পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ট্রেনের সময়সূচি নিয়ে প্রচলিত প্রবাদ ‘স্যার ৯টার গাড়ি কয়টায় ছাড়ে’ বহুল আলোচিত। কিন্তু সকাল ১১টার অনুষ্ঠানে ‘প্রধান অতিথি মন্ত্রী-বিশেষ অতিথি সচিব কয়টায় আসবেন’ সেটা জানা ছিল না ঢাকায় কর্মরত বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের।
তাই দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। প্রাকৃতির ভয়াবহ দুর্যোগ হিসেবে পরিচিত ‘ভূমিকম্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী গুরুত্ব না দেয়ায় এই ঘটনা ঘটে। এমন ঘটনা বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কাছে বাংলাদেশের মন্ত্রী-সচিবদের দায়িত্বশীলতা এবং সময়ের মূল্য দেয়া সম্পর্কে কি ধারণা দেয়? অবশ্য অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান ৩ ঘণ্টা পর অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন।
ঘটনা এমন- গতকাল রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে বেলা ১১টায় ভূমিকম্প বিষয়ক একটি অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। ভূমিকম্প প্রস্তুতি কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চারটি পৃথক সমঝোতা স্মারক সইয়ের এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যথাসময়ে উপস্থিত হন আমন্ত্রিত ঢাকায় কর্মরত বিদেশি রাষ্ট্রদূত তথা অতিথিরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে যথাসময়ে সভাস্থলে উপস্থিত হন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত রবার্ট ক্যাথারটন ডিকসন, সুইডিশ রাষ্ট্রদূত শার্লোটা সিল্টার, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী। কিন্তু অনুষ্ঠান শুরুর সময় অতিক্রান্ত হলেও প্রধান অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান ও মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ্ কামালের দেখা নেই।
১১টার অনুষ্ঠান ২ ঘণ্টা পর যখন দুপুর ১টাতেও শুরু হচ্ছিল না, তখন আয়োজকদের একজনকে সুইডিশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত শার্লোটা সিল্টার জানান, তিনি দুপুর দেড়টার পর আর সভাস্থলে থাকতে পারবেন না। তাদের এই কথোপকথনের মাঝে আয়োজকদের আরেকজন এসে জানান, প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান দুপুর ১২টার দিকে সাভার থেকে মহাখালীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। তিনি দেড়টার আগে কিছুতেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন না।
এসময় গল্প করে সময় কাটান আগত দর্শক ও অন্যান্য অতিথিরা। কেউ কেউ চেয়ারে ঘুমিয়ে পড়েন। গুরুত্বপূর্ণ সভা প্রধান অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের উপস্থিতি ছাড়া অনুষ্ঠান শুরুর সুযোগ নেই। ২ ঘণ্টা অপেক্ষার পর দেরি করতে না পারায় আয়োজকদের পক্ষ থেকে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত শার্লোটা সিল্টারকে বক্তব্য দিতে বলা হয়। দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত বক্তব্য দিতে শুরু করেন। শুরুতেই তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠান দেরিতে শুরু হওয়ায় আমার আগে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ হলো।’ বক্তব্য শেষে বিদায় নেন সুইডিশ রাষ্ট্রদূত শার্লোটা সিল্টার।
এ অবস্থায় অধৈর্য্য হয়ে পড়েন অন্যান্যরা। অনুষ্ঠান শুরু হতে দেরি হওয়ায় আগত অন্য অতিথিরা বিরক্তি প্রকাশ করেন। অলস সময় কাটাতে গণমাধ্যমকর্মীসহ আগত অতিথিদের কেউ কেউ বসার জায়গাতেই ঘুমোতে শুরু করেন। আগত বিদেশি অতিথিদেরও একজন মাথায় হাত দিয়ে ঝিমুতে থাকেন।
সংবাদ সংগ্রহ করতে যে সব গণমাধ্যম কর্মী হাজির হন তারা জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের এই অনুষ্ঠান বেলা ১১টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল। এখন দুপুর ১টা পরও অনুষ্ঠান শুরুর কোনো খোঁজ-খবর নেই। অন্য অনুষ্ঠান থাকায় সাংবাদিকদের কেউ কেউ চলে যান। আয়োজক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সময়ের বিষয়ে যত্মশীল না হওয়ায় অনেকেই বিরক্ত হন।
সাংবাদিকরা অনুষ্ঠান শুরুর ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিতে গেলে বিরক্তি প্রকাশ করে আয়োজকদের একজন বলেন, আমরা আসলে বুঝতে পারছি না প্রতিমন্ত্রী মহোদয় কখন আসবেন। এদিকে অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূতদের দাওয়াত দিয়েছি। অনুষ্ঠান শুরু করতে না পারাতে আমরাই বিদেশীদের কাছে ছোট হয়ে গেলাম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৩ ঘণ্টা দেরি করে দুপুর ২টায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন। তখন অনুষ্ঠান শুরু হয়। বিশেষজ্ঞরা এই খবর শুনে বলছেন, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের ‘সমায়ানুবর্তিতা’ দায়িত্বশীলতার প্রমাণ মেলে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে বিদেশিরা হয়তো ট্রেনের মতোই আয়োজকদের কাছে জানতে চাইবে ‘স্যার ৯টার অনুষ্ঠান কয়টায় শুরু হবে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।