Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রেনের ১৬টি হুইস পাইপ কেটে চালককে অপহরণ

চবিতে চলেনি শাটল ট্রেন : ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারের জেরে চট্টগ্রাম বিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। এর জের ধরে গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে ছাত্রলীগের একাংশ। তারা সকালে ষোলশহর স্টেশনে শাটল ট্রেনের ১৬টি হুইস পাইপ কেটে চালককে তুলে নিয়ে যায়। ফলে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক গ্রুপ চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) ও বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা গতকাল বিকেলে ক্যাম্পাসে সংঘর্ষে জড়ান। দুইটি গ্রুপই শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে সামনে রেখে আধিপত্য বিস্তারের জন্য এ সংঘর্ষ বলে ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ জানায়, সংঘর্ষ চলাকালে দুই গ্রুপের কর্মীরা একে অপরের প্রতি ইট পাটকেল ছুঁড়ে মারে। লাঠিসোটা ও দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় তারা। ক্যাম্পাস ও আশপাশের কয়েকটি হলের সামনে দফায় দফায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুই গ্রুপের অন্তত ১০ কর্মী আহত হয়েছে বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা। এর আগে শনিবার রাত পৌনে ১২টায় সোহরাওয়ার্দী হলের মোড়ে বিশ্ববিদ্যালয় সিএফসি ও বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

এতে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১০-১১ শিক্ষাবর্ষের মো. ইলিয়াছ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ওবায়দুর রহমান লিমন, লোক প্রশাসন বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নিলয় হাসান, পরিসংখ্যান বিভাগের ১০-১১ শিক্ষাবর্ষের মাহফুজুর রহমান, ভ‚গোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রিয়াম রায় প্রান্ত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোহরাওয়ার্দী হল দখল কেন্দ্র করে মূলত মারামারির শুরু হয়। সিএফসি গ্রুপের কয়েককজন নেতাকর্মী সোহরাওয়ার্দী হল দখল করতে গেলে বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরবর্তীতে সিএফসি গ্রুপের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলে ও বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা আলাওল ও এফ রহমান হলে অবস্থান নেয়।
এর জের ধরে গতকাল সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে ছাত্রলীগের একাংশ। অবরোধের সমর্থনে শহর থেকে ছেড়ে যাওয়া সকাল সাড়ে ৭টার শাটল ট্রেনের ১৬টি হোসপাইপ কেটে দেয় তারা। এসময় শাটল ট্রেনের চালক খোরশেদ আলমকে তুলে নিয়ে যায়। এক ঘণ্টা পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ চেষ্টা করছে। ক্যাম্পাসে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধের বিষয়ে রেলওয়ে থানার ওসি মোস্তাফিজ ভূঁইয়া বলেন, সকালে কে বা কারা কদমতলী থেকে শাটল ট্রেনের এক চালককে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় সকাল থেকে শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চবি ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রণব মিত্র চৌধুরী বলেন, শাটল ট্রেনের চালককে অপহরণ করা হয়েছে। সে জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। শহর থেকে ক্যাম্পাসগামী সকাল সাড়ে ৭টা ও ৮টার ট্রেন পৌঁছায়নি ক্যাম্পাসে। এতে করে হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিপাকে পড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা নবগঠিত কমিটির সভাপতি রেজাউল হক রুবেল সাংবাদিকদের বলেন, মো. ইলিয়াস নামে একটি ছেলে বারবার কমিটিকে ডিস্টার্ব করছে। তারা ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তুলছে। কেউ যদি ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করে তাদের প্রতিহত করা হবে। আমরা বগিভিত্তিক রাজনীতি করতে চাই না। আমরা হলভিত্তিক রাজনীতি চাই।

অন্যদিকে বিজয় গ্রুপের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এইচ এম তারেকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের নির্দেশে এই অতর্কিত হামলা চালানো হয়। তাকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে চেয়েছি। কিন্তু সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে রাজনীতি করার মন মানসিকতা তার নেই। তার মতো একজন অছাত্রের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতি কখনো সফল হবে না। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি এবং দ্রুত তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে দাবি জানাচ্ছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ