রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ফুটবল খেলার দাওয়াতপত্রে নাম দেয়া নিয়ে গালাগাল, মারধর, হামলা ও খুনের পর চলছে প্রতিপক্ষের অবাধ ভাঙচুরও লুন্ঠন। লুণ্ঠনকারীদের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছে কয়েক শত নারী-পুরুষ ও শিশু। গ্রামে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। প্রতিপক্ষের লাঠিয়ালরাই গ্রামের মানুষের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করছে। হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতার কিংবা প্রতিপক্ষের লাঠিয়ালদের দমনে পুলিশ কোন কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারছে না। সপ্তাহাধিককাল ধরে নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চলের নবীপুর গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে চলছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নবীপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন ইনকিলাবকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সরেজমিনে গ্রামের লোকজন জানিয়েছেন, নবীপুর গ্রামের আদম আলী ওরফে আদু মেম্বার একজন সম্মানিত ব্যক্তি। বয়স কম বেশি ৬৫ বছর। তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থেকে বহু বছর ইউনিয়ন পরিষদে মেম্বার ছিলেন। সা¤প্রতিককালে গ্রামটিতে আ.লীগের প্রভাব বৃদ্ধি পেলে নিজের অবস্থানকে সুদৃঢ় রাখার জন্য তিনি আ.লীগে যোগদান করেন। কিন্তু স্থানীয় আ.লীগের কয়েকজন শৃংখল কর্মী তাকে সহজভাবে মেনে নেয়নি। কিছুদিন পূর্বে গ্রামে ক্রিকেট খেলার আয়োজন করে স্থানীয় আ.লীগের নেতাকর্মীরা। ক্রিকেট খেলার দাওয়াতপত্রে আদু মেম্বারের নাম ছাপা হয়। এ নিয়ে আ.লীগের কিছু নেতাকর্মীরা আদু মেম্বারকে অশালীন ভাষায় গালাগাল করে। আদু মেম্বারের সর্মথকরা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে মারধর করে। এই নিয়ে গত ২৮ আগস্ট রাতে দু’পক্ষের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এই হামলায় রাজা মিয়া (৪২) নামে একজন প্রাক্তন মেম্বার ও আ.লীগ নেতা মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি গত ৩১ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। এই ঘটনার পর রাজা মিয়ার সর্মথকরা আদু মেম্বারের সমর্থকদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে গ্রাম থেকে বের করে দেয়। আদু মেম্বারের সমর্থক কয়েকশো নারী-পুরুষ ও শিশু গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর রাজা মিয়ার সর্মথকরা গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নেয়। রাজার সমর্থকরা ব্যাপক লুণ্ঠন চালায়।
অভিযোগ অনুযায়ী লুটেরারা গত সপ্তাহাধিকালে কমবেশি অর্ধশত বাড়ি-ঘর লুণ্ঠন করেছে। আদম আলী খাঁ সলিম খাঁ, সিরাজ খা, অজিত খাঁ, মঙ্গল মিয়া, শুকুর খাঁ, কামাল খাঁ’র বাড়ি থেকে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি, ঘরের আসবাবপত্র তৈজসপত্র, ট্রাক্টর ইত্যাদি লুট করে নিয়ে গেছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকার কারণে এসব লুটেরাদের বিরুদ্ধে গ্রামের মানুষ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ১৮ জনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।