বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে খাস কামরায় যৌন হয়রানীর অভিযোগগে কেন্দ্র অভিযুক্ত শিক্ষকের পক্ষে ও বিপক্ষে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা।পাবিপ্রবি ক্যম্পাসে দুই পক্ষ পৃথক ভাবে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী পালন করেছেন। আজ রবিবার বেলা ১২ টার দিকে ক্যম্পাসে উভয় পক্ষ এই কর্মসূচী পালন করেন। খাস কামরায় বিছানা তৈরী করে য়েওন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষকের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অবস্থান নেওয়াকে কেন্দ্র করে ক্যম্পাসে উত্তেজনা ও পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনা চলছে। যদিও ভিসি প্রফেসর ড. এম. রোস্তম আলী কোন পক্ষপাত করছেন বলে জানিয়েছেন।
যৌন হয়রানীর অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষকের পক্ষে শিক্ষক কর্মকর্তারা বেলা ১২ টার দিকে ক্যম্পাসে খাস কামরার ঘটনা নিয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করে। এর আগেই শিক্ষার্থীরা ঐ দুই শিক্ষকের বিচার দাবীতে তদন্ত কমিটি গঠন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে ছাত্র ধর্মঘট শুরু করেন। পাবিপ্রবি’র সকল ক্লাশ বন্ধ হয়ে যায়। সকালেই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট বন্ধ করে দেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরিবহন বন্ধ থাকে। ফলে অচল হয়ে পড়ে শিক্ষা কার্যক্রমসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম ।
প্রসঙ্গত : পাবিপ্রবি’র ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বর্তমান সভাপতি আমিরুল ইসলাম ও সাবেক সভাপতি ড. কামরুজ্জামানের কক্ষে খাস কামড়া সন্ধান পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভাগের নারী শিক্ষার্থীদের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উথ্থাপন করা হয়।
গত মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট ) দুপুরে ঐ বিভাগের বর্তমান ও সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই কামরার খাটসহ আসবাবপত্র বের করে দেয়। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনানূগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী করেন শিক্ষার্থীরা ।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বর্তমান সভাপতি আমিরুল ইসলাম ও সাবেক সভাপতি ড. কামরুজ্জামান বিভিন্ন সময়ে বিভাগের নারী শিক্ষার্থীদের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন নির্যাতন চালায় ঐ খাস কামড়ায়।
বিষিয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও সামাজিক সম্মান ও শিক্ষা জীবনের কথা ভেবে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ করতে সাহস পায়নি। সম্প্রতি ওই কক্ষে খাট পেতে খাস কামরা তৈরির বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ওই বিভাগের বর্তমান ও সাবেক সভাপতি নিয়মিত ও সান্ধ্য কোর্সের নারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময়ে তাদের ওই কক্ষে ডেকে নিতেন। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্যম্পাসে এ নিয়ে নানান গুঞ্জন চলে আসছিল । মান সম্মাপনের কারণে কোনো ছাত্রী এ ব্যাপারে কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। পাবিপ্রবি’র ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদ চৌধুরী আসিফ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেছেন ঐ দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে । অফিস কক্ষে এ ধরণের সুসজ্জিত খাস কামরার দেখে মনে হয়েছে এটির কি প্রয়োজন ? তা আমার বোধগম্য নয়।’ নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হেনস্থা মতো স্পর্শকাতর বিষয় হলে অবশ্যই সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’
ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সভাপতি ড. আমিরুল ইসলাম নিজের বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নৈশ ও নিয়মিত কোর্সের ক্লাশ নেওয়ার জন্যে ক্যম্পাসে শিক্ষকদের দীর্ঘসময় অবস্থান করার কারণে আগের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শুধুমাত্র বিশ্রামের একটি স্টোর রুমকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে বিশ্রামের জন্য খাট-বিছানার ব্যবস্থা করেন। এখানে অনেকে শিক্ষক মাঝে মধ্যে নামাজও পড়তেন।
এ বিষয়ে পাবিপ্রবির প্রক্টর ড. প্রীতম কুমার দাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় নীতিমালায় বিভাগীয় সভাপতির কক্ষে এ ধরণের খাট বিছানোর সুযোগ আছে কিনা আমার জানা নেই। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কথিত ওই খাস কামরা থেকে আমরা খাটসহ আসবাবপত্র বের করে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, এটি আসলে একটি স্টোর রুম যা ২০১৫ সালে করা হয়। এখানে বিছানা করে বিশ্রাম এবং অনেক শিক্ষক নামাজ পড়ছেন এবং পড়েন। কোনো যৌন হয়রানীর লিখিত অভিযোগ কোনো ছাত্রী কখনো করেননি। কেউ গোপনে করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয় রিজেন্ট বোর্ডের সম্মানিত সদস্যগণ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। ২০১৫ সাল থেকে কোনো সময় এই ধরণের অভিযোগ কেউ করেননি। হঠাৎ করে ২০১৯ প্রশ্ন তোলা হচ্ছে ! । তারপরও কোনো ছাত্রী গোপনে অভিযোগ করলেও ভিসি স্যার সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। প্রয়োজনে রিজেন্ট বোর্ডের সভায় উথ্থাপন করা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপর এক সূত্র মতে, পাবিপ্রবি’র ডাস্টি রাজনীতি ফের শুরু হয়েছে। আওয়ামীলীগ সমর্থিত শিক্ষকদের মধ্যে মত পার্থক্যই এর কারণ ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।