Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গার্মেন্ট শ্রমিককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা

রামপুরায় তুলকালাম, সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, শ্রমিক-পুলিশ আহত, গ্রেফতার ৩

রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরী পাড়ায় একটি গার্মেন্টস কারখানায় এক শ্রমিককে পোশাক চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতের নাম দেলোয়ার হোসেন (২৫)। গত রোববার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। দেলোয়ার স্থানীয় ইজি ফ্যাশনস নামের ওই গার্মেন্টে কারখানার কাটিং সহকারী ছিলেন। এ ঘটনায় নিহতের সহকর্মী ও ওই কারখানার শ্রমিকরা গতকাল রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ ও বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করেছে। পুলিশ হত্যাকাÐে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) আনিসুর রহমান বলেন, গত বুধবার কারখানা ছুটি হওয়ার পরও দেলোয়ার বের না হয়ে কারখানার ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন। মাঝরাতে তিনি ৬তলা থেকে কিছু গেঞ্জি জানালা দিয়ে বাইরে ফেললে বাইরে থেকে একজন তা দেখে নিরাপত্তাকর্মীদের খবর দেন। পরে দারোয়ান কারখানার ম্যানেজারকে খবর দেয়। তিন-চার জন সিকিউরিটি গার্ডকে নিয়ে অফিস সহকারী ইয়াসিন ৬ষ্ঠ তলায় গিয়ে লুকিয়ে থাকা দেলোয়ারকে খুঁজে বের করে। তারা দেলোয়ারকে ধরার পর বেদম পিটুনি দিয়ে রাতে গার্মেন্টের ভেতরেই আটকে রাখে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে শ্রমিকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ দেলোয়ারকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে দেলোয়ারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বিকেল পৌনে ৩টার দিকে রামপুরার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে। তারা কিছু যানবাহনও ভাঙচুর করেন। এতে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ধাওয়া দিলে পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সড়ক অবরোধের একপর্যায়ে বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে শ্রমিকরা এক হয়ে ইজি গার্মেন্টসে হামলার প্রস্তুতি নেয়। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে হাতিরঝিল থানার ওসি ও তেজগাঁও বিভাগের একজন সহকারী কমিশনার (এসি) আহত হন। পরে পুলিশ শ্রমিকদের লাঠিচার্জ করে, পাশাপাশি গুলিও ছোড়ে। এতে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

বিক্ষুব্ধ পোশাকশ্রমিকেরা দাবি করেন, নিহত দেলোয়ার তাদের কারখানায় কাটিং সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। তারা তাকে ভালো করেই চিনেন। সে শার্ট কিংবা গেঞ্জি চুরি করার মতো লোক না। আর চুরি করলেও দেশে পুলিশ আছে, আইন আছে। কিন্তু তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো কেন? তাদের অভিযোগ, চুরি নয়; অন্য কোনো উদ্দেশ্যে দেলোয়ারকে হত্যা করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ বিচার দাবি করেন তারা।
ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার (রামপুরা) হুমায়ুন কবীর বলেন, শ্রমিকদের বিক্ষোভে রামপুরা সড়কের দুই দিকেই যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে আশপাশে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে যান চলাচল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন বলেন, শ্রমিককে হত্যার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা ওই গার্মেন্টের সঙ্গে জড়িত না হলেও দেলোয়ারকে পিটিয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে তাদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হয়নি পুলিশ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিক্ষোভ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ