মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইরাকে বিভিন্ন গোষ্ঠীর হুমকি ও অভিযোগের মুখে তটস্থ হয়ে পড়েছেন মার্কিন-ইসরাইলপন্থী সাংবাদিক, বিভিন্ন ইস্যুতে সক্রিয় ব্যক্তি ও গবেষকরা। এই অনলাইন গোষ্ঠীর সঙ্গে ইরান সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী একটি দলের যোগসাজশ রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।-খবর এএফপির
‘ইলেকট্রনিক আর্মি’ খেতাব পাওয়া এই অনলাইন গোষ্ঠীর বিপুলসংখ্যক সমর্থকের কাছ থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সশস্ত্র গোষ্ঠী ও কর্মকর্তারা সুবিধা পাচ্ছেন। তারা বেনামে সামাজিকমাধ্যমে এসে নিজেদের যেমন প্রশংসা করেন, তেমনি নিন্দুকদের নিয়ে মশকরা করেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের বিপরীতে ইরানকে রেখে গত কয়েক মাস ধরে চলা উত্তেজনা এখন অনলাইন কলহ উসকে দিয়েছে।
চলতি গ্রীষ্মে ইরাকের পাঁচটি ক্যাম্প ও অস্ত্র গুদামে বিস্ফোরণ ঘটেছে। ইরান-সংশ্লিষ্ট শিয়া গোষ্ঠী হাশেদ আল-শাবি ওই ক্যাম্প ও গুদামের পরিচালনায় ছিল। বিস্ফোরণের পর পরই ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে হাশেদ। তাদের দাবি, ওই দুই দেশের সন্দেহভাজন গুপ্তচররা এই হামলায় অবদান রেখেছে।
ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রকে বড় একটা সংখ্যক ইরাকি নাগরিক সহায়তা করছেন বলে অনলাইন প্রচারের পর নতুন এই অভিযোগ এসেছে। ‘যুক্তরাষ্ট্রের পথে যাবেন না’ শিরোনামের আরবি ভাষার একটি ফেসবুক পেজে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের নীতিকে সমর্থন জানানোয় ১৪ ইরাকিকে দায়ী করা হচ্ছে।
সাংবাদিক জুমানা মমতাজ ও ব্লগার আলী ওয়াজিহর নামও তাতে রয়েছে। জবাবে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদেল মাহদি, হাশেদ প্রধান ফালোহ ফাইয়াদ ও তার প্রভাবশালী সহকারী আবু মাহদি আল মুহানদিসের কাছে এক বিরল খোলা চিঠি লিখেছেন আলী ওয়াজিহ।
তিনি লিখেছেন, গত কয়েক বছর ধরে সাংবাদিক ও ব্লগারদের একটি দলকে হত্যার উসকানি দিচ্ছে বিভিন্ন লোকজন ও সামাজিকমাধ্যমের পেজ থেকে। তারা সম্ভবত হাশেদের ঘনিষ্ঠ ও তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত।
‘এসব সাংবাদিক ও ব্লগারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ইসরাইলের দালাল এবং দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ করতে চাচ্ছেন, যা একেবারে শূন্য ও তুচ্ছ অভিযোগ,’ বললেন আলী ওয়াজিহ।
ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ড অবৈধভাবে দখল করায় দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইলের বিরোধিতা করে আসছেন ইরাকিরা। কিন্তু ২০০৩ সালের মার্কিন আগ্রাসনের পর থেকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে বাগদাদ।
এসব সত্ত্বেও হাশেদ ও ইরাকি রাজনৈতিক দৃশ্যপটে উল্লেখযোগ্য নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে ইরান। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলবিরোধী বক্তব্য বেড়ে গেছে। আর দুপক্ষের মধ্যে পড়ে সাধারণ ইরাকিরা বিপাকে আছেন। ইরাকের বিভিন্ন উপদল ইসরাইলি হামলার অভিযোগ তুলে দেশ থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে শিয়া ও সুন্নি ধর্মীয় বিভিন্ন সংস্থার দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করে মার্কিন তহবিলের আল-হুররা টেলিভিশন ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইরাকবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ফানার হাদ্দাদ বলেন, ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা এতটাই ব্যাপকতা পেয়েছে যে, এতে সমালোচনাপ্রবণ ও স্বাধীন ইরাকিদের তৎপরতাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইরাকে বড় ষড়যন্ত্রের দালাল হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ স্বার্থ ও রেষারেষিতে ইরানের নেতৃত্বাধীন প্রতিরোধ জোট ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরও জোরদার হয়েছে। ইসরাইলি দালালের তালিকায় নাম থাকা ওমর আল-শাহের নামের এক সাংবাদিক বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যে প্রচার চালানো হচ্ছে, তার পক্ষে ন্যূনতম প্রমাণ নেই।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, আপনার নাম ইসরাইলি শিবিরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেলে আগের চেয়ে বর্তমান দিনগুলোতে তা অনেক বেশি ভয়ঙ্কর।
জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসে হিংস্রতার নথি সংগ্রহ করেছেন ঐতিহাসিক ওমর মোহাম্মদ। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ইসরাইলি বিমান হামলা ও মার্কিন-ইরান উত্তেজনার ফলে এসব অভিযোগ আসছে।
তিনি বলেন, এটি প্রাতিষ্ঠানিক ও পেশাগত। এখানে একটি দল আছে, যারা আমাদের মানবিক অধিকার হরণ করার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।
জার্নালিস্টিক ফ্রিডামস অবজারভেটরি বলছে, ফিলিস্তিনি সংকটের স্পর্শকাতরতার অর্থ, কেউ ইসরাইলের সঙ্গে কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠলে তার মানে দাঁড়ায় তাকে হত্যার আহ্বান করা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।