পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন চট্টগ্রাম বন্দর দিনে দিনে সমৃদ্ধ হচ্ছে জানিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল জুলফিকার আজিজ বলেছেন, বন্দর উন্নয়নে ব্যাপক প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে জাতীয় অর্থনীতি আরও সুদৃঢ় হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের কনফারেন্স হলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে মতবিনিময় সভায় বন্দর চেয়ারম্যান একথা বলেন।
তিনি বলেন, চবক ভবিষ্যত কর্মকান্ডের জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার এ্যালবাম তৈরি করার কাজ হাতে নিয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে বন্দরকে আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত করা হবে। আগামী ২০ থেকে ৩০ বছরের পরিকল্পনা এতে থাকবে। এ জন্য চবক নতুন জমি কেনার প্রতিও মনোনিবেশ করেছে। ইতোমধ্যে বে-টার্মিনাল ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের জন্য জমি নেয়া হয়েছে। মীরসরাই এলাকায় জমি কেনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যত উন্নয়ন পরিকল্পনায় জমির যেন কোন সংকট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের ইকুইপমেন্ট সংযোজনসহ অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে বিশ্বের বন্দরের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ৬ ধাপ এগিয়ে এসেছে। গত বছর যেখানে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ছিল ৭০। এ বছর তা ৬৪ তে উন্নীত হয়েছে। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বের শীর্ষ বন্দরের তালিকার ৫০-এর নিচে পৌঁছাবে। কারণ বন্দরের ইয়ার্ড ও টার্মিনাল সম্প্রসারণের ফলে হ্যান্ডলিং ক্ষমতা ৩১ লাখে উন্নীত হবে। এ বছর কন্টেনার হ্যান্ডলিং-এর পরিমাণ ছিল ২৯ লাখ ৩ হাজার।
তিনি বলেন, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল, ওভার ফ্লো-ইয়ার্ড নির্মাণ কাজ আগামী ২ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হলে হ্যান্ডলিং ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। বন্দরে আসা জাহাজ ৭২ ঘন্টার স্থলে ৩৬ ঘন্টার মধ্যে পণ্য খালাস ও বোঝাই কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। তিনি বলেন, বন্দর সম্প্রসারণ পরিকল্পনায় বে-টার্মিনাল হবে ফোকাল পয়েন্ট। বে-টার্মিনালে ডেলিভারি টার্মিনাল ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মিত হবে। যা আগামী দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। তিনি আগামী দুই-তিন বছরকে চট্টগ্রামে বন্দরের জন্য ক্রিটিক্যাল সময় হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এ সময়ের মধ্যে বন্দরের ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিনের মত কয়েক হাজার ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি প্রবেশ করবে না। সকল কন্টেইনার জাহাজ থেকে বে-টার্মিনালস্থ ডেলিভারি ইয়ার্ডে চলে যাবে। উক্ত স্থান থেকে ট্রাক, লরি ও কাভার্ডভ্যান পণ্য নিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে চলে যাবে। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে কোন ট্রাক প্রবেশ করতে হবেনা।
তিনি বলেন, দেশের বিশাল সম্পদ আহরণ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ করার লক্ষে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ মাইনিং পোর্ট ও ফিশ হারবার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সরকার বøু-ইকোনমির ওপর গুরুত্বারোপ করায় শীঘ্রই সমুদ্র সম্পদ আহরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সমুদ্রের গভীরে থাকা মূল্যবান মিনারেল মিশ্রিত মাটি-বালি সমুদ্র উপকূলের নির্দিষ্ট স্থানে তুলে সেমি প্রসেস করার জন্য মাইনিং পোর্ট প্রয়োজন। যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে। একইভাবে মূল্যবান টোনা ফিশসহ অন্যান্য মাছের জন্য ফিশ হারবার পোর্ট দরকার। উক্ত হারবারে থাকা প্রক্রিয়াজাত কারখানা থেকে মাছ সরাসরি বিদেশে রপ্তানি করা যাবে।
মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম, সদস্য (ফিন্যান্স) কামরুল আমিন, সচিব মো. ওমর ফারুকসহ বন্দরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা, সহ-সভাপতি মনজুর কাদের মনজু, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।