বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলছে সরকারি ধান ক্রয়ের কার্যক্রম। ফলে উপজেলার প্রকৃত কৃষকরা সরকারি গুদামে ধান বিক্রি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ ও খাদ্যগুদাম কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কৃষকের পরিবর্তে ধান দিচ্ছেন। এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে কৃষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার বিকাল ৫টায় উলিপুর খাদ্য গুদামে গিয়ে দেখা যায় ট্রাক ও ট্রাক্টর (বড় ট্রলি) দিয়ে খাদ্য গুদামে ধান ঢুকাচ্ছে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। এ সময় ট্রাক (ট্রাক নং- ঢাকা মেট্রো-ট ১৬-৫৭৩৪) বুঝাই ৪০ কেজি করে ৫শ বস্তার ২০ টন ধান ঢুকানোর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ট্রাকের ড্রাইভার মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ধানগুলো গুদামে ঢুকানোর জন্য কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ি থেকে আনা হয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি ট্রাক্টর থেকে ধান গুদামে ঢুকানো হচ্ছে। এ সময় সেখানে কোন কৃষক উপস্থিত ছিল না। ট্রাক্টর বোঝাই ধানগুলোর মালিক কে জানতে চাইলে, ধান গুদামে ঢোকানোর কাজে নিয়োজিত লেবাররা জানায় এগুলো কৃষকের। এতগুলো ধানের বস্তা কিন্তু কৃষক কোথায় জানতে চাইলে লেবাররা সদুত্তর দিতে পারেনি। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, খাদ্য কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় প্রভাবশালী সিন্ডিকেটটি কৃষকের পরিবর্তে অবাধে গুদামে ধান ঢোকাচ্ছে। ফলে প্রকৃত কৃষকরা খাদ্য গুদামে ধান দেয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে কৃষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য মন্ত্রনালয় থেকে নতুন করে এ উপজেলায় ১ হাজার ৬২ মেঃ টন ধান সংগ্রহের বরাদ্দ দেয়া হয়। এ নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় মাইকিং করে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রকৃত কৃষকদের নামের তালিকা জমা দেয়ার জন্য বলা হয়। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, নতুন করে ১৭ হাজার ৬৯১জন কৃষকের তালিকা তৈরি করা হয়। এ তালিকা নিয়ে গত ৭ আগস্ট উপজেলা ধান সংগ্রহ কমিটি লটারির মাধ্যমে ১ হাজার ৬২ মেঃ টন ধানের বিপরীতে কৃষকের নামের তালিকা তৈরি করার কথা। সেখানে লোক দেখানো লটারির আয়োজন করা হলেও ভিতরে চলতে থাকে নানা নাটকিয়তা। লটারিতে উপস্থিত খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সদস্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, লটারির পুরো সময় তিনি ছিলেন না। অন্য একটি মিটিং থাকার কারণে লটারি শুরু হওয়ার পর তিনি চলে যান। এবারে ১ মেঃ টন করে ১ হাজার ৬২ জন কৃষকের তালিকা করা হয়েছে। তার কাছে লটারীতে ভাগ্যবান কৃষকের তালিকা খোঁজ করলে তিনি বলেন আমার কাছে কোন তালিকা নেই। খাদ্য অফিস বলতে পারবে।
খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মনোয়ারুল ইসলাম জানান, প্রকৃত কৃষকরাই ধান দিচ্ছেন। কৃষকরা গুদামেই আছেন। ধান বোঝাই ট্রাক ও ট্রাক্টর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ট্রাকটি ভুল করে গুদামে ঢুকে পড়েছিল। এখন তা বেড়িয়ে গেছে। তবে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান নেয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সদস্য সচিব হেমেন্ত কুমার বর্মন বলেন, ট্রাকে ধান ঢুকানোর কথা তিনি জানেন না। কৃষকরা ১ টন করে ধান দিবে সেখানে ট্রাক ও ট্রাক্টরের প্রশ্নই আসে না। কেন এমনটি আমার জানা নেই, তবে আমি খোঁজ নিচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সভাপতি মোঃ আব্দুল কাদের জানান, নিদিষ্ট কোন অভিযোগ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।