Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভাঙনে সৌন্দর্য হারাচ্ছে কক্সবাজার সৈকত

বিলীন হচ্ছে ঝাউবন

শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার থেকে | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। সৈকত আকর্ষণে প্রতিবছর কক্সবাজার ভ্রমণ করেন লাখ লাখ পর্যটক। কিন্তু কালক্রমে অযত্মে সৌন্দর্য হারাচ্ছে দীর্ঘ এ সমুদ্র সৈকত। এতে পর্যটকের কাছে আকর্ষণ হারাতে বসেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতের সৌন্দর্য বিলীন হয়ে যাচ্ছে সাগরে। সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে হাজার হাজার ঝাউগাছ বিলীন হচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলতি বর্ষা মৌসুমে প্রবল বর্ষণ ও উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে সৈকতের সমিতিপাড়া থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার ঝাউগাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। এভাবে গত সাড়ে ৪ দশকে ভাঙন ও নিধনের কবলে পড়ে সাবাড় হয়েছে ৮ লাখেরও বেশি ঝাউগাছ।

জানা যায়, কক্সবাজার সদর রেঞ্জের নাজিরারটেক থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত ১৯৬১-৬২ সালে ১২ হেক্টর বালিয়াড়িতে প্রথম সৃজন করা হয় ঝাউবন। ঝাউবাগান প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপক‚লবাসি ও কক্সবাজার শহর রক্ষা করে আসছে। তবে ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরি ঘূর্ণিঝড়ে অর্ধেকের বেশি বাগান বিলীন হয়ে যায়।
কক্সবাজার থেকে মেরিন ড্রাইভ হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত সৈকতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে ঝাউবাগান। দেশি-বিদেশি পর্যটক মেরিন ড্রাইভ হয়ে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ভ্রমণের সময় তন্ময় হয়ে সাগর পাহাড় আর সৈকতের ঝাউ বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করে থাকেন।

এদিকে গত ১৬ জুলাই অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ঝাউবন রক্ষা ও আরও বাগান সৃজনের নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরপরই সৈকতের ডায়বেটিস পয়েন্ট থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত এক হাজার ৪শত মিটার স্থানে জিওটিউব বসিয়ে ঝাউগাছ রক্ষায় উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে অপরিকল্পিত ও নিম্নমানের কাজ হওয়ায় ঢেউয়ের ধাক্কায় জিও টিউব বাঁধও ভেঙে পড়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে সবুজ বেষ্টনী খ্যাত বিশাল ঝাউবাগান হারিয়ে যাচ্ছে এখন। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। সচেতন মহলের মতে তড়িঘড়ি করে জিও টিউব বসিয়ে ঝাউবাগান রক্ষা সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার পরিকল্পিত, টেকসই পর্যটকবান্ধব শহররক্ষা বাঁধ ও সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা।

পাউবো কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, বালিয়াড়ির ভাঙন এবং ঝাউবাগান বিলীন ঠেকাতে সৈকতের ডায়াবেটিক পয়েন্ট থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০ মিটার লম্বা জিও টিউব স্থাপনের জন্য প্রায় ৮৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু জোয়ারের ধাক্কায় জিও টিউবের কয়েকটি অংশ ফুটো হয়ে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, এ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান।

কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার বলেন, সৈকতের ঝাউবাগান রক্ষা এবং সেখানে আরও বনায়ন সৃজনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এখন ঝাউগাছ রক্ষায় পাউবো জিও টিউব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বর্ষা শেষে বন বিভাগ সেখানে নতুন করে ঝাউবাগান সৃজন করবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ