Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনাঞ্চলে ঈদযাত্রীদের ভোগান্তির শঙ্কা

মো. মাসুদ রানা, খুলনা থেকে | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ঈদযাত্রায় এবারও খুলনাঞ্চলের যাত্রীদের সঙ্গী হচ্ছে ভোগান্তি। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ৬ লেন উন্নয়নের কাজ চলায় বিড়ম্বনায় পড়তে হবে ঘরমুখো মানুষদের। এছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে কয়েকগুণ অবৈধ যানবাহনের দৌরাত্ম বেড়েছে।

সূত্র মতে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক দুই লেন থেকে ৬ লেনে উন্নয়ন কাজ চলায় আসন্ন ঈদুল আজহায় সড়ক পথে খুলনাঞ্চলের যাত্রীদের বাড়ি ফেরায় দুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে। মহাসড়কের উন্নয়ন কাজে বিপুল সংখ্যক গাড়িতে মালামাল লোড-আনলোড করায় এবারের ঈদে যাত্রীদের ভোগান্তি ও দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হবে। পাশাপাশি অ্যাপ্রোচ সড়কগুলো পরিণত হয়েছে খানাখন্দকে। এতে ভোগান্তি বাড়ছে যাত্রী, চালক ও পথচারীদের। এতে ঈদে অতিরিক্ত গাড়ির চাপে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সুধিজনেরা। অবশ্য প্রশাসনের দাবি, পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎপর তারা।

এদিকে, খুলনা-যশোর মহাসড়কের যশোর অংশের ৩৮ কিলোমিটার সড়কে ভাঙাচোরা ও বড় বড় খানাখন্দে ভরা। আর এর মধ্য দিয়েই মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীদের। ফলে এবার ঈদের ঘরমুখো যাত্রীদের যাতায়াতে ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে।

সূত্র মতে, খুলনা-যশোর মহাসড়কে যাত্রী ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। সহসা কমছে না এ দুর্ভোগ। প্রকল্পের মেয়াদ থাকায় কাজ চলছে ঢিমেতালে। সড়কের অধিকাংশ স্থানে কার্পেটিং ওঠানো, ধুলাবালি, পাথর আর খানাখন্দের সঙ্গে নিত্য চলাচল এ অঞ্চলের মানুষের। সাথে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে মড়ার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিতে কাদামাটির রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। কোথাও কাদামাটিতে গাড়ি আটকে থাকছে। সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। আর প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য মতে, যশোর-খুলনা মহাসড়কের পূর্ণ নির্মাণ কাজ চলছে। দু’টি প্যাকেজে ৩২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ মহাসড়কের কাজ হওয়ায় খুশি স্থানীয়রা। ব্যস্ততম মহাসড়কটির বর্তমান প্রস্থ ২৪ ফিট। এটি এখন দুই লেনে উন্নীত হয়ে ৩৪ ফিট হবে। সাড়ে চার থেকে পাঁচ ফিট গর্ত করে তা প্রথমে বালি ও পরে বালি-খোয়ার মিশ্রণ ও সবশেষ ১২০ মিলিমিটার বা প্রায় ৫ ইঞ্চি পুরুত্বের বিটুমিনাস সারফেসে তা ভরাট হয়ে তৈরি হবে মহাসড়ক। পালবাড়ি থেকে যশোরের শেষপ্রান্ত নওয়াপাড়ার রাজঘাট ৩৮ কিলোমিটারের মহাসড়কের উন্নয়নের কাজ শেষ হওয়ার সময় ২০২০ সালের মে মাসে।

এ ব্যাপারে খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জর্জিস হোসাইন বলেন, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের যাতায়াত সহজ করতে সকল সড়ক-মহাসড়ক মেরামত করা হচ্ছে। খুলনা-যশোর মহাসড়কেও সংস্কার কাজ চলছে। আশা করি অন্যান্য সড়কে মেরামত ঈদের আগে শেষ হবে।

মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা বলেন, খুলনা-যশোর মহাসড়কের অধিকাংশ স্থানে কার্পেটিং ওঠে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ধুলাবালি, পাথর আর খানাখন্দের মধ্যে নিত্য চলাচল যাত্রীদের। কর্তৃপক্ষ দুর্ভোগ কমাতে ওঠে যাওয়া পিসের স্থানে যে ইটের সলিং করেছে তাতে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। এবড়ো থেবড়ো রাস্তায় প্রচÐ ঝাঁকুনি সহ্য করে যানবাহনে বসে থাকা দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছানোও সম্ভব হচ্ছে না।

পরিবহন চালক হালিম মিয়া বলেন, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ৬ লেনের কাজ চলমান থাকায় অনেক স্থানে ওয়ানওয়ে হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আর প্রতিনিয়ত মহাসড়কের কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন গাড়ি মালামাল লোড-আনলোড করায় গাড়ির জট বাঁধার আশঙ্কা রয়েছে। ঈদের সময় উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখা ও অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্বে রাখা প্রয়োজন। তা না হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
গাড়ি চালক এরশাদ হোসেন বলেন, খুলনা-যশোর মহাসড়কে ইট বিছিয়ে রাখার কারণে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেগ পেতে হচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয় রয়েছে সবসময়। বড় ধরনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

ট্রাক চালক ইমরান হোসেন বলেন, ঈদের সময় মহাসড়কে যানবাহনের ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের কয়েক স্থানে অস্থায়ী বাজার বসে। এতে গাড়ি চালনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। আর নসিমন, করিমনের দৌরাত্ম তো আছেই। অন্তত ঈদের কয়েকদিন এগুলো প্রশাসনের দেখা উচিৎ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ