বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২০১৯-২০ অর্থ বছরের জন্য ৫শত ৪৮ কোটি ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৪৩৭ টাকা বাজেট ঘোষনা করেছেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। একই সাথে তিনি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটও ঘোষনা করেন।
২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বাজেটের আকার ছিলো ৪শত ৪৩ কোটি ৩৯ লাখ ৯৮ হাজার ২৫৫ টাকা। তবে বুধবার সংশোধিত বাজেটে তা ১২৫ কোটি ৩৩ লাখ ৮৯ হাজার ৬৪৫ টাকা বলে জানান হয়।
বুধবার বিকালে নগর ভবনের সামনে উন্মুক্ত বাজেট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ’র পক্ষে এক নম্বর প্যানেল মেয়র গাজী নঈমুল হোসেন লিটু প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষনা করেন। সিটি নির্বাচনের এক বছর পরে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র এটাই প্রথম বাজেট। তবে তা অর্থ বছর শুরুর এক মাস পড়ে।
বাজেট ঘোষনা অনুষ্ঠানে বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মইদুল ইসলাম, সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস, জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান, মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনারÑসদর হাবিবুর রহমান খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর ও মেয়র পতিœ লিপি আব্দুল্লাহ ছাড়াও জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ সহ সাধারণ নগরবাসী উপস্থিত ছিলেন।
বাজেট ঘোষনার পূর্বে মেয়রের পক্ষে নগরীর উন্নয়ন, ভবিষ্যৎ মহা পরিকল্পনা ও আধুনিক বরিশাল সিটি গড়ে তোলার লক্ষ্যে গৃহিত বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন প্যানেল মেয়র। পাশাপাশি বিগত পরিষদে নগর উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা সম্পর্কিত বিভিন্ন অনিয়ম এবং দুর্নীতির তথ্যও তুলে ধরেন তিনি।
বাজেট অনুষ্ঠানে মেয়র সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর আমি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের চতুর্থ মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহন করি। দায়িত্বভার গ্রহণের পর দীর্ঘ দিনের নগরীর পুঞ্জিভূত সমস্যা সমাধানের বাস্তবমুখী কর্মপন্থ গ্রহণ করেছি। আমার যে সকল পরিকল্পনা রয়েছে তার বাস্তবায়ন খুব একটা সহজসাধ্য নয়। প্রায় ৬ লাখ নাগরিকের অধ্যুষিত এই মহানগরীর রয়েছে হাজারও সমস্যা। আমাদের সীমিত সামর্থ্য ও সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে দিনরাত কাজ করে চলেছি।
মেয়র বলেন, বরিশালকে রাতারাতি বদলে দেয়ার দাবী আমাদের নেই। আমরা এগিয়ে যেতে চাই পরিকল্পিতভাবে এবং ক্রমান্বয়ে। আপনারা জানেন, প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার ঋণের বোঝা নিয়ে আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। ইনশাআল্লাহ বরিশালের মানুষের ভ্যাগের পরিবর্তনের জন্য আমি যে শপথ নিয়েছি, কোন অপশক্তি আমাকে রুখতে পারবে না। আপরাই আমার শক্তি, আপনারা আমার পাশে থাকলে আমরাই গড়বো আগামীর বরিশাল।
এসময় মেয়র বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পূর্বের বিভিন্ন তথ্য উপাথ্য এবং অনিয়মের বিষয় তুলে ধরে বলেন, ২০১৩ থেকে ২০১৬ অর্থ বছরে অডিট আপত্তি আছে ১৩৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং ভ্যাট ও আয়কর পরিশোধ না করায় সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাছাড়া সিটি কর্পোরেশনের সেবাকে ডিজিটাল না করায় দুর্নীতি ও অনিয়ম বেড়ে চলছিলো। এসময় মোট ২৬টি অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরেন মেয়র।
তাছাড়া দায়িত্ব গ্রহনের পরে গত ৯ মাসে বর্তমান মেয়র সহ সিটি পরিষদের বিভিন্ন অর্জন ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তবে অধিকাংশ পরিকল্পনাই বিগত মেয়রদের আমল থেকেই বাজেটে অন্তর্ভক্ত হয়ে আসছে। যার মধ্যে বরিশাল নগর ভবন নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিণালে স্থানান্তর, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল গড়িয়ার পাড়ে স্থানান্তর, ট্রাক টার্মিনাল নির্মান, নগরীতে ফুট ওভার ব্রিজ নির্মান, মার্কেট নির্মান সহ আরো বেশ কিছু প্রকল্পের কথা জানান মেয়র। দায়িত্ব গ্রহনের পরে মহা পরিকল্পনার ফলে গত ৯ মাসে বিসিসি’র রাজস্ব আয় বেড়ে ব্যয় কমেছে বলে জানান তিনি। ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত বিসিসি’র রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ কোটি ৭৩ লক্ষ ৫২ হাজার ৪৪৯ টাকা। এছাড়া ব্যয় কমেছে ২ কোটি ১৫ লাখ ১৬ হাজার ৮৬২ টাকা।
নগরীর ৪৩টি খান পুনঃখনন, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ৫টি খালের পাড় সংরক্ষণ, ওয়াকওয়ে, বাই-সাইকেল লেন ও লিনিয়ার পার্ক নির্মাণ, জেলখালের পাড় ধরে “নথুল্লাবাদ-মড়কখোলা-কাউনিয়া প্রধান সড়ক-নাজিরের পুল, পোর্ট রোড পর্যন্ত বাইপাস সড়ক নির্মান, জেলখালের উপর ৪টি আধুনিক ব্রীজ নির্মান, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার স্থানান্তর করে সেখানে মার্কেট নির্মান সহ বিভিন্ন মেয়াদে উন্নয়ন প্রকল্প তুলে ধরেন মেয়র।
সন্ধা পর্যন্ত মেয়রের এ উন্মুক্ত বাজেট অধিবেশন চলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।