পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
এক মাসের ব্যবধানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন কমেছে। চলতি বছরের জুন মাসে দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন হয়েছে ৩১ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। যা মে মাসের চেয়ে ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ কম। মে মাসে লেনদেন হয়েছিল ৪২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
উৎসবকে কেন্দ্র করে মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে টাকার লেনদেন করে। যে কারণে ঈদের আগে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেন বেশি হয়। এ কারণে মে মাসে লেনদেন বেশি হয়েছিল। তাই পরের মাস জুনে লেনদেন কিছুটা কমেছে। তবে এটা স্বাভাবিক। সামনে কোরবানির ঈদ। এ সময় আবারও লেনদেন বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুন মাসে মোবাইল ফাইন্যন্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে লেনদেন কমলেও গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, টানা তিন মাস একবারও লেনদেন না করলে তাদের হিসাবকে নিস্ক্রিয় হিসাব বলে গণ্য করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। সেই হিসাবে জুন শেষে সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার। তথ্য অনুযায়ী, এমএফএসে গত জুনে প্রতিদিন গড়ে ৬৬ লাখ ৫১ হাজার লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে আদান-প্রদান হয়েছে এক হাজার ৫৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। জুনে মোট লেনদেন হয়েছে ৩১ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা; যা আগের মাসের চেয়ে ১০ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা বা ২৪ দশমিক নয় শতাংশ কম। গত মে মাসে লেনদেন হয়েছিল ৪২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে নয় লাখ ৩৪ হাজার ১৯৫।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেয়া হচ্ছে। তবে জুনে রেমিট্যান্স ছাড়া সব ধরনের সেবায় লেনদেন কমেছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, আলোচিত মাসজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে টাকা জমা পড়েছে ১১ হাজার ৭২ কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে ৩২ শতাংশ কম। উত্তোলন করা হয়েছে ১১ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা; যা মে মাসের তুলনায় সাড়ে ২৪ শতাংশ কম। এমএফএসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে সাত হাজার ৬৪ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ প্রায় ৫৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩৭ কোটি টাকায়। আগের মাসে যা ছিল এক হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৪৪৫ কোটি টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৩৮৬ কোটি টাকা। সরকারি পরিশোধ ১৩৪ কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৫৮৪ কোটি টাকা।
২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিংসেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিংসেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিংসেবার বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমএফএস লেনদেনের সর্বশেষ ১৯ মে’র নির্দেশনা অনুযায়ী, একজন গ্রাহক তার অ্যাকাউন্টে দিনে পাঁচ বারে ৩০ হাজার টাকা ক্যাশ-ইন বা জমা করতে পারবেন। মাসে ২৫ বারে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা ক্যাশ-ইন করা যায়। আগে প্রতিদিন দুই বারে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা জমা করতে পারতেন একজন গ্রাহক। মাসে ২০ বারে এক লাখ টাকা ক্যাশ-ইন করা যেত।
চলতি বছরের জুন শেষে এমএফএসে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা সাত কোটি ২০ লাখ ৫৪ হাজারে পৌঁছেছে। তবে মে মাসে এই সংখ্যা ছিল সাত কোটি চার লাখ ৫৬ হাজার। অর্থাৎ এক মাসে গ্রাহক বেড়েছে দুই দশমিক তিন শতাংশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।