Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আপনার জিজ্ঞাসার জবাব

প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

১। মোহাম্মদ ফারহানুল বারী দাইয়্যান খেজুরবাগ, ঢাকা।
জিজ্ঞাসা : সাখাওয়াত বললে কি বুঝায়?
বিশ্লেষণ করুন?
জবাব : সত্যবাদিতার পর ইসলামের বুনিয়াদী নৈতিক শিক্ষা হচ্ছে বদান্যতা। আরবি সাখাওয়াত শব্দের মূল মর্ম হলো নিজের অধিকারকে স্বেচ্ছায় আনন্দের সাথে অন্যের উপর ন্যস্ত করা। এর অনেকগুলো দিক হতে পারে। যথা : (১) নিজের হক ও অধিকার ক্ষমা করা, (২) নিজের উদ্বৃত্ত মাল-সম্পদ অন্যকে দান করা, (৩) নিজের প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য না করে অন্যকে অকাতরে দান করা, (৪) নিজের প্রয়োজনকে বন্ধ রেখে অন্য কাউকে প্রদান করা (৫) অন্যের জন্য নিজের দৈহিক শক্তি ব্যয় করা. (৬) নিজের চিন্তাশক্তিকে অন্যের জন্য খরচ করা (৭) প্রয়োজনের প্রাক্কালে নিজের মর্যাদাকে সংকটাপন্ন করা, (৮) নিজের জীবনকে আশঙ্কাজনক অবস্থার সম্মুখীন করা, (৯) অন্যের প্রাণ রক্ষার জন্য অথবা সত্য প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করা ইত্যাদি। এ সকল গুণাবলীর মাঝে বদান্যতা নি¤œতম ও উচ্চতর মর্যাদা নিহিত আছে। যেগুলোকে শনাক্ত করার জন্য পৃথক পৃথক নামকরণও করা হয়েছে। এই আলোচনার দ্বারা বুঝা যায় যে, সাখাওয়াত এবং বদান্যতার শিক্ষা কতখানি সুবিস্তৃত অর্থ ও মর্মকে ধারণ করে আছে এবং নৈতিকতার কতখানি মূল্যবান শিক্ষা এর মাঝে সম্পৃক্ত আছে। তবে এ সকল প্রকরণের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এই যে, নিজের ব্যক্তি সত্তার দ্বারা অন্যান্যদেরকে উপকৃত করা এবং তাদের চাহিদা পূরণ করা। একই সাথে এ কথাও অত্যন্ত সুস্পষ্ট যে, বদান্যতাসুলভ চিন্তা-চেতনা ও দৃঢ় প্রত্যয় নৈতিক কর্মকা-ের মূল বুনিয়াদ। যা একজন মানুষকে প্রকৃত মানবতার মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে। কোরআনুল কারীমের সূরা বাকারাহতে মহান আল্লাহ পাক মোত্তাকী বান্দাহদের কতিপয় গুণাবলী উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে, ‘এবং তাদেরকে যে রুজী দান করেছি তা থেকে তারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে।’ (সূরা বাকারাহ : রুকু-১) কোনো কোনো তফসিরকার এই খরচ অর্থ গ্রহণ করেছেন ‘যাকাত’ আদায় করা, কিন্তু সঠিক অভিমত হচ্ছে এই যে, এই আয়াত শুধুমাত্র যাকাতের সাথেই সুনির্দিষ্ট নয়; বরং এখানে যেভাবে সুনির্দিষ্ট জরুরি কথা উল্লেখ করা হয়নি। উৎপাদিত ফল ও ফসল অথবা গৃহপালিত পশু অথবা সোনা-রুপা। অথবা অন্য কোনো বস্তু যা কিছুই হোক না কেন আল্লাহ পাক স্বীয় করুণা বলে যে কোনো বান্দাহকে যা কিছু প্রদান করেছেন তা থেকেই অন্য লোকদেরকে দান করা উচিত। যে যা কিছু লাভ করেছে কিংবা যে প্রয়োজনের তুলনায় কম লাভ করেছে উভয় ক্ষেত্রেই দানের হস্ত সম্প্রসারিত রাখতে হবে। এ লক্ষ্যমাত্রা মোটেই সমীচীন নয় যে, প্রয়োজনের তুলনায় যে কম পেয়েছে অথবা অভাবগ্রস্ত সে দান করবে না। বরং সাধ্য অনুসারে তাকেও বদান্যতার সাথে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।
বস্তুত : এ গুণটি হলো মোত্তাকীদের চিহ্ন বা পরিচিত। আর এই গুণের বিকাশকেই নৈতিকতার ক্ষেত্রে সাখাওয়াত এবং বদান্যতা রূপে বিচিত্র করা হয়েছে। (তফসিরে ইবনে জারীর তাবারী, ১ম খ.)
উত্তর দিচ্ছেন : মোহাম্মদ খায়রুল বাশার মানিক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আপনার জিজ্ঞাসার জবাব
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ