পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে আমরা সরকার গঠন করে যে জায়গাটাতে নিয়ে আসতে পেরেছি, সেখানে মূল শক্তিটাই ছিল আমাদের দেশের জনগণ ও তাদের সমর্থন। যে কারণে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পেরেছে। তার জন্য সব থেকে বেশি প্রয়োজন সাংগঠনিকভাবে আমাদের দলকে শক্তিশালী করে জনমত সৃষ্টি করা। এ ছাড়া চলমান বন্যায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল বিকেলে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন। সূচনা বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভা শুরু হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আমাদের একটা লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছি, কিন্তু উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যে স্বীকৃতি পেয়েছি সেটাকে আমাদের ধরে রাখা আর এখানে রাজনৈতিক শক্তিটা খুব বেশি প্রয়োজন, সংগঠন প্রয়োজন, জনগণের সমর্থন প্রয়োজন। আমি মনে করি, ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে ফিরে আসার পর এ পর্যন্ত যেভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয়েছে এবং আজকে বাংলাদেশে আমরা সরকার গঠন করে যে জায়গাটাতে নিয়ে আসতে পেরেছি, সেখানে মূল শক্তিটাই ছিল আমাদের দেশের জনগণ ও তাদের সমর্থন এবং অবশ্যই মহান আল্লাহর একটা রহমত ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের দেশের উন্নয়নের ধারাটা কিন্তু ধীরে ধীরে অব্যাহত রেখেছি। এই ১০ বছরে আমরা কিন্তু হোঁচট খাইনি কিংবা পিছিয়ে যাইনি, আবার হঠাৎ করেও লাফ দেইনি। আমরা খুব স্থিরভাবে দেশটাকে ধাপে ধাপে এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। আমরা আরো সামনে যেতে চাই। বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ গড়তে চাই। সে পরিকল্পনা আমাদের আছে।
উন্নয়নের এই যাত্রাপথের নানা বাধা-বিপত্তির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এই চলার পথ কিন্তু খুব সহজ ছিল না। প্রতি পদে পদে বাধা, অগ্নিসন্ত্রাস, খুন, নির্যাতন অনেক কিছু সহ্য করতে হয়েছে। তারপরও আমরা কিন্তু এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি।
উন্নয়নে সফলতা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা। সরকার গঠনের আগে আওয়ামী লীগের কিছু পরিকল্পনা ছিল দেশকে নিয়ে। সেই কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের নিজেদের একটা চিন্তাভাবনা, পরিকল্পনা ছিল। আমরা সরকারে এলে কী করব? কোথায় যাবো? সেগুলোর সবকিছু মোটামুটি একটা তৈরি করা ছিল বলেই আমরা সরকারে আসার পর আমাদের কাজগুলো করতে পেরেছি। যার কারণে দেশটা আজকে এত দূরে আনতে পেরেছি। আগামী দিনে দেশকে আমরা কোথায় নিয়ে যাবো; সে পরিকল্পনাও আমাদের আছে। সেটা ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা খুব বড় বড় উন্নত দেশের মতো উন্নয়ন হয়তো করতে পারব না। কিন্তু প্রতিটি মানুষেই তার জীবনটাকে অর্থবহ করবে, দারিদ্র্যের হাত থেকে তারা মুক্তি পাবে, তারা সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে। তাদের জীবনের যে লক্ষ্যগুলো তা পূরণ করে অন্তত সেভাবে আমাদের দেশটাকে গড়ে তুলতে চাই। এই বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে, যেটা জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল।
ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সাংগঠনিকভাবে দলকে শক্তিশালী করা, জনমত সৃষ্টি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা শেখ হাসিনা। এজন্য দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের সক্রিয় হওয়ার তাগিদ দেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, উপদেষ্টারা আমাদের ‘থিঙ্কট্যাঙ্কের’ মতো। আপনাদের সকলকে সক্রিয় হতে হবে। আমাদের বিভিন্ন উপ-কমিটি করা আছে। আপনারা মিটিং, সেমিনার করছেন। সেটা অব্যাহত রাখেন।
দেশের অগ্রগতিকে যারা অস্বীকার করেন, ভিত্তিহীন সমালোচনা করেন তাদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের দেশের কিছু লোক থাকে যাদের কোনো কিছুই ভালো লাগে না। এই যে আমরা অর্থনৈতিকভাবে যতদূরই আগাই, কিছু লোক সব সময় এটাকে ভিন্ন চোখে দেখা তাদের অভ্যাস। এরা আসলে কখনো গণতান্ত্রিক ধারাটা চায় না। গণতান্ত্রিক ধারাটা হলে আমার মনে হয় তাদের যেন দমবন্ধ ঘটে। তারা নিঃশ্বাস নিতে পারে না। এমন একটা ভাব তাদের। তাদের কাছে মনে হয় যেন অস্বাভাবিক কিছু হলে তাদের খুব দাম বাড়ে।
চলমান অতিবৃষ্টিসহ দেশের জনগণের কল্যাণে সব কিছুর দিকে সরকারের পক্ষ থেকে দৃষ্টি রাখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের সক্ষমতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন বৃষ্টি হচ্ছে, বন্যা হচ্ছে, কোথাও নদীভাঙন হতে পারে বা পাহারে ধস নামতে পারে। আমরা কিন্তু প্রতিনিয়ত সারা দেশে কোথায় কী ঘটছে খবর নিচ্ছি এবং সেখানে যার যা দায়িত্ব সেটা দেয়া আছে। তারা সঙ্গে সঙ্গে যার যা দায়িত্ব সেটা পালন করে যাচ্ছে। এখানে এতটুকু কোনো শৈথিল্য নেই। কারণ তাদের সব কাজ আমাকে সাথে সাথে মেসেজ দিয়ে জানাতে হয়।
দুর্যোগ মোকাবেলায় বিএনপি সরকারে একটি ঘটনার কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ’৯১-এর ঘূর্ণিঝড়, তখন তো বিএনপি সরকার ক্ষমতায়। তারা জানেই না এত বড় একটা ঘূর্ণিঝড় হয়েছে, এত মানুষ মারা গেছে। পার্লামেন্টে যখন আমি বললাম এতবড় ঘূর্ণিঝড় হয়েছে, এত মানুষ মারা গেছে তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া পার্লামেন্টে বলে দিলেন, ‘যত মানুষ মরার কথা ছিল তত মানুষ মরে নাই।’ আমি জিজ্ঞেস করতে বাধ্য হলাম যে, ‘কত মানুষ মরলে আপনার তত মানুষ হবে বলেন’- এ ছাড়া বলার মতো কিছু ছিল না। কারণ উনি জানেনই না। এই যে একটা দুর্যোগ এলে সিগন্যাল দেয়া হচ্ছে, কিচ্ছু জানেনই না।
এ সময় দুর্যোগ মোকাবেলায় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তুতিরও তাগিদ দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা কিন্তু অবহেলা করে রাষ্ট্র পরিচালনা করি না। আমরা মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে, মানুষের বিপদে তাদের পাশে দাঁড়ানো, মানুষের কল্যাণে ও উন্নয়নে কাজ করা; এই নীতি নিয়ে আমরা কাজ করি বলেই আজকে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।