নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচকে ঘিরে গত দুই দিন একটি সংখ্যা ঘুরে ফিরে এসেছে বার বার- ৩১৬। বিশ্বকাপে সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত করতে এই ব্যবধানে জিততে হত পাকিস্তানকে। কাকতালীয়ভাবে এই রানটাই বাংলাদেশ লক্ষ্য হিসেবে পেয়েছে গতকাল।
অসম্ভব সমীকরণের সামনে প্রথমে ব্যাট করতেই হতো পাকিস্তানকে। বাংলাদেশ টস জিতে ব্যাটে নামলে ম্যাচ শুরুর আগেই পাকিস্তানের সেমির সেই অসম্ভব সমীকরণেরও সলীল সমাধী হতো। কিন্তু ভাগ্যক্রমে টসভাগ্যে হাসলেন পাক অধিনায়ক। তাদের চারশোর্ধো রানের স্বপ্নযাত্রা শুরুতেই হোঁচট খায় দলে ফেরা মেহেদী হাসান মিরাজ আর সাইফউদ্দিনের ওপেনিং জুটির কাছে। তবে ইমাম-উল-হক ও বাবর আজমের ব্যাটে দ্রæতই ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। মাঝের ওভারগুলোতে রানের ¯্রােতে বাধ দেন মুস্তাফিজুর রহমান, মিরাজ-সাইফউদ্দিনরা। অনেকগুলো কীর্তি গড়ে মুস্তাফিজ তো টানা দ্বিতীয় ম্যাচে তুলে নিলেন ৫ উইকেট। সংগ্রহটা তাই আশার রূপ দিতে পারেনি পাকিস্তান। তবে শেষ দিকে ইমাদ ওয়াসিমের ঝড়ে ৯ উইকেটে তারা তোেল ৩১৫ রান।
দারুণ সেঞ্চুরি ইনিংসে মুস্তাফিজের সঙ্গে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম লেখান ইমাম-উল। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়ার হিসেবে সেঞ্চুরি করে ছিলেন আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিমায়। ৯৯ বলে ৭ চারে সেঞ্চুরি করা এই ওপেনার ফেরেন মুস্তাফিজের ওভারে ঠিক তার পরের বলেই হিট আউটের শিকার হয়ে। তার আগে দারুণ ইয়োর্কারে বাবরকে সেঞ্চুরি করতে দেননি সাইফউদ্দিন। তবে ৯৮ বলে ১১ চারে গড়া ৯৬ রানের ইনিংসের পথে জাভেদ মিয়াঁদাদকে (৪৩৭) ছাড়িয়ে বিশ্বকাপের এক আসরে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ (৪৭৪) রান সংগ্রাহক বনে যান বাবর।
অষ্টম ওভারে ২৩ রানে ফখর জামানকে হারানো পাকিস্তান দ্বিতীয় উইকেটে ইমাম-উল-বাবরের ১৫৭ রানের জুটিতেই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের সামনে তখন বিশাল লক্ষ্যের চোখ রাঙানি। ৩২তম ওভারে পাকিস্তানের রান ছিল ১ উইকেটে ১৮০। তখনই দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে আসা সাইফউদ্দিনের হাত থেকে বের হয় সেই দুর্দান্ত ইয়োর্কার। রিভিউ নিয়েও লেগ বিফোরের হাত থেকে বাঁচতে পারেননি ৫৭ ও ৬৩ রানে মোসাদ্দেক ও মুশফিকুর রহিমের হাতে জীবন পাওয়া বাবর।
তবে রানের ¯্রােতে বাধ আসে দলীয় ৪২তম ওভারে ২৪৬ রানে ইমাম-উল বিদায় নেয়ার পর। পরের দুই ওভারে মোহাম্মাদ হাফিজ ও হারিস সোহেলকে ফেরান মিরাজ ও মুস্তাফিজ। খানিক বাদে ইমাদের জোরালো শটে নন স্ট্রাইক প্রান্তে দাঁড়ানো সরফরাজ আহমেদ হাতে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন।
দ্বিতীয়বার সরফরাজ যখন মাঠে ফেরেন মুস্তাফিজ তখন হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে। কোন রকমে ঠেকিয়ে এক রান নেন পাক অধিনায়ক। এর আগে টানা দুই বলে ইমাদকে নিজের হাতে ক্যাচ বানানোর পর মোহাম্মাদ আমিরকে উইকেটের পিছনে ক্যাচ বানিয়ে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ও আসরে টানা দুই ম্যাচে ৫ উইকেটের কোটা পূর্ণ করেন মুস্তাফিজ। বিশ্বকাপের এক আসরে দেশের হয়ে দুবার ৫ উইকেট নেয়া একমাত্র বোলার তিনিই। একই সাথে দেশের দ্রæততম বোলার হিসেবে (৫৪ ম্যাচে) ১০০ উইকেটের মাইলফলক পূর্ণ করেন কাটার মাস্টার। আগের দ্রæততম ছিল আব্দুর রাজ্জাকের (৬৯)। সব মিলে বিশ্বের চতুর্থ দ্রæততম বোলার হিসেবে এই কীর্তি গড়েন মুস্তাফিজ। একই সঙ্গে ২০ উইকেট নিয়ে তরুণ পেসার উঠে এসেছেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে। তবে এজন্য মুস্তাফিজকে খরচ করতে হয়েছে ৭৫ রান। ৩ উইকেট নেয়া সাইফের খরচ ৭৭।
এক উইকেটে পেলেও ১০ ওভারে মাত্র ৩০ রান দেন মিরাজ। গ্রাউন্ড ফিল্ডিংটা আরেকটু ভালো হলে আরো কম রানে আটককানো যেত পাকিস্তানকে। সেমিফাইনালের আশা শেষ হওয়ায় এর প্রভাব দেখা যায় ফিল্ডিংয়ে।
জবাবে ব্যাট হাতে এদিনও ব্যর্থ দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ওতামিম ইকবাল। ষষ্ঠ ওভারে দলীয় ২৬ রানের মধ্যে সৌম্যের অবদান ২২। তামিমের ২১ বলে ৮ রানের লড়াকু ইনিংস শেষ হয় শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে। চোটের শঙ্কা কাটিয়ে একাদশে থাকা মুশফিকও দিবায় নেন দলকে বিপদে ঠেলে দিয়ে দলীয় ৭৮ রান। দলের প্রধান কাÐারি সাকিবের ঘাড়ে তখন পাহাড়সম চাপ। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দলীয় স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১৭.২ ওভারে ৭৮।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।