পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দলের সাংগঠনিক কর্মকান্ড নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিতর্কমুক্তভাবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের মদদদাতা এমপি-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, দেশব্যাপী কোন্দল নিরসন, জেলা-উপজেলায় সম্মেলন করা নিয়ে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এছাড়া বিএনপি-জামায়াতের কাউকে দলে না ভেড়ানো, সদস্য সংগ্রহ অভিযান, নিজস্ব দলীয় কার্যালয় নির্মাণসহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় নির্দেশনা তৃণমূল সংগঠন আমলে নিচ্ছে না। জেলাগুলোতে এমপি-মন্ত্রীদের মতানৈক্য ও পরোক্ষ বিরোধিতার কারণেও অনেক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারছে না খোদ কেন্দ্রীয় সংগঠন। এ নিয়ে সাংগঠনিক কাজ কোথাও হচ্ছে বাধাগ্রস্ত আবার কোথাও হচ্ছে স্থবির।
সূত্র জানায়, দল সদস্য সংগ্রহ অভিযান ঘোষণা করলেও সেই ফরম দলীয় কার্যালয়ে পড়ে থাকে, সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে বললেও তা কেউ শুনছে না। সংগঠনকে গতিশীল করতে আটটি সাংগঠনিক টিম দেশব্যাপী সফর করে বর্ধিত সভা করে তৃণমূলের নানা সমস্যার কথা শুনলেও সম্মেলন করার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। তাই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে খোদ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল থেকে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের মদদদাতা এমপি-মন্ত্রীদের শোকজ লেটার পাঠাবে আওয়ামী লীগ। প্রায় ২০০ জন আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রতিষ্ঠিত নেতাকে শোকজ লেটার পাঠানো হচ্ছে। এর মধ্যে একশ’ জনের বেশি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রয়েছেন।
দলের বিশাল সংখ্যক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে এই প্রথম দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। পাঁচ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি, অন্য বিরোধী দল বা আওয়ামী লীগের কোনো শরিক দল অংশ না নেয়ায় শতাধিকের উপরে উপজেলায় বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। এছাড়া দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে জয়লাভ করেছে শতাধিক। দলের বিদ্রোহীরা নির্বাচন না করলে সবগুলো উপজেলায় বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় জয়লাভ করতেন নৌকার প্রার্থীরা।
দলীয় সূত্র জানায়, নানাবিধ কারণে শুরু থেকেই উপজেলা নির্বাচনে বেশি একটা কড়াকড়ি করার ব্যাপারে একমত ছিলেন না আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। বিদ্রোহী প্রার্থীরাও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এ বিষয়ে কথা বললে নেতারা পরবর্তীকালে দলে কী ধরনের সিদ্ধান্ত আসবে তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলায় এমপি এবং মন্ত্রীরা নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে উন্মুক্তভাবে কাজ করায় বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা বেড়ে যায়।
অপর দিকে বিদ্রোহী প্রার্থীরা শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছেন, জেলা নেতৃবৃন্দ টাকার কাছে বিক্রি হয়ে অজনপ্রিয় প্রার্থীদের নাম কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন। ত্যাগী ও জনপ্রিয় প্রার্থীদের নাম কেন্দ্রে পাঠাননি। তাই তারা বিদ্রোহী হয়েছেন। নির্বাচনের পর অবশ্য শতাধিক আসনে নৌকার প্রার্থী পরাজিত হওয়ার মাধ্যমে বিদ্রোহীদের অভিযোগ সত্য হয়। এ অবস্থায় বিদ্রোহী প্রার্থীরা বলছেন, তাদের প্রতি কোনো ব্যবস্থা নেয়া হলে তা হবে অনৈতিক।
এদিকে ২০তম জাতীয় সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হবার পর প্রায় তিন বছরে ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে মাত্র একটি জেলা মৌলভীবাজারে সম্মেলন হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি জেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়েছে। তবে কোনো উপজেলায় সম্মেলন হয়নি। কেন্দ্রের আটটি সাংগঠনিক টিম গত মে মাস থেকে দেশব্যাপী সফর শুরু করে অক্টোবর মাসের আগেই সবগুলো জেলা ও উপজেলায় সম্মেলন করার জন্য। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ কাজের কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এছাড়া সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সংগঠন থেকে তৃণমূলে নিজস্ব অফিস করার বিষয়ে তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু তৃণমূলের কোনো ফিডব্যাক পায়নি কেন্দ্র। এমপি ও মন্ত্রীদের বিরোধিতায় সম্মেলন আয়োজন করা যাচ্ছে না বলে জানান একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকার সময় সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে যৌথ সভায় দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনগুলোকে সম্মেলন আয়োজনের নির্দেশ দিলেও তা কোনো কাজে আসছে না। এ দিকে নির্দেশনা অমান্য করে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে দলে ভেড়াচ্ছেন সংগঠনের নেতারা। তৈরি করছেন এমপি লীগসহ নানা বলয়।
এসব বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রসঙ্গে বলেন, যারা বিদ্রোহী হয়েছেন তাদের সবাইকে শোকজ করা হবে। এরপর তাদের উত্তর বিশ্লেষণ করে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যদি কোনো কেন্দ্রীয় নেতা, এমপি, মন্ত্রী জড়িত থাকে বা তাদের সমর্থন দিয়ে থাকে তাহলে বিদ্রোহীদের শোকজের চিঠির জবাব পেলেই আমরা জানব। তখন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ইনকিলাবকে বলেন, জেলাগুলোতে এমপিদের বিরোধিতার কারণে সম্মেলন করা যাচ্ছে না। তারা তাদের মতো করে সংগঠন চালাতে চাচ্ছেন। সেখানে সম্মেলন হলে নিজেদের মতো কমিটি করতে পারবেন না বলেই নানাভাবে বিরোধিতা করছেন তারা।
সহযোগী সংগঠন ও জেলা-উপজেলা সংগঠনের সম্মেলনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান ইনকিলাবকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমেই দলের সকল কর্মকান্ড পরিচালনা হচ্ছে। যখন যেখানে যা প্রয়োজন তিনি তা নির্দেশনা দিচ্ছেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী যখন যে নির্দেশ দিচ্ছেন, দলের সবাই একযোগে তা মেনে নিয়ে বাস্তবায়ন করছেন। কোনো নেতৃবৃন্দের নির্দেশ অমান্য করার সুযোগ নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।