Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের আগ্রাসী পররাষ্ট্র নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিন

ওবামার প্রতি মার্কিন সিনেটের আহ্বান

প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন সিনেটররা ভারতের আগ্রাসী পরররাষ্ট্র নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মার্কিন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তারা ভারতের এ ধরনের পররাষ্ট্র নীতির ব্যাপারে খুবই হতাশ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে মঙ্গলবার সিনেটররা অতি দ্রুত ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক সংশোধনের আহ্বান জানান। তারা বলেছে, ভারত ওই অঞ্চলে পারমাণবিক প্রতিযোগিতা জিইয়ে রেখেছে। এ ছাড়াও তারা আফগানিস্তান, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সউদি আরব ও কাতারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কোন্নয়নে গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেন। সিনেটররা মোদীর সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি দেশ সফর নিয়ে গভীর আলোচনা করেন।
এদিকে, সিনেটরদের উদ্বেগ সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতে ষষ্ঠ বেসামরিক পারমাণবিক চুল্লী স্থাপনের কাজ শুরু করার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। দুই নেতা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ভারত সরকার ও মার্কিন এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক এ প্রকল্পে অর্থায়ন করবে এবং ২০১৭ সালের জুন মাসে এর নির্মাণকাজ শেষ করবে। যুক্তরাষ্ট্র সফরে মার্কিন কংগ্রেসে দেয়া মোদীর পুরো বক্তৃতায় ছিলো ভারত-মার্কিন সম্পর্কের গুণগান। মোদী বলেন, আমেরিকা ও ভারত সব সময়ই স্বাভাবিক মিত্র। কারণ, দু’দেশের সম্পর্কের শিকড় রয়েছে গণতন্ত্র, ব্যক্তি স্বাধীনতার মতো আদর্শে। পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করে মোদী বলেন, ভারতের পশ্চিম সীমান্ত থেকে শুরু করে আফ্রিকা পর্যন্ত সন্ত্রাসের নানা নামÑ যেমন লস্কর, তালিবান। তিনি বলেন, মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের উচিত, যারা রাজনৈতিক লাভের জন্য সন্ত্রাসকে মদদ দেয় তাদের কড়া বার্তা দেয়া। ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার সময় ভারতের পাশে থাকার জন্য কংগ্রেসের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান মোদী। আফগানিস্তানের পুর্নগঠনে যে আমেরিকার পাশাপাশি ভারতও কাজ করছে, তা-ও কংগ্রেস সদস্যদের বোঝাবার চেষ্টা করেন তিনি। আবার সু-কৌশলে চীনের নাম উল্লেখ না করে যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়ে দিয়েছেন, শক্তিশালী ভারত কৌশলগতভাবে মার্কিন স্বার্থের অনুকূল। তবে কংগ্রেসম্যানরা তার এ কথা কতটুকু আমলে নেবেন, তা বিবেচ্য থেকে যাচ্ছে। রাজনীতিকদের মতে, সংবিধান ও গণতন্ত্রের কথা বলে মোদী যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তার সরকারের ভাবমর্যাদা কিছুটা সংশোধন করতে চেয়েছেন। কারণ, ভারতে অসহিষ্ণুতা বিতর্ক ভারত-মার্কিন সম্পর্কে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল।
প্রতিরক্ষা এবং পরমাণু ক্ষেত্রে মার্কিন সহযোগিতা আদায় করার পাশাপাশি মার্কিন বিনিয়োগ টানারও চেষ্টা করেন মোদী। ওয়াশিংটনে ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্মেলনে তিনি বলেন, এমন একটা সময়ে আপনাদের সামনে এসেছি, যখন আন্তর্জাতিক অর্থনীতি যথেষ্ট দুর্বল। তিনি বলেন, বিশ্বের এখন প্রয়োজন আর্থিক বৃদ্ধির জন্য নতুন উদ্যোগ। মোদীর এ আহ্বানের প্রেক্ষিতে বেশকিছু ক্ষেত্রে বাড়তি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন মার্কিন বিনিয়োগকারীরা।
মোদী সরকার সংখ্যালঘুদের ভরসা দিতে পারছে না বলে মন্তব্য করেন মার্কিন কংগ্রেসের কোনও কোনও সদস্য। শেষবার ভারতে এসে বিদায়ী বক্তৃতায় পরোক্ষভাবে অসহিষ্ণুতা নিয়ে খোঁচা দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও। মোদী মার্কিন সিনেটরদের উদ্বেগের সূত্র ধরে বলেন, আপনাদের মতো হাত মিলিয়ে চলা ও সর্বদল সহযোগিতার নজির আমাদের সংসদেও রয়েছে, বিশেষত উচ্চ কক্ষে তার চর্চা হয়। মার্কিন কিছু কংগ্রেস ম্যান মোদীর কথার মধ্যে মাঝে মাঝে হাততালি দিয়েছেন। কিন্তু ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার কথা তুলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ অব্যাহত রেখেছেন। ডন, বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারতের আগ্রাসী পররাষ্ট্র নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ