মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢুকেছে এমন তিন-চারটি অভিন্ন নদীর ওপর বাংলাদেশ যাতে বাঁধ দিয়ে পানি আটকাতে না পারে, সেজন্য দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ঢাকার সঙ্গে অবিলম্বে বৈঠকে বসে যাতে বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হয়, কেন্দ্রকে চিঠি লিখে সেই দাবিই জানিয়েছেন তিনি।
এই নদীগুলো হলো আত্রাই, টাঙ্গন, পুনর্ভবা ও তুলাই- যার সবগুলোই তাদের গতিপথের একটা পর্যায়ে বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে আত্রাই নদীটিকে বালুরঘাট শহরের জীবনরেখা বলেও ধরা হয়।
তবে দিল্লিতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের অনেকেই মনে করছেন, তিস্তা চুক্তির বিরোধিতার ক্ষেত্রে নিজের অবস্থানকে আরও কঠোর করার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই মমতা ব্যানার্জি এই চাল দিয়েছেন।
আত্রাইসহ এই নদীগুলো থেকে বাংলাদেশ পানি টেনে নিচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এই অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে গত ৯ জুলাই। সেদিন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে নির্বাচিত বিধায়ক নর্মদাচন্দ্র রায় সভায় বলেন, ‘বর্ষার মৌসুমে এই নদীগুলোতে বাংলাদেশ নানা ধরনের স্থায়ী ও অস্থায়ী বাঁধ বসিয়ে জল সরিয়ে নিচ্ছে। পরে দেখা যাচ্ছে, বর্ষার পর চাষের জন্য এসব নদীর জল সবচেয়ে বেশি দরকার, তখন আর পশ্চিমবঙ্গের চাষীরা সেচের কোনও জলই পাচ্ছেন না।’
এর ফলে গোটা জেলায় সেচ ও পানীয় জলের সরবরাহ ভেঙে পড়ছে বলেও তিনি দাবি করেন। সাধারণত এ ধরনের ক্ষেত্রে বিধানসভায় সদস্যদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের মন্ত্রীরাই। কিন্তু বাংলাদেশ এবং পানি যেহেতু মমতা ব্যানার্জির ‘প্রিয়’ বিষয়, তাই রাজ্যের সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে থামিয়ে দিয়ে তিনি নিজেই তখন বলতে ওঠেন।
মমতা ব্যানার্জি বলেন, আত্রাই থেকে বাংলাদেশ যে অন্যায়ভাবে জল সরিয়ে নিচ্ছে সে কথা আমি বহুবার দিল্লিকে জানিয়েছি। বিষয়টি আন্তর্জাতিক কূটনীতির বিষয়, ফলে ভারত সরকারকেই এখানে দায়িত্ব নিতে হবে। ঢাকার সঙ্গে তাদের কথা বলতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিষয়টিকে তারা খুব ক্যাজুয়ালি নিচ্ছে। এভাবে নিলে চলবে না। আমি আবারও তাদের বৈঠকে বসতে তাগাদা দেবো।
যেমন কথা তেমন কাজ। বস্তুত এরপর দিনই গত ১০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের সচিবালয় থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জরুরি চিঠি পাঠানো হয়, যাতে আত্রাইসহ এই নদীগুলো নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বৈঠক আয়োজনের কথা বলা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের সেচ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, চিঠির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি স্যাটেলাইট ছবির প্রতিলিপিও জুড়ে দিয়েছে। তাদের দাবি, ওই উপগ্রহ-চিত্রে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, আত্রাইয়ের উজানে বাংলাদেশ বাঁধের মতো কাঠামো তৈরি করেছে যার মাধ্যমে নদীর পানি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৃণমূল সভাপতি ও বালুরঘাটের সাবেক এমপি অর্পিতা ঘোষও বলছিলেন, আত্রাই আসলে খুব ইউনিক একটি নদী। ভারতে উৎস হলেও তারপর সেটা বাংলাদেশে ঢুকেছে, পরে আবার ভারতে ঢুকেছে। পুরো বালুরঘাট শহর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জীবন-জীবিকা নির্ভর করে এই নদীটির ওপর।
তিনি বলেন, এখন ভারতের সঙ্গে কোনও কথা না বলেই বাংলাদেশ তাদের অংশে এই নদীটির ওপর বাঁধ বসিয়ে পানি টেনে নিচ্ছে- আমাদের আপত্তি এখানেই। ফলে বালুরঘাটে এসে আত্রাই শুকিয়ে যাচ্ছে।
দিল্লিতে কেন্দ্রীয় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা অবশ্য জানান, পশ্চিমবঙ্গের অভিযোগ নিশ্চিয়ই আমরা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করবো, বাংলাদেশের কাছেও এ ব্যাপারে জানতে চাইবো। তবে সত্যি বলতে কী, আত্রাই-পুনর্ভবার ওপর বাংলাদেশ বাঁধ দিয়েছে কিনা, দিলেও পানি সরানো হচ্ছে কিনা, সে সম্পর্কে কোনও তথ্য আমাদের হাতে নেই। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা অবশ্য মনে করেন, এটা পানি নিয়ে মমতা ব্যানার্জির আর একটি রাজনৈতিক চাল।
বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, এর আগেও তিনি তোর্সা-জলঢাকা নদীর পানি দিয়ে তিস্তাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। এখন আত্রাই-পুনর্ভবা নিয়ে তিনি আরও একবার প্রমাণ করতে চাইছেন পানি ইস্যুতে তিনি রাজ্যের স্বার্থে কোনও আপস করবেন না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানুষ তার এসব চালাকি বুঝে গেছেন। দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সূত্রেও বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক বহু বছর ধরে হয়নি। কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বৈঠক না হলে এধরনের বিষয়গুলোর মীমাংসা যে কঠিন, সেটা তারাও মেনে নিচ্ছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।