পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। বাস, ট্রেন ও লঞ্চে ভিড়। এর মধ্যে ট্রেনে চাপ ছিল তুলনামূলক বেশি। গতকাল কমলাপুর স্টেশন থেকে বেশিরভাগ ট্রেনই ছেড়ে গেছে দেরিতে। এজন্য যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয়েছে। রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলো থেকে গতকাল দুরপাল্লার বাসগুলো পরিপূর্ণ যাত্রী নিয়েই সময়মতো ছেড়ে গেছে। তবে রাতের কয়েকটি বাস সময়মতো ছাড়তে পারেনি। বাস মালিকরা জানান, ফিরতি পথে বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে যানজটে আটকে পরায় রাতের বাসগুলো একটু দেরিতে ছেড়েছে। সড়কপথে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজটের কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসকের যাত্রা ছিল স্বস্তিদায়ক। নৌপথে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া ঘটে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় গাড়ির দীর্ঘ সারিতে ভোগান্তি বেড়েছে। বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়া পরিবর্তন না হলে আজও এই ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে।
ঈদ যাত্রার প্রথম দিনে গতকাল কমলাপুর স্টেশন থেকে প্রথম চেড়ে যায় রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস। ট্রেনটি আধা ঘন্টা দেরিতে ছেড়েছে। এরপর খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী এবং চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস এক থেকে দুই ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে। এছাড়া পঞ্চগড়গামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস, দুতযান এক্সপ্রেসসহ উত্তরাঞ্চলের প্রায় সবগুলো ট্রেনই দেরিতে ছেড়েছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, গতকাল বুধবার কমলাপুর থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে তিনটি ঈদ স্পেশালসহ মোট ৩৭টি আন্তঃনগর ট্রেন। এই ট্রেনগুলোতে মোট আসন প্রায় ৩০ হাজার। যাত্রীরা জানান, প্রথম দিনে কমলাপুরে ভিড় ছিল। তবে তা উপচে পড়া নয়। সকাল থেকেই ট্রেনের নির্ধারিত সময়ের আগে যাত্রীরা কমলাপুর স্টেশনে আসে। সময়মতো ট্রেন না ছাড়ায় কয়েক ট্রেনের যাত্রীতে এক পর্যায়ে কানায় কানায় ভরে যায় স্টেশন। পর্যাপ্ত বসার জায়গা না থাকায় যাত্রীরা দাঁড়িয়েই অপেক্ষা করতে থাকে।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক জুয়েল জানান, আজ ও কাল শুক্রবার এই দুদিনের রেলের টিকিটে সর্বোচ্চ চাপ ছিল। এজন্য এ দুদিন প্রচন্ড ভিড় হবে। প্রতিদিন রেলে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ঢাকা ছাড়বেন বলে জানান তিনি। রেলওয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মিয়া জাহান জানান, ৬৫টি ট্রেনে প্রতিদিন প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী নিয়ে কমলাপুর স্টেশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা করবে। এটি অন্য সময়ের চেয়ে প্রায় ৩ গুণ বেশি।
এদিকে ঈদযাত্রায় বাস, ট্রেন ও লঞ্চে ডেঙ্গুর লার্ভাবাহী এডিশ মশা যাতে দেশের বিভিন্ন জায়গা যেতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এজন্য চারটি ফগার মেশিন কেনা হয়েছে। ঢাকা বিমানবন্দর ও তেজগাঁও স্টেশনে এগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে ঈদযাত্রার বিভিন্ন ট্রেন ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে প্রচুর ময়লা আবর্জনা রয়েছে। ট্রেনে সেই ময়লা-আবর্জনার সঙ্গে মশাও সঙ্গী হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সাধারণ যাত্রীরা।
অন্যদিকে, একইদিনে দূরপালার বাসেরও ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে। ২৯ জুলাই টিকিট কেনা যাত্রীরা গতকাল বুধবার ঈদে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন। বিশেষ করে গাবতলী বাস টার্মিনালে উত্তরবঙ্গ ও বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীদের চাপ ছিল। ভোর থেকেই গাবতলী, মহাখালী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়তে শুরু করে। বেলা বাড়ার সাথে সাখে বাস টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের ভিড়ও বাড়তে থাকে
এদিকে ডেঙ্গুর বিষয়ে আগেভাগেই ব্যবস্থা নিয়েছেন পরিবহন মালিকরা। সায়েদাবাদ মহাখালী ফুলবাড়িয়া টার্মিনালে মশার স্প্রে দিয়ে বাস ছাড়া হয়েছে। কেনা হয়েছে ফগার মেশিনও। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, বাসযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাসগুলো ছাড়ার আগে মশার স্প্রে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ফগার মেশিন দিয়ে বাসস্ট্যান্ডগুলোতে মশা নিধন করা হচ্ছে।
সড়কপথে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গতকাল সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া অংশে যানজপের খবর পাওয়া গেছে। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী না হওয়ায় যাত্রীদের তেমন একটা ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা ও গাউসিয়া অংশে গতকাল সকাল থেকে যানজটে আটকে ছিল শত শত গাড়ি। এজন্য ঘরমুখি যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। একই সাথে গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকাতেও গতকাল সকাল ও বিকালে যানজন ছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে গতকাল সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল। সকাল থেকে পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোত ও বাতাস বয়ে যাওয়ার কারণে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এর পর বেলা একটা থেকে আবহাওয়া আরও খারাপ হলে ফেরিসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করে ঘাট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ঘাট এলাকায় আটকা পড়া যাত্রীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়। অনেকেই ঘাট এলাকার যাত্রী ছাউনিতে আশ্রয় নেন। হঠাৎ নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় দুই ঘাটেই আটকা পড়ে কোরবানির পশুবাহী ট্রাকসহ আট শতাধিক যানবাহন। এতে দুর্ভোগে পড়েন এই নৌপথে আসা যাত্রী ও চালকেরা। অন্যদিকে যথাসময় পদ্মা পাড়ি দিতে না পারায় লোকসানের আতঙ্কে রয়েছেন গরুর ব্যাপারীরা।
বিকেলে বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাম হোসেন বলেন, নদীতে প্রবল স্রোত আর বাতাস। একই সঙ্গে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থায় নৌপথে দুর্ঘটনা এড়াতে সকাল থেকে কোনো লঞ্চ ও স্পিডবোট ছাড়া হয়নি। সকালে দুটি ফেরি ছাড়া হলেও বেলা একটার পর আবহাওয়া বেশি খারাপ হলে ফেরিসহ সব নৌযান চলাচল সাময়িক বন্ধ করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।