প্রতিপক্ষের জন্য সেই উইকেটই হয়ে উঠতো রান প্রসবা। তবে সময় গড়িয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাড়ি দেয়া হয়ে গেছে প্রায় দুই দশক। এর মাঝে ক্রিকেটের কুলিন সমাজে নিজেদের নামও লিখিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। জয়ের সুখস্মৃতি আছে ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, দক্ষিন আফ্রিকা এমনকি অস্ট্রেলিয়ার মতো পরাশক্তিদের বিপক্ষেও। কিন্তু এখনও প্রায়সই একটি প্রশ্ন ওঠে দেশের ক্রিকেট নিয়ে- ‘সমস্যাটা কোথায়? ব্যাটিং, বোলিং না অন্যকিছু?’ ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হারতে হারতে জয় আর আফগানিস্তানের বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পনের পর এই প্রশ্ন উঠেছে আরো মোটা দাগে। যার উত্তর খুঁজে পেতে হিমশিম খাওয়া নির্বাচকদের অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে বার বার দল বদলের মাঝেও।
দু’দিন আগেই ঘটা করে সিরিজের দলে সুযোগ দেয়া হয়েছিল আবু হায়দার রনিকে। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে কোন ম্যাচ না খেলিয়েই তাকে বাদ দিয়ে নেয়া হয়েছে আরেকজনকে! এখানেই শেষ নয়। ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টির পর বাংলাদেশ দলে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। বাদ পড়েছেন চারজন। যাদের তিনজনই স্কোয়াডে থেকে খেলার সুযোগ পাননি। নতুন করে দলে ঢুকেছেন পাঁচজন। এর মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে একেবারেই নতুন মুখ তিনজন।
লিগ পর্বের বাকি দুই ম্যাচের আগে বাদ দেওয়া হয়েছে ছন্দ হারানো সৌম্য সরকারকে। তার সঙ্গে না খেলেই বাদ পড়েছেন তিনজন। চমক হিসেবেই টি-টোয়েন্টি দলে আসা পেসার ইয়াসিন আরাফাত বাদ পড়েছেন সাইড স্ট্রেনের চোট থাকায়। তার চোটে দ্বিতীয় ম্যাচের আগে স্কোয়াডে নেওয়া হয়েছিল পেসার রনিকে। খেলার সুযোগ না পেলেও পরের দুই ম্যাচে জায়গা হয়নি তার। অফ স্পিনার মেহেদী হাসান শুরু থেকে দলে থেকেও ম্যাচ না খেলে কাটা পড়েছেন।
সৌম্যর জায়গায় দলে প্রথমবারের মতো এসেছেন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ। তবে সবচেয়ে বড় চমক হিসেবেই দলে নেওয়া হয়েছে লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে। দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটের জন্য বেশি বিবেচিত নাজমুল হোসেন শান্তও টি-টোয়েন্টি দলে এসেছেন চমক হিসেবে। এছাড়াও দলে ফিরেছেন পেসার রুবেল হোসেন ও শফিউল ইসলাম।
ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হারতে হারতে জেতার পর দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ পাত্তা পায়নি আফগানিস্তানের কাছে। দলের এমন বেহাল অবস্থায় গেল এক সপ্তাহে এই নিয়ে তৃতীয়বার স্কোয়াডে বদল আনলেন নির্বাচকরা। একটি টুর্নামেন্টের মাঝপথে কেন এত বেশি পরিবর্তন, তার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, ‘নতুন কোচ আরও কয়েকজন ক্রিকেটারকে দেখতে চেয়েছেন। সেজন্যই স্কোয়াডে এতগুলো বদল করা হয়েছে।’ মিনহাজুল জানান, রনি, মেহেদী, ইয়াসিনদের দলে না থাকার কারণ অবশ্য ভিন্ন। এইচপি দলে থাকায় রাখা হয়নি তাদের, ‘কাল (আজ) তারা এইচপি দলের হয়ে ভারত সফরে যাচ্ছে, তাই তাদের রাখা হয়নি। যেহেতু টি-টোয়েন্টি খেলা, কাজেই বড় স্কোয়াড করার দরকার নেই।’
এবার ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে সৌম্য করেন ৪ ও ০ রান। ৪৩ টি-টোয়েন্টির ক্যারিয়ারেও থিতু হতে পারেননি, করেছেন মোটে একটা ফিফটি। ফর্মের কারণেই যে তিনি বাদ গেছেন, নিশ্চিত করেছেন প্রধান নির্বাচকও। তার জায়গায় দলে আসা নাঈম বিবেচিত হয়েছেন সা¤প্রতিক সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ে রান পেয়ে। আফগানিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে একদিনের ম্যাচে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন তিনি। তার আগে গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে ১৬ ম্যাচে করেন ৮০৭ রান।
অনেক দিন থেকে পারফর্ম করায় নাঈমের দলে আসা বোধগম্য। সে তুলনায় শান্তর টি-টোয়েন্টি দলে থাকা অনেকটা চমকের। এর আগে জাতীয় দলের হয়ে দুটি টেস্ট ও তিনটি ওয়ানডে খেলা শান্ত ঘরোয়া টি-টোয়েন্টির আসর বিপিএলেও সেভাবে কখনো নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। বরং টি-টোয়েন্টিতে তার ব্যাটিংয়ের ধরণ হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ। তবে প্রধান নির্বাচক জানালেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে অনেককেই নতুন করে দেখতে চাইছেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।
দলে সবচেয়ে বড় চমক আমিনুল। বয়সভিত্তিক দলে তার পরিচয় ছিল ব্যাটসম্যান। সবশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে বিকেএসপির হয়ে নিয়মিত রান করেই নজর কেড়েছিলেন তিনি। করতেন অনিয়মিত লেগ স্পিনও, সেটাই নাকি মনে ধরেছিল এইচপির কোচ সাইমন হেলমটের। সবশেষ আফগানিস্তান ‘এ’ দল ও শ্রীলঙ্কা ইমার্জিং দলের বিপক্ষে লেগ স্পিনার হিসেবেই খেলানো হয়েছে আমিনুলকে। এমনকি আলো ছড়াতে না পারলেও ফতুল্লায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচেও (০/৩৭) খেলেছেন। ফিঙ্গার স্পিনার ভর্তি এক দলে আমিনুলের মতো লেগ স্পিনারের অন্তর্ভুক্তিও আশাজাগানিয়া। একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই তাকে দলে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মিনহাজুল, ‘ওকে লেগ স্পিনার হিসেবেই দলে নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকদিন থেকেই এইচপিতে ওকে নার্সিং (পরিচর্যা) করা হচ্ছিল।’
কিন্তু ঝামেলাটা অন্যখানে। লেগ স্পিন করতে জানলেও আমিনুলের মূল পরিচয় তিনি একজন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। লিস্ট ‘এ’তে ১৯ ম্যাচে ৩ উইকেট এবং দুটি টি-টোয়েন্টি খেলে বল হাতে না নেওয়া সে সাক্ষ্যই দিচ্ছে। জাতীয় দলে একজন লেগ স্পিনার দরকার। তাই হয়তো ঘরোয়া ক্রিকেট কিংবা ইমার্জিং দলের হয়েও বল হাতে কিছু করে দেখাতে না পারা একজনকে ডেকে এনে আসলেই চমকে দিয়েছেন নির্বাচকেরা। কথা হচ্ছে, তাঁকে ম্যাচের একাদশে রাখার সাহস কি দল দেখাবে?
বাংলাদেশ দল : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন, লিটন দাস, আফিফ হোসেন, তাইজুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, শফিউল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, নাঈম শেখ, আমিনুল ইসলাম, বিপ্লব ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।