Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এসআইর নির্যাতনে কানের পর্দা ফাটল দপ্তরীর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক এসআই বিরুদ্ধে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরীকে ব্যাপক মারধর করে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পরে তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে আড়াই হাজার টাকাও হাতিয়ে নেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা। গতকাল সোমবার এব্যাপারে পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের খাকচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী মো. উবায়দুল্লাহ। এর আগে রোববার রাতে পুলিশের সদর সার্কেল অফিসে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন ও রেজাউল কবিরের কাছে অভিযোগ দেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং নির্যাতনের শিকার ওই দপ্তরী।

জানা যায়, গত ৩ আগস্ট রাত ১০ টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের খাকচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায় এসআই জামিরুলের নেতৃত্বে ৬ জনের একটি পুলিশ দল। তারা বিদ্যালয়ের দপ্তরীর কক্ষের দরজায় টুকা দেয়। পরে বশির নামে কেউ আছে কিনা জানতে চায়। কেউ নাই বলার পরও তারা ওবায়দুল্লাহর পকেটে হাত দেয়। পকেট হাতিয়ে কিছু না পেয়ে আবার বলে বাচ্চু নামে কেউ আছে কি না। এরপর উবায়দুল্লাকে স্কুলের সব শ্রেণির দরজা খুলতে বলে এসআই জামিরুল ও তার সঙ্গীয় পুলিশ দল। এসময় আবার তারা পকেট চেক করতে গিয়ে কয়েকটি ইয়াবা ট্যাবেলট কৌশলে ঢুকিয়ে দেয়।

এরপরই জামিরুল তাকে বলে তুই ইয়াবা ব্যবসা করছ, আর কোথায় কোথায় ইয়াবা আছে বল। এর আগে বিভিন্ন শ্রেনী কক্ষে ঘুরে দেখার সময় একটি কক্ষে নামাজের জন্যে ম্যাডামদের রাখা হিজাব ও কাপড় দেখে তাকে বলে তুই নারীর ব্যবসাও করছ। শিশু শ্রেনী কক্ষে শিশুদের বসার জন্যে রাখা চাটাই দেখে বলে এখানে আড্ডা দেছ, নারীর ব্যবসা করছ। এসব বলেই তাকে দুই কানে এবং মাথায় এলোপাতারি বেধড়ক মারধর করতে থাকে। এরপর হাতকড়া পড়িয়ে বাচ্চুকে বের করার জন্য বলে। এসময় উবায়দুল্লাহর সাথে থাকা তার ভাতিজাকেও আটক করে পুলিশ। উবায়দুল্লাহর হাত থেকে মুঠোফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসআই জামিরুল এবার টাকা দাবী করেন তার কাছে। টাকার জন্যে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ আবু তালেবকে ফোন দেয়ানো হয় উবায়দুল্লাহর মোবাইল থেকে। আবু তালেব সেখানে এসে উবায়দুল্লাহর পিতা ক্বারী নূরুল ইসলামকে আড়াই হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলেন। এই টাকা নিয়ে জামিরুল সেখান থেকে চলে যান। এর আগে উবায়দুল্লাহর পিতার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন এবং এবিষয়ে কাউকে কিছু বললে উবায়দুল্লাকে মাদকদ্রব্য দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবে বলে হুমকী দেয়। উবায়দুল্লাকে পরদিন প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে ও পরে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানো হয়। উবায়দুল্লাহ জানান, তিনি এখন কানে শুনছেন না।

চিকিৎসক এবিএম মুছা চৌধুরী জানান, ওবায়দুল্লাহর কানের আঘাত গুরুতর। প্রচন্ড আঘাতে তার কানের পর্দা ফেটে গেছে। বিষয়টি প্রথমে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। এরপর রাতে পুলিশের সদর সার্কেল অফিসে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যান অভিযোগ নিয়ে। তবে এসআই জামিরুল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন অভিযোগটি শুনেছেন জানিয়ে বলেন, তাদেরকে বলেছি পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে। জামিরুলের বিরুদ্ধে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে টাকা হাতানোর আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এসআই


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ