নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মাঝে পেরিয়ে গেছে চারটি বছর। অথচ সেই হারের স্মৃতি এখনো দগদগে। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল; ভারতের কাছে ১০৯ রানের হার। নো বল বিতর্ক, মাহমুদউল্লাহর আউট... আইসিসি ও আম্পায়ারদের পক্ষপাতমূলক আচরণে জয়বঞ্চিত হতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। সেই ক্ষত আজও পোড়ায় ১৬ কোটি বাংলাদেশিকে। যদিও কিছু বাংলাদেশি ভারতের সমর্থন করতো, সেই ঘটনার পর থেকে তা কমে এসেছে শূণ্যের কোটায়।
সময়ই এতদিন পর ফিরিয়ে এনেছে সে দুঃসহ স্মৃতি। গত বিশ্বকাপে সেটাই ছিল বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ। এবার বিশ্বকাপে ঠিক শেষ ম্যাচ নয়, তবে সেমিফাইনালে ওঠার দৌড়ে নানা সমীকরণ মেলানো শুরুর ম্যাচটা বাংলাদেশকে খেলতে হচ্ছে সেই ভারতের বিপক্ষেই। মাশরাফি বিন মুর্তজার দল এমনিতেই জটিল সমীকরণের মুখে। হারলে একরকম বেজে যাবে বিদায় ঘন্টা।
জিতলে টিকে থাকবে সেমির স্বপ্ন। তবে আরেক হিসেবে বাংলাদেশের অলিখিত ফাইনালই যে আজ! ক্রিকেটে বিগ থ্রি’র সেই ভারতকে হারানো বাংলাদেশের একটি আরাধ্য স্বপ্ন। বাংলাদেশের প্রবল প্রতিপক্ষ বনে যাওয়া ভারতের বিপক্ষে জেতা মানে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ জেতার-ই সমান। আগের ম্যাচেই যারা হেরেছে আসরের অন্যতম ফেভারিট স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে। চাপে থাকা সেই ভারতকে আরো চেপে ধরতে চায় বাংলাদেশ।
এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে কেবল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল। আশা টিকে আছে পাকিস্তান আর বাংলাদেশেরও। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিতে খেলার স্বপ্ন নিয়ে এবার ইংল্যান্ডের মাটিতে পা রেখেছে বাংলাদেশ। সাত ম্যাচে টাইগারদের অর্জন ৭ পয়েন্ট। মাশরাফির দল জিতেছে তিনটিতে। হেরেছে সমানসংখ্যক ম্যাচে। বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে বাকিটি।
বিশ্বকাপের পয়েন্ট তালিকা বলছে, বাংলাদেশের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিতে হলে বাদ পড়তে হবে ইংল্যান্ড কিংবা নিউজিল্যান্ডের যে কোনো একটি দলকে। সমান আট ম্যাচ খেলে কিউইদের অর্জন ১১ পয়েন্ট, ইংলিশদের ১০। এই তালিকায় ভারতও আছে। তবে তাদের হাতে রয়েছে দুটি ম্যাচ। শেষটি আবার দুর্বল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। তাছাড়া, ভারত রান রেটেও অনেক এগিয়ে (+০.৮৫৪)। তাই তাদের শেষ চারে খেলাটা একরকম নিশ্চিতই।
ইংল্যান্ডের কাছে গতপরশুর হার ধরলে এই দশকে মাত্র তিনটি বিশ্বকাপ ম্যাচ হেরেছে ভারত। ইংল্যান্ডের কাছে হারলেও তাদের সেমিফাইনালে যাওয়া অবশ্য আটকাচ্ছে না। তবে কোনোরকম টেনশন এড়াতে পরের দু’টো ম্যাচের অন্তত একটায় জিততে হবে। ইংল্যান্ড ম্যাচে চোখে পড়েছে ভারতের দুর্বলতাগুলো। ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের আটকাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে ভারতের স্পিনাররা। কোহলি আর রোহিত শর্মার মজবুত জুটি সত্তে¡ও ভারতের মিডল অর্ডারের ব্যাটিঙে জোরদার জেতার ইচ্ছে কখনোই ধরা পড়েনি। বাংলাদেশের মুখোমুখি হওয়ার আগে আশা করা যায় এই সমস্যাগুলোর সমাধান খোঁজার চেষ্টা করবেন অধিনায়ক কোহলি।
এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভাগ্য যতবার মুখ তুলে তাকিয়েছে, প্রায় ততবার মুখ ফিরিয়েও নিয়েছে। সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্যে তাদের পরের দু’টো খেলায় ভারত আর নিউজিল্যান্ডকে হারাতে হবে, আর চোখ রাখতে হবে অন্য দলের ফলাফল আর নিজেদের নেট রান রেটের দিকে। যতগুলো খেলা হয়েছে, তার নিরিখে বলা যায়, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা নিঃসন্দেহে বোলারদের থেকে বেশি সফল। এই ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ দলে ফিরলে মিডল অর্ডার আরও শক্তিশালী হবে বাংলাদেশের। তবে কাঁধের সঙ্গে হ্যামিস্ট্রিংয়ের চোট তা ফেলে দিয়েছে শঙ্কায়। গত দু’দিন অনুশীলন করলেও রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডাররের ব্যাপারে কোন সুখবর মেলেনি বাংলাদেশ দল থেকে।
যদি মাহমুদউল্লাহর খেলা কোন কারণে না-ই হয়, তবে গুরু দায়িত্ব বহন করতে হবে সাকিব আল হাসানকে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ভালো খেললে বাংলাদেশ ভালো খেলবে- ব্যাপারটা খানিকটা এরকমই হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রানকারীদের মধ্যে এই মুহূর্তে তৃতীয় সাকিব। ভারতের মতো কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সাকিবের অভিজ্ঞতা বড় ভূমিকা নিতে পারে। মাঝের ওভারে রানের গতি বাড়ানোর সঙ্গে কুশলী স্পিনে প্রতিপক্ষের রানের গতি কমিয়ে দিতে সাকিবের জুড়ি নেই।
তবে পাল্লা দিয়ে ভাবাচ্ছে রোহিত শর্মার ফর্মে ফেরাও। ইংল্যান্ডের বোলারদের বিরুদ্ধে শুরুর দিকে খুব স্বচ্ছন্দ না দেখালেও তাতে এই বিশ্বকাপে তাঁর তৃতীয় শতরান আটকায় নি এই ওপেনারের। ২০১৫ বিশ্বকাপে তাঁর ১৩৭ রানের ইনিংসের জোরে ভারত বাংলাদেশকে হারিয়ে পরের রাউন্ডে ওঠে।
ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচে এই মাঠে দু’ইনিংসেই তিনশোর ওপর রান উঠেছে, তাই আজও প্রচুর রানের ম্যাচ হবে সে আশা করাই যায়। এবারের বিশ্বকাপে তিনশোর্ধ রান তাড়া করে জিতেছে কেবল বাংলাদেশই। রান বন্যার এই বারুদে ম্যাচে বাংলাদেশ কি পারবে ২০১৫ সালে হওয়া অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।