Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজউক অনুমোদন ছাড়াই ভাষানটেকে ভবন নির্মাণ জনমনে আতঙ্ক

প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর ভাষানটেক আহলে হাদিস মসজিদ রোডে ১৯৩/১/ক নম্বর প্লটে রাজউকের নকশার অনুমোদন ছাড়াই গড়ে তোলা হচ্ছে একটি ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল আবাসিক ভবন। নির্মাণাধীন এই ভবনকে ঘিরে আশপাশের বাড়ীর শতাধিক পরিবারের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাজউক মহাখালী জোন অফিস নামমাত্র প্লট মালিককে নোটিশ দিয়েছে। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির নির্মাণকাজ বন্ধ করেনি। রাজউক কর্মকর্তাগণ ভবন মালিকের সাথে সমঝোতা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ নির্মাণাধীন ভবনটি অবিলম্বে ভেঙ্গে দিয়ে প্লট মালিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজউকের কাছে আবেদন করেছেন পার্শ্ববর্তী বাড়ীর মালিকগণ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভাষানটেকে আর.এস- ১৩৯০ (অংশ) দাগে প্লটের মালিক মো: বদিউজ্জামান। তিনি সরকারী ইমারত বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে রাজউকের নকশার অনুমোদন ছাড়াই বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। নির্মাণাধীন এই ভবনে অত্যন্ত নিম্নমানের ইট, বালু, রড ও খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। এভাবেই গড়ে উঠছে একটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। এই ভবনটি যে কোন সময় ধসে কিংবা পার্শ্ববর্তী বাড়ীর উপর হেলে পড়তে পারে। এতে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবার সমূহ আশংকা দেখা দিয়েছে।
অনুমোদনহীন দুর্বলভিত্তির উপর একের পর এক ছাদ ঢালাই হচ্ছে দেখে আশপাশের বাড়ীর শতাধিক পরিবার চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। প্লটটিতে টিনশেড বাড়ী নির্মাণ করার লক্ষ্যে প্রথমে ইটের গাঁথুনী দিয়ে নিচ থেকে কাজ শুরু করা হয়েছে। প্লট মালিকের নির্দেশে পরে ছাদ দেয়ার জন্য ইটের গাঁথুনীর ফাঁকে ফাঁকে বেজবিহীন অপরিকল্পিত কলাম দাড় করানো হয়। তরিঘড়ি করে এই দুর্বল ভিত্তির উপর প্রথম ছাদ ঢালাই দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ছাদ করার প্রক্রিয়াও প্রায় সম্পন্ন।
জানা যায়, ভবনটি নির্মাণের জন্য রাজউকের কোন নকশা অনুমোদন নেই। প্রথম শ্রেণীর প্রকৌশলীর হাতের স্ট্রাকচার ডিজাইনও নেই। প্লট মালিক বদিউজ্জামান নিজের ইচ্ছায় যখন যা মনে করেন, সেভাবেই নির্মাণ কাজ করে চলেছে। রাজউকের মহাখালী জোন-৩ এর ইমারত পরিদর্শক মো: সিরাজুল ইসলাম জানান, নকশা অনুমোদনহীন ভাষানটেকের এই ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতোমধ্যে ভবন মালিককে অবৈধ স্থাপনা তৈরীর বিষয়ে ২টি নোটিশ দিয়েছি। ভাষানটেক থানা পুলিশকে নোটিশের কপি দিয়েছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। পর্যায়ক্রমে ৩টি নোটিশ দেবার পর ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে রাজউক।
ভাষানটেকের বেশ ক’জন বাড়ীর মালিক জানায়, বাংলাদেশ এমনিতেই অতিমাত্রার ভূকম্পন প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এমন অবস্থায় রাজউকের অনুমোদন ব্যতিরেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ স্থাপনা তৈরী করার মানে হলো, ভাড়াটেদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা। কারণ এটি নির্মাণ করা হচ্ছে শুধুমাত্র ভাড়া দেবার জন্য। মালিক এবাড়িতে বসবাস করবে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাড়ির মালিক বদিউজ্জামান ইনকিলাবকে বলেন, রাজউক আমাকে নোটিশ দিয়েছে সত্য। আমি নকশার অনুমোদন পাইনি তাই বসবাসের জন্য দু’তলার একটি বাড়ি নির্মাণ করছি। তিনি আরো বলেন, এটি রাস্তার ওপরে একটি বাড়ি, এখানে হাজার হাজার এধরনের বাড়ি রয়েছে। কারো রাজউকের অনুমতি নেই। তিনি আরে বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার কোন টাকা-পয়সা নেই, বসবাসের জন্য দু’তলার একটি বাড়ি করছি, এখানে আর কোন কাজ হচ্ছে না। কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাজউক অনুমোদন ছাড়াই ভাষানটেকে ভবন নির্মাণ জনমনে আতঙ্ক
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ