নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
যে কোনো দলের জন্যই ভারত কঠিন প্রতিপক্ষ তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বাংলাদেশের বিপক্ষে দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের শক্তির পার্থক্যও চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এরপরও ভারত যে অজেয় তা নয়। এজন্য প্রতিপক্ষকে এগোতে হয় সাবধানে। নিয়ন্ত্রিত বোলিং আর দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে নিজেদের কাজটা করতে পারলে যে কোনো প্রতিপক্ষই চাপে পড়তে বাধ্য। অথচ বিশ্বকাপের বাঁচা মরার ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ঠিক উল্টোটাই করছে টস হেরে বোলিং নামে বাংলাদেশ।
ক্যাচ মিসকে ধরা হয় খেলারই অংশ। আবার ক্রিকেটে ‘ক্যাচ মিস যে ম্যাচ মিস’ এ কথাও ভীষণ বড় সত্য। সেটা আরও বেশি প্রকট যখন ক্যাচ ফসকায় এমন কারো যার কিনা ক্ষমতা আছে একাই সব তছনছ করে দেওয়ার। তামিম ইকবাল যার লোপ্পা ক্যাচ ফেলে দিলেন, সেই রোহিত শর্মার ওয়ানডেতেই আছে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি। ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপে টিকে থাকার মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তামিমের ঐ ক্যাচ মিসেই ম্যাচের শুরু থেকেই ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। আর যার ক্যাচ ফেলেছেন সেই রোহিত উঠেছেন অনন্য উচ্চতায়। এক আসরে সর্বোচ্চ চারটি সেঞ্চুরি তুলে বসেছেন লঙ্কান কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারার (২০১৫) পাশে। মোট ৫ সেঞ্চুরি নিয়ে যোগ দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান রিকি পন্টিং আর সাঙ্গাকারার সঙ্গে, বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৬ সেঞ্চুরি নিয়ে সামনে আছে কেবল ভারতীয় ব্যাটিং গ্রেট শচিন টেন্ডুলকার।
তবে এত্তোসব কীর্তি গড়তে সবচেয়ে বড় সহায়তাটি ছিল দেশের সবচেয়ে তুখোড় ফিল্ডার তামিমের। মাশরাফি, সাকিব, মুশফিকের পর চতুর্থ বাংলাদেশি হিসেবে নেমেছিলেন ২০০তম ওয়ানডে খেলতে। ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখার বদলে গøানির এক স্মৃতি হয়েই পোড়াবে দেশসেরা এই ওপেনারকে। বাজে ফিল্ডিংয়ের পর ব্যাট হাতে প্রয়োজন ছিল দলের রানতাড়ায় অবদান রাখার। সেখানেও ব্যর্থ দেশসেরা এই ব্যাটসম্যান। শুরু থেকেই অনিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংয়ে ৩১ বল খেলে ফেরেন মাত্র ২২ রানে!
ঘটনা চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে। মুস্তাফিজুর রহমানের বলটা মিড উইকেট দিয়ে উড়াতে গিয়েছিলেন রোহিত। ব্যাটে বলে ঠিকমতো নিতে পারেননি। ডিপ স্কয়ার লেগ থেকে বেশ খানিকটা দৌঁড়ে এসে হাতের মধ্যেই ক্যাচ পেলেন তামিম। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে ভাবে গড়বড় করে ফেলে দিলেন সেই ক্যাচ। এমন একজনের ক্যাচ, যিনি সেট হয়ে বনে যান খুনে। যার তিক্ততা টের পেয়েছে ইংল্যান্ডও। দুই অঙ্কে যাওয়ার আগেই সেদিন তার ক্যাচ ফেলে দিয়েছিলেন জো রুট। সেঞ্চুরির আগে আর থামানো যায়নি রোহিতকে। গতকালও নামের পাশে লিখিয়ে নিয়েছেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগার।
তখন মাত্র ৯ রানে ছিলেন রোহিত। ভারত ছিল মাত্র ১৮ রানে। জীবন পেয়ে দুর্বার থেকে আরও দুর্বার হয়ে ওঠেন বিধ্বংসী এই ওপেনার। ৪৫ বলে তোলেন ফিফটি, সমান তালে খেলে সেঞ্চুরিতে পৌঁছান ৯০ বলে। টুর্নামেন্টে চতুর্থ সেঞ্চুরি করতে মেরেছেন ৬ চার আর ৫ ছক্কা। বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যানকে ১০৪ রানে ফিরিয়েছেন অনিয়মিত বোলার সৌম্য সরকার। সৌম্যের বলে পেটাতে গিয়ে মিড অফে লিটন দাসের হাতে জমা পড়েন তিনি। সহজ ক্যাচ মিস হতে পারতো আরেকটি। ৪৩তম ওভারের খেলা চলছিল। ধুন্ধুমার শুরু করে বড় কিছুর আমা দেখাচ্ছিলেন ঋষভ পন্তও। এগোচ্ছিলেন ফিফটির দিকে। ৪৮ রানের মাথায় সাকিব আল হাসানের একটি বল উেিয় মারতে চেয়েছিলেন পন্ত। সরাসরি গিয়ে পড়লো স্কয়ারে দাঁড়ানো মোসাদ্দেক হোসেনের হাতে। তবে দ্বিতীয় চেষ্টায় শরীরের সহায়তা নিয়ে তালুবন্দী করেন এই তরুন অলরাউন্ডার।
এবার বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষে ওপেনারদের আলগা করতে বেশ হ্যাপা পোহাতে হচ্ছিল বাংলাদেশকে। নতুন বলে আসছিল না উইকেট। অন্যদিকে ভারত টপ অর্ডারেই পাচ্ছিল রান। টপ অর্ডার ধসে গেলে ভুগছিল তাদের মিডল অর্ডার। মাশরাফি বিন মুর্তজার প্রথম ওভারেই ১০ রান তুলে নেয় রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল জুটি। এরপর অধিনায়ক বোলিংয়ে আসেন দশম ওভারে। মাঝে সাইফউদ্দিন ও মুস্তাফিজের বল যে রোহিত-রাহুল জুটি সাচ্ছন্দে খেলেছে তা কিন্তু নয়। তবে বাজে ফিল্ডিংয়ের সুবাদে রান এসেছে তরতর করে। প্রথম ১০ ওভারে তাই উইকেট নেওয়া ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের জন্য। মুস্তাফিজ উইকেট এনেও দিয়েছিলেন। কিন্তু রাখতে পারলেন না তামিম। এই ক্যাচ মিসের পর বদলে গেছে বাংলাদেশের শরীরী ভাষাও। যার খেসারত, রানের চূড়ায় তুলেছে ভারতকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।