বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ছাগলনাইয়ায় পরিবহণ সেক্টরে চলছে চাঁদাবাজি। বিশেষ করে সিএনজি স্ট্যান্ডে বেপরোয়া চাঁদাবাজি চলছে। সিএনজি স্ট্যান্ডে শ্রমিক কল্যাণ নামে কয়েকজন শ্রমিক নেতা নিরীহ শ্রমিকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা উঠিয়ে নিজেরাই আত্মসাৎ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডে তারা প্রতিদিনই টাকা দেয়। সিএনজি স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি এখন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। চাঁদাবাজিতে লিপ্ত রয়েছে শক্তিশালী একটি সিন্ডিকেট। প্রকাশ্যে এসব চাঁদাবাজি চললেও এব্যাপারে প্রশাসন অনেকটা নির্বিকার। নেয়া হচ্ছেনা কোন কার্যকারী পদক্ষেপ। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাগেছে, ছাগলনাইয়া-ফেনী, ছাগলনাইয়া-মুহুরীগঞ্জ, ছাগলনাইয়া-করেরহাট, ছাগলনাইয়া-পরশুরামসহ ৪টি বড় এবং বেশ কয়েকটি গ্রাম্য সড়কে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার সিএনজি অটোরিকশা প্রতিদিন চলাচল করে। প্রতিটি সিএনজি গাড়ী থেকে দৈনিক ২০ টাকা হারে শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের নামে এবং মাসে টোকেনের জন্য ৫০০ টাকা করে আদায় করা হয়। এসব টাকা আদায় করার জন্য নির্ধারিত লোক রয়েছে। প্রতিটি স্ট্যান্ডেই রয়েছে ঐ সিন্ডিকেটের নিয়োগপ্রাপ্ত লাইনম্যান। ওই লাইন ম্যানের হাতেই নির্ধারিত অংকের চাঁদার টাকা আদায় করা হয়। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ছাগলনাইয়া উপজেলা সিএনজি অটোরিকশার চালক সমিতির সভাপতি নুরুল আফসার ও সেক্রেটারি ফারুক। আবার নতুন করে কোন গাড়ী স্ট্যান্ডে আসলেই ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে জমা দিতে হয়। নির্ধারিত হারে চাঁদা পরিশোধ না করে কারো পক্ষে স্ট্যান্ড ব্যবহার করা সম্ভব হয়না। চালকরা স্বেচ্ছায় চাঁদা দিতে না চাইলে মারধর করে কেড়ে নেয়া হয় চাবি। কয়েক মাস পূর্বে চালকদের পরিচয় পত্র বানিয়ে প্রত্যেক চালকের কাছ থেকে ৩শ টাকা করে আদায় করা হলেও ওই পরিচয় পত্রটি তৈরি করতে খরচ হয় মাত্র ৩০ টাকা। বাকী টাকা শ্রমিক নেতারা আত্মসাৎ করেন বলেও চালকদের অভিযোগ। এছাড়াও বিভিন্ন অজুহাতে চালকদের চাঁদা দিতে হয়। এসব ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে চালকরা প্রতিবাদ করলে কথিত শ্রমিক নামধারী নেতারা পুলিশের দেবার ভয় দেখায় এবং নানাভাবে হয়রানী করে। জানাগেছে, গত এক দশক আগে বিভিন্ন সড়ক থেকে যাত্রীবাহী বাস উঠে যাওয়ায় ছাগলনাইয়া উপজেলার অভ্যন্তরে বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক ও জেলা শহর ফেনীর সঙ্গে সর্বসাধারণের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে সিএনজি অটোরিকশা ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব সড়কগুলোতে আবারো বাস সার্ভিস চালু করা দাবী উঠলেও এখনো পর্যন্ত তাদের সে দাবী আলোর মুখ দেখেনি। সিএনজি গাড়ী চালকদের দাবী অবিলম্বে শ্রমিক কল্যাণের নামে নেতাদের এধরনের চাঁদাবাজি বন্ধ করে গাড়ী চালানোর সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক। এব্যাপারে জানতে চাইলে ছাগলনাইয়া উপজেলা সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল আফসার সাংবাদিকদের জানান, চালক কল্যাণ সমিতির জন্য এবং টোকেনের জন্য টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেছেন, তারা চালকের লাইসেন্স, গাড়ী কাগজপত্রসহ বিভিন্ন সমস্যাগুলো সমাধানে ওই টাকা ব্যয় করেন। এব্যাপারে ছাগলনাইয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, গত কিছুদিন পূর্বে ছাগলনাইয়া পৌরসভার মেয়র এম মোস্তফা উপজেলার আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বলেছেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে সিএনজি স্ট্যান্ড গুলি ইজারা দিয়ে টোল আদায় করা হয়। অপরদিকে শ্রমিকরা শ্রমিক কল্যাণ তহবিল এবং শ্রমিকদের যেকোনো দুর্ঘটনা, অসুস্থতা. আহত বা নিহতদের সহযোগিতার জন্য কিছু টাকা তুলে থাকেন। তবে ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল সিএনজি ভাড়া নৈরাজ্য এবং সিএনজি স্ট্যান্ডের শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সিএনজি ভাড়া নির্ধারণ করতে বললে সর্বসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে তিনি ছাগলনাইয়ার ৪টি সড়কে ভাড়া পূণঃনির্ধারণ করে দেন। ছাগলনাইয়া থেকে ফেনী ২৭ টাকা, ছাগলনাইয়া-মনুরহাট ২২ টাকা, ছাগলনাইয়া থেকে মুহুুরীগঞ্জ ২৭ টাকা, ছাগলনাইয়া থেকে চাঁদগাজী ১৫ টাকা, ছাগলনাইয়া থেকে পাঠাননগর ১৫ টাকা, ছাগলনাইয়া থেকে করৈয়া ১৫ টাকা, ছাগলনাইয়া থেকে মির্জাবাজার ১০ টাকা ও ছাগলনাইয়া থেকে শুভপুর ২২ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।