Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মেঘনায় বিলীন অর্ধশত বাড়িঘর

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০১৯, ১২:০১ এএম

অব্যাহত ভাঙনের ধারাবাহিকতায় এবারও নরসিংদীর মেঘনার করাল গ্রাসে নিপতিত হয়েছে রায়পুরার চর মধুয়া। গত কয়েক দিনের ভাঙনে চরমধুয়া ও বীরচরমধুয়া গ্রামের অর্ধশত বাড়িঘর মেঘনার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে দুই শত নারী-পুরুষ ও শিশু। ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে কয়েকটি স্কুল মাদরাসা, গোরস্থানসহ চর মধুয়া ও বীরচরমধুয়া গ্রামের কমবেশি ২৫ হাজার মানুষ। বছরের পর বছর ধরে মেঘনার ভাঙনে দুটি গ্রামের মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভাঙন ঠেকাতে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অন্তর্দ্ব›েদ্বর কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বারবার আশ্বাস দিয়েও কোন বেড়িবাধ প্রকল্প প্রণয়ন করতে পারেননি। যার ফলে গত কয়েক বছরে চরমধুয়া ও বীরচরমধুয়া গ্রামের অন্তত: ৫ শত পরিবার কয়েক হাজার বাড়ি ঘর মেঘনার অতল গহ্বারে তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচশত পরিবারের আড়াই সহস্রাধিক নারী পুরুষ ও শিশু আশ্রয়হীন অবস্থায় গ্রাম ও গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ভাসমান জীবন যাপন করছে।

ভাঙন কবলিত এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, চরমধুয়ায় মেঘনার ভাঙনের ধারাটি একটু ভিন্ন প্রকৃতির। সেখানে চলমান পানির স্রোতের তোড়ে ভাঙন ঘটছে না। মেঘনার ঘূর্ণায়মান তলস্রোত গ্রাম দুটি নিচে থেকে মাটি সরিয়ে ফেলে। এরপর হঠাৎ ৫/১০টি ভিটি বাড়িঘরসহ হঠাৎ মেঘনার পানিতে ধসে যায়।

গ্রামের মানুষ জানিয়েছেন, ভৈরব থেকে মূল মেঘনাটি প্রবাহিত হয়ে চরমধুয়া গ্রামের পাশ দিয়ে যাবার সময় মূল স্রোতধারা থেকে কমবেশি ২০ ভাগ বিচ্ছিন্ন হয়ে স্থানীয় আতশ আলীর বাজারের নিকট দিয়ে ছোট্ট একটি শাখায় বিভক্ত হয়ে তা হাইরমারা আমিরগঞ্জ হয়ে চরআড়ালিয়ার রাজনগর দিয়ে নরসিংদীর মেঘনায় পতিত হয়েছে। গ্রামের মানুষ আশঙ্কা করছেন, ভাঙন প্রতিরোধ করতে না পারলে আগামী কয়েক বছরে চরমধুয়া ও বীরচরমধুয়া গ্রাম রায়পুরার মানচিত্র থেকে চিরতরে হারিয়ে যাবে।

চর মধুয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আহসান শিকদার জানান, ভাঙন প্রতিরোধ এর জন্য তারা এলাকায় মানববন্ধন করেছেন। বারবার বিভিন্ন পর্যায়ে আবেদন নিবেদন করেছেন। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম শিকদার জানিয়েছেন, মেঘনার ভাঙন প্রতিরোধে বহু বছর ধরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ অলিউল্লাহ স¤প্রতি ভাঙনস্থল পরিদর্শন করে এই মর্মে আশ্বাস দিয়েছেন যে, তারা ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। সেখান থেকে অনুমোদন হয়ে আসলে তারা কাজ শুরু করবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেঘনায় বিলীন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ