Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঘুষের ৮০ লাখ টাকাসহ পার্থ গোপাল গ্রেফতার, সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড়

আবদুল মোমিন | প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০১৯, ৯:৪৮ এএম

দুর্নীতির অভিযোগে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) পার্থ গোপাল বণিক ঘুষের ৮০ লাখ টাকাসহ গ্রেফতারের ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। আজ রোববার (২৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর ভূতের গলি এলাকায় পার্থর বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় তার ব্যবহার করা একটি প্রাইভেট কারও জব্দ করা হয়।

পার্থর গ্রেফতার ও ঘুষের ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের সংবাদ প্রকাশের পরপরেই ফেসবুকে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। এত বড় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে কিভাবে কারাগারের উপমহাপরিদর্শক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। চাকরিচ্যুতির পাশাপাশি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নেটিজেনরা।

সোহেল খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন, আপনি আপনার দপ্তর থেকে শুরু করে সাংসদ ও দেশের ভিতরে
সরকারী, বেসরকারী, আধাসরকারী প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পর্যায় যে সকল সংখ্যালঘুরা কর্মরত আছেন তাদের সবকিছু নজরদারিতে রাখুন। তারা দেশের টাকা কোথায় রাখে, তারা দেশের বাহিরে কার কার সাথে সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাসঁ করছে কিনা তাও খতিয়ে দেখার আহবান
জানাচ্ছি।’’

পলাশ আল মামুন লিখেছেন, ‘‘দেশ ও সমাজ থেকে ঘুষখোর,দুর্নীতিবাজ,ক্ষমতা অপব্যাবহারকারী,সুদখোর- এই সব মানুষের জন্য দ্রুত বিচার আইনে শাস্তি প্রদান নিশ্চিত করুন। নিজের স্বার্থ না দেখে দেশ ও মানুষের জন্য অতিদ্রুত বিচারের ব্যবস্হা নিশ্চিত করুন।তাহলে আমি বা আমরা বলতে পারব,আমাকে ন্যায়বিচার দাও,আমি বা আমরা এ দেশকে সোনার বাংলা বানিয়ে দেব। যে স্বপ্ন দেখেছেন আমাদের মহান নেতা শেখ মুজিবুর রহমান।’’

‘‘প্রত্যেকটা পুলিশের কর্মীকে যদি তল্লাশি করা হয় তবে এই রকম দুর্নীতি অবশ্যই খুঁজে পাওয়া যাবে। শুধু এক গোপাল নয় আরো অনেক গোপালের পিছনে লুকায়িত আছে’’ মন্তব্য মো. সোমান মিয়ার।

উপহাস করে ইত্তেহাদুল হক লিখেছেন, ‘‘মনে হয় বনিক বাবু সরল বিশ্বাসে এ টাকা আয় করেছেন। দেখার বিষয় বনিক বাবুর সাথে প্রিয়া সাহার কোন যোগাযোগ রয়েছে কিনা।’’

ফেসবুক ব্যবহারকারী আহমেদ তানবির লিখেছেন, ‘‘‘শুধু এক গোপালকে ধরলে হবেনা। বাংলাদেশের প্রতিটা অফিসে গোপালে ভরপুর। বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ গোপাল আছে। ওদেরকেও ধরে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হোক।’’

শাখাওয়াত মিঠু শঙ্কা প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘‘দেশটা তো তাদের হাতের মুঠোয়, সব জায়গায় তারা এই সরকারের বিশ্বস্ত হচ্ছে উনারা, যত গুরুত্বপূর্ণ পদ সব জায়গাতেই উনারা,কোন দিন দেশটা একক উনাদের হয়ে যায় সেটি দেখার বিষয়।’’

মুহাম্মদ নিশাত উদ্দিন আল-ক্বাদেরি লিখেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ছিল, বেতন বাড়িয়েছি ঘুষ খাবে না,সরকারী কর্মকর্তাগণ। কিন্তু কুকুরের লেজ যেমন সোজা হয় না কথাটি সত্য। তেমনি ঘুষখোররা যে, ঘুষ না খেয়ে থাকবে না, সেটিও ভাবাটা ঠিক নয়।’’

নাজির আহমেদের মন্তব্য, ‘‘বাংলাদেশ সরকারের হিন্দু সম্প্রদায়ের কর্মচারী ও কর্মকর্তারাই ঘুষের বিনিময়ে কাজ করে। তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার, বাংলাদেশের অর্থ অবৈধভাবেই হোক আর যে উপায়েই হোক সংগ্রহ করে ইন্ডিয়ায় পুঁজি করা।’’

পার্থ গোপালের শাস্তির দাবি জানিয়ে রুহুল আমিন ফাহাদ লিখেছেন, ‘‘দেশে আইন আছে বিচার আছে বলেই আজকে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এমপি মন্ত্রী সহ সরকারী দলের রাজনৈতিক নেতারাও গ্রেফতার হচ্ছে। ৫০ বছরের জেল চাই দাদা বাবুর।’’

‘‘গোপালরা না বেস্ট দেশপ্রমী? ওদের পদগুলোর দিকে নজর দেয়া দরকার! এ অর্থ নির্ঘাত ওপারে চলে যেত! এ কারনেই ওপারের রেমিটেন্সের সিংহভাগ বাংলাদেশ থেকে আশে!’’ এমন মন্তব্য করেছেন গোলাম রাব্বানি।

সুকুমার বিশ্বাস লিখেছেন, ‘‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেশবাসীর পক্ষ থেকে অনুরোধ করতে চাই এই বলে যে আপনি সরকারি সকল সেক্টরের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারিদের সনাক্ত করে তাদের একসাথে বিদায় করে দেশবাসীকে দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের হাত থেকে রেহাই দিয়ে দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করুন...আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।’’

মো বেলায়েত হোসাইন সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘‘এদের কোন ধর্ম আছে, এরা নিজেকেই নিজে ধোকা দিচ্ছে, আর অন্যের জন্য কিভাবে হবে নীতিবান..! অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ পদে এদের কে দেওয়া হয়েছে।’’

উল্লেখ্য, রোববার সকালে সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুপুরে তাকে নিয়ে ঘুষসহ দুর্নীতির মাধ্যমে আয় করা টাকা উদ্ধারে অভিযানে বের হয় দুদক টিম। ধানমন্ডির নর্থ রোডের (ভূতের গলি) ২৭-২৮/১ নম্বর বাসার বি/৬ নম্বর ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় তারা। দুদকের দাবি, ফ্ল্যাটটির মালিক পার্থ। তার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরাও সেখানে বসবাস করেন।

তবে পার্থর দাবি, ফ্ল্যাটটি তার শাশুড়ি মঞ্জু সাহার। দুদক টিম পার্থর ব্যবহার করা একটি প্রাইভেট কারও জব্দ করেছে। প্রাইভেট কারটি পার্থর বন্ধু শাহিনের বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।



 

Show all comments
  • বিভাস বেপারী ২৯ জুলাই, ২০১৯, ৮:৫৫ পিএম says : 0
    একজন দুর্নিতীবাজ কর্মকর্তা সম্পর্কে সমালোচনা করবে এটাই স্বাভাবিক। সমগ্র হিন্দু সমাজকে নিয়ে কটুক্তি করবে এটা ঠিক নয়। এই তো সেদিন দুদক পরিচালক,পুলিশ কর্মকর্তা দুর্নিতির দায়ে গ্রেপতার হলো। তাদেরকে নিয়ে তো মিডিয়ায় ঝড় তোলেনি। হালকা ঢেউ উঠেছিল মাত্র। হিন্দুদের টাকা ইন্ডিয়া চলে যায় কিন্তু মুসলমানদের টাকা কোথায় যায়? এক'শ অপরাধ হলে তার ভিতর একজন হিন্দু অপরাধী। হতেই পারে, টাকার কাছে ফেরেস্তাও হার মানে। কট্টরপন্থি লোকগুলো এমন ভাবে আক্রমন করে যেন হিন্দুরা এ দেশের শরনার্থী। হিন্দুদের নিয়ে যদি এত জ্বলাধরে তাহলে বিনিময় চুক্তি করে ভারতে যাওয়ার ব্যবস্থা কর, তোমরাও বাচো আমরাও বাঁচি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ