Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নবজাতককে কোলে নিয়ে ভিডিও কলে ধর্ষকের সঙ্গে কিশোরীর বিয়ে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০১৯, ৬:৫২ পিএম

'১৩ বছরের মেয়েটি নিজেই একটি শিশু, অথচ সে এখন এক সন্তানের মা'


নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ধর্ষণের পর অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে জন্ম দেওয়া সন্তানকে কোলে নিয়ে ধর্ষকের সঙ্গেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছে ১৩ বছরের এক কিশোরীকে।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেলে রূপগঞ্জ উপজেলা অডিটরিয়ামে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। কনে নাদিয়া আক্তার ভোলাব ইউনিয়নের চারিতালুক ভূঁইয়া বাড়ি এলাকার নাঈম ভূঁইয়ার মেয়ে ও বর একই এলাকার সানাউল্লাহর ছেলে মোবারক হোসেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম বিষয়টি নিশ্চিত করেন ।

কিশোরীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ৯ মাস আগে কিশোরী নাদিয়া প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে বের হলে মোবারক হোসেন তাকে নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে বিয়ের প্রলোভন এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে আরও একাধিকবার ধর্ষণ করেন। কিছুদিন পর কিশোরীর মা মেয়ের শারীরিক পরিবর্তন দেখে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে জানতে চাইলে পুরো বিষয়টি মাকে জানায় নাদিয়া। ঘটনা জানাজানি হলে মোবারক মাস দুয়েক আগে মালয়েশিয়া চলে যান। এদিকে, গত ৪ জুলাই ওই কিশোরী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়।

এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা সব ঘটনা জানিয়ে ছেলের পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তারা এড়িয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের বিচারের আশায় ৫ দিন ঘুরেও উপযুক্ত কোনো সমাধান না পেয়ে নাদিয়ার পরিবার রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগমের কাছে এসে ঘটনার বিচার দাবি করে।

ভোলাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটুর সহযোগিতায় ইউএনও বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারকে ডেকে পাঠান। তাদের মধ্যস্থতায় উভয় পরিবারের সম্মতিতে ১০ লাখ টাকা কাবিন ও নবজাতকের নামে ২ শতাংশ জমি লিখে দেওয়ার চুক্তি সাপেক্ষে প্রবাসী মোবারকের সাথে ভিডিও কলে বিয়ে সম্পন্ন হয়।

মেয়েটির পরিবার ও স্থানীয়রা বিষয়টি সুষ্ঠু এবং সামাজিকভাবে সমাধান হয়েছে জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জানা গেছে, বিয়ের শাড়ি, কাবিনের ফি ও বিভিন্ন খরচ ইউএনও বহন করেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওমর ফারুক ভূইয়া, ভোলাবো ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটু, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান আশকারী, কাজী আব্দুল মতিন প্রমুখ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম বলেন, বিষয়টি মর্মান্তিক। পিতৃপরিচয়হীন একজন সন্তানকে নিয়ে সমাজে বেঁচে থাকা কষ্টকর। ধর্ষণের ঘটনার পর দুটি পরিবারকেই সমাজচ্যুত করে দেয়া হয়েছিলো। এমনকি বিদ্যুৎ পানি ব্যতীত মানববেতর জীবনযাপন করছিলো দুই পরিবারের লোকজন। তাই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশেষ বিবেচনা করে দুই পরিবারের সম্মতি নিয়েই এই বিয়ে দেওয়া হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিয়ে


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ