পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা। তিনি কিছু সৃষ্টিকে অন্যান্য সৃষ্টির ওপর বিশেষ মর্যাদা প্রদান করেছেন এবং বিশেষভাবে পছন্দ করেছেন। তেমনি বছরের কোন কোন বিশেষ দিবসকে অন্যান্য দিবসের ওপর প্রাধান্য দিয়েছেন। বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন বস্তু বা বিষয়সমূহের মধ্যে আল্লাহ তা‘আলা রমজান মাস এবং রমজান মাসের শেষ দশকের রাতগুলোকে (এর মধ্যে লাইলাতুল কদর বিদ্যমান থাকায়) বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন করেছেন। অনুরূপ যিলহজ মাসকেও বিশেষ করে এর প্রথম দশ দিনকে অনেক ফযীলতপূর্ণ করেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন: ‘কসম ভোর বেলার, কসম দশ রাতের।’ সূরা আল-ফাজর আয়াত: ১,২
আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.)সহ অনেক মুফাস্সির ‘ওয়া লায়ালিন আশ্র্’ (কসম দশ রাতের) আয়াতের অর্থ করেছেন যিলহজ্জ মাসের দশ দিন। আল্লামা ইবনু কাসীর (রহ.) এই অর্থটিকেই সঠিক বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাফসীর ইবনু কাসীর- ৪/৫০৫
এখানে একটি বিষয় সহজেই বোধগম্য যে, কোন বিষয়ে আল্লাহর কসম করার অর্থই হচ্ছে ঐ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা। এখানেও আল্লাহ তা‘আলা কসমের মাধ্যমে যিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের গুরুত্ব আরোপ করেছেন। এর গুরুত্ব সম্পর্কে সূরা হাজ্জে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘যেন তারা নিজেদের কল্যাণের স্থানসমূহে হাজির হতে পারে এবং তাদের নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।’ সূরা আল-হাজ্জ আয়াত: ২৮
সূরা হজ্জে ‘নির্দিষ্ট দিনসমূহ’-এর ব্যাখ্যায় ইবনু আব্বাস (রা.) যিলহজ্জ মাসের দশ দিনকেই বলেছেন। যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন ফযীলতপূর্ণ দিনসমূহের অন্যতম দিন। এ মর্মে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর বাণী: ‘আল্লাহর নিকট যিলহজ্জ মাসের দশ দিনের চেয়ে অতি মর্যাদাবান এবং প্রিয়দিন অন্য কোনটি নেই। সুতরাং এই দিনগুলোতে তোমরা বেশি করে তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) তাকবীর (আল্লাহু আকবার) ও তাহ্মীদ (আলহামদু লিল্লাহ) পাঠ কর।’ মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং-৫৪৪৬
যিলহজ্জের প্রথম দশদিনের মধ্যে আরাফার এবং কুরবানীর দিবস রয়েছে বলে এর ফযীলত এত বেশি। এ ব্যাপ্যারে হাদীসে এসেছে, ‘দিনসমূহের মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বশ্রেষ্ঠ দিন নহর করার (কুরবানী করার দিন), অতঃপর এর পরবর্তী দিন। সুনানে আবূ দাউদ হা: ১৭৬৫
অনুরূপ আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘আরাফার দিবসের তুলনায় এমন কোন দিন নেই, যেদিন আল্লাহ তা‘আলা সর্বাধিক সংখ্যক লোককে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেন। আল্লাহ নিকটবর্তী হন, অতঃপর বান্দাদের সম্পর্কে ফেরেশতাদের সামনে গৌরব করে বলেন: তারা কী উদ্দেশ্য সমাবেত হয়েছে, অথবা তারা কী চায়?’ -সহীহ মুসলিম হা: ১৩৪৮
যিলহজ্জের প্রথম দশ দিনের আমল অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি ফযিলতপূর্ণ হওয়ার ব্যাপারে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর বাণী :
‘এমন কোন দিন নেই, যে দিনসমূহের সৎকাজ আল্লাহ তা‘আলার নিকট যিলহজ্জ মাসের এই দশ দিনের (প্রথম দশ দিনের) সৎকাজ অপেক্ষা বেশি প্রিয়। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ তা‘আলার পথে জিহাদ করাও কি (এত প্রিয়) নয়? রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: আল্লাহ তা‘আলার পথে জিহাদও তার চেয়ে বেশি প্রিয় নয়। তবে জানমাল নিয়ে যদি কোন লোক আল্লাহ তা‘আলার পথে জিহাদে বের হয় এবং এ দু’টির কোনটিই নিয়ে ফিরে আসতে না পারে তার কথা (অর্থাৎ, সে শহীদের মর্যাদা পাবে) ভিন্ন।’ তিরমিযী হা: ৭৫৭
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।