‘শত অভাব-অনটন, ঝড়-ঝাপটাতেও মা-বাবা তার সন্তানদের আগলে রাখবেন’ যুগের পর যুগ ধরেই এটিই চিরন্তন সত্য। পুরো পৃথিবী মুখ ফিরিয়ে নিলেও আশ্রয় মেলে মা-বাবার বুকে। বিশেষ করে ‘মা’! এই এক শব্দের ওপর মানুষের নির্ভরতা হয়তো লিখেও হবে না শেষ।
অথচ এক লাখ রুপির জন্য নিজের ১৫ বছর বয়সী মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছেন এক মা! এর আগে বিক্রি করেছেন এক বছর বয়সী ছেলেকেও। আজ সোমবার দিল্লি কমিশন ফর উইমেনের (ডিসিডবিøউ) বরাতে এমন তথ্যই জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গতকাল রোববার ডিসিডবিøউ জানায়, গত সপ্তাহেই ভারতের দিল্লিতে এক লাখ রুপির বিনিময়ে নিজের ১৫ বছর বয়সী মেয়েকে পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন এক নারী। পরে পাচারকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে আসে ওই মেয়ে। এরপর ওই মেয়েটিকে উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
১৫ বছর বয়সী ওই মেয়েটি জানায়, গত সপ্তাহে তার মা বাদরপুরে নিজের বোনের বাড়িতে যাবে বলে তাকেও সঙ্গে নিতে চায়। তখন মেয়েটিও সঙ্গে গেলে মা তাকে নিজামুদ্দিন এলাকার একটি হোটেলে নিয়ে যায়। সেখানে তার মা তাকে বলে, ‘আমার অন্য এক জায়গায় কাজে যেতে হবে। অন্য একটি লোক এসে তোমাকে বাসায় পৌঁছে দেবে।’
পরবর্তীতে একজন লোক আসে ঠিকই। কিন্তু তাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার বদলে নিয়ে যায় ওই লোকেরই বাড়িতে। যেখানে গিয়ে ওই মেয়ে অন্য আরও অনেক মেয়েকে দেখতে পায়।
এরপর অপরিচিত ওই লোক তাকে একটি বিয়ের পোশাক দিয়ে সেটি পরে তৈরি হয়ে নিতে বলে। এবং তাকে জানায়, এক লাখ রুপির বিনিময়ে তার মা তাকে বিক্রি করে দিয়েছে।
পরে কোনোমতে ওই লোকের বাড়ি থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয় মেয়েটি। পালানোর পর সে তার নিজ এলাকাতেই ফিরে আসে এবং প্রতিবেশীদের পুরো ঘটনা জানায়। পরবর্তীতে প্রতিবেশীরা ডিসিডবিøউ’কে খবর দিলে তারা মেয়েটিকে পুলিশের কাছে নিয়ে যায়।
মেয়েটি আরও জানায়, মা, সৎ বাবা ও চার ভাই-বোনের সঙ্গে সে বসবাস করতো। তার মা’র অনেক ঋণ ছিল। সেগুলো পরিশোধ করতেই হয়তো তাকে বিক্রি করে দিয়েছে। এর আগে তার এক বছর বয়সী ভাইকেও বিক্রি করে দিয়েছিল তার মা।
এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তবে এখনও কাউকে আটক করা হয়নি। এছাড়া উদ্ধার হওয়া মেয়েটিকে আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।