Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আশ্বাস মানেনি শিক্ষার্থীরা, দ্বিতীয় দিনের মত অচল ঢাবি

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০১৯, ১১:০৯ এএম

অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে সাত কলেজ সমস্যার সমাধান হবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেয়া হলেও তা মেনে নেয়নি শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মত কার্যত অচল হয়ে গেছে ঢাবি। সোমবার সকাল ছয়টা থেকে সাড়ে সাতটার মধ্যে সব অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। ফলে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়নি।

২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীদের ৪দফা দাবির মধ্যে আছে, যেকোনো মূল্যে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা, দুই মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষার ফলাফল দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সকল ধরণের বহিরাগত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও রিকশা ভাড়া নির্ধারণ।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, বাণিজ্য অনুষদ, রেজিস্ট্রার বিল্ডিং, কাজী মোতাহার হোসেন ভবন, মোকাররম ভবন, কার্জন হলসহ সকল অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। তালা লাগনোর পর তা যাতে কেউ খুলতে না পারে সেজন্য তালায় চাবি প্রবেশের জায়গায় প্রথমে মাটি দিয়ে পরে সুপার গ্লু দিয়ে আটকিয়ে দেয়া হয়েছে। কেউ যেন তালা না খুলে সেটা দেখার জন্য বিভিন্ন ভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন গ্রুপ অবস্থান নিয়েছে। তালাবদ্ধ এসব ভবনে ফেস্টুন টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, ‘লাগাও তালা, বাঁচাও ঢাবি’, ঝুলবে তালা ঝুলবে, আন্দোলন চলবে।

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তারেক আদনান বলেন, অধিভুক্তি বাতিলের দাবি যতদিন না মানা হয় ততদিন সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকবে এবং ভবনগুলো তালাবদ্ধ থাকবে।

এদিকে এদিন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কর্মীদের বাকবিতন্ডা হতে দেখা গেছে। সকাল ১০ টার দিকে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আহ্বায়ক অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন ও ঢাবি শাখা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল তাদের কয়েকজন কয়েকজন নেতা-কর্মীসহ এসে সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বাঁধা ও হুমকি দেন। এতে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পরেন।

আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, 'আমরা আন্দোলন করার এক পর্যায়ে তারা এসে সামাজিক বিজ্ঞান ভবনে প্রবেশ করতে চান। আমরা তালা খুলতে না দিলে আমিনুল ইসলাম বুলবুল আমাদের 'ছেলে-পেলে আনবো নাকি' বলে হুমকি দেন।'

সরেজমিনে দেখা যায়, আমিনুল ইসলাম বুলবুল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি দিলে তারা উত্তেজিত হয়ে পাল্টা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা - 'নির্লজ্জ প্রশাসন, ধিক্কার-ধিক্কার', 'অ্যাকশন-অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন', 'ভূয়া-ভূয়া' বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

এসময়, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের 'শিবির' বলে সম্বোধন করলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পাল্টা তাকে 'জামাত', 'আল বদর' বলে সম্বোধন করেন। শিক্ষার্থীরা 'জ' তে 'জামাল', 'জ' তে 'জামাত', 'জ' তে জামাল, 'ভূয়া-ভূয়া' 'সাত কলেজ- জামাল ভাই' বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

প্রসঙ্গত, সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
আন্দোলন করে এলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো কার্যকরী সিদ্ধান্ত নেয়নি। এতে শিক্ষার্থীরা গতকাল রোববার থেকে লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় দিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে তালা মেরে দিয়ে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। এতে ক্লাস-পরীক্ষা সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরণের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ