নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
রেকর্ড লক্ষ্য তাড়ায় মিডিল অর্ডারদের জন্য দারুণ ভীত গড়ে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা। উইকেটে থিতু হয়েও চ্যালেঞ্জটা নিতে পারলেন না ঋষব পন্ত-হার্দিক পান্ডিয়া-মাহেন্দ্র সিং ধোনি-কুলদিপ যাদবরা। ভারতকে আসরে প্রথম পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ উপহার দিয়ে সেমিফাইনালের আশা উজ্জ্বল করেছে বিশ্বকাপ স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
বার্মিংহামের এসবাস্টনে রান তাড়া করে জয় পাওয়া কঠিন। এখানে চারশ রানের ইনিংসও আছে বটে কিন্তু সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ২৬৪। গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রাফিতে বাংলাদেশের এই রান তাড়া করে জিতেছিল ভারত। এবার সেই ভারতের সামনে ইংল্যান্ড ছুড়ে দেয় ৩৩৭ রানের চ্যালেঞ্জ। শুধু মাঠ নয়, জিততে হলে বিশ্বকাপেই রান তাড়ার রেকর্ড গড়তে হত কোহলির দলকে। পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করে হাতে ৫ উইকেট নিয়েও ভারত আটকে যায় ৩০৬ রানে। ৩১ রানের জয়ে কক্ষপথে ফেরে বিশ্বকাপ ফেভারিট ইংল্যান্ড।
১৯৯২ বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মত ভারতকে হারালো ইংলিশরা।
টসজয়ী ইংল্যান্ডের শুরুটা ছিল বিস্ফোরক। চোট কাটিয়ে দলে ফিরে জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে দেড়শোর্ধো রানের উদ্বোধনী জুটি উপহার দেন জেসন রয়। সেই ভীতের উপর দাঁড়িয়ে ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন বেন স্টোকস। তবে শেষ দিকে মোহাম্মাদ শামির দারুণ বোলিংয়ে সংগ্রহটা প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়াতে পারেনি ইংল্যান্ড। আর সেটাই আশা দেখাচ্ছিল ভারতকে। কোহলি-রোহিতের ব্যাটে সেই পথেই ছিল তারা। শেষ ৮৪ বলে দরকার ছিল ১৪০ রান। হাতে আট উইকেট নিয়েও লক্ষ্যটা পেরুতে পারেনি সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। শেষ চারের অপেক্ষাও তাতে বেড়েছে কোহলিদের।
ইংল্যান্ডের এই জয় বাংলাদেশের সেমির স্বপ্ন কঠিন করে দিয়েছে। এক্ষেত্রে শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের হার কামনার পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে জিততেই হবে বাংলাদেশকে।
তৃতীয় ওভারে লোকেশ রাহুলকে হারানো ভারতের শুরুটা ছিল ধীর। ১৪তম ওভারে আসে দলীয় ফিফটি। সময় গড়ানোর সাথে সাথে খোলোস থেকে বের হন রোহিত। কোহলি ছিলেন নিজের চেনা ছন্দে। এই প্রথম ক্যারিয়ারের টানা পাঁচ ফিফটিকে তিনি শতকে রূপ দিতে ব্যর্থ হলেন। লিয়াম প্লাঙ্কেটের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে করেন ৭৬ বলে ৬৬, ভাঙে ১৩৮ রানের জুটি।
রোহিত আউট হন আসরের তৃতীয় ও ক্যারিয়ারের ২৫তম সেঞ্চুরি তুলেই। সৌরভ গাঙ্গুলির পর দ্বিতীয় ভারতীয় ও সব মিলে পঞ্চম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের এক আসরে তিন বা তার বেশি সেঞ্চুরি করলেন রোহিত। ১০৯ বলে করা তার ১০২ রানের ইনিংসটি সাজানো ১৫টি চারে।
এই ভীতের উপর দাঁড়িয়ে বিশ্বকাপে অভিষিক্ত পন্ত (২৯ বলে ৩২), পান্ডিয়া (৩৩ বলে ৪৫), ধোনি (৩১ বলে ৪৫*) ও যাদব (১২ বলে ১৩*) যথেষ্ঠ সময় পেয়েও ম্যাচটা বের করতে পারেননি। কিছুটা চেষ্টা ছিল পান্ডিয়ার ব্যাটে। ধোনির নজর ছিল রানের চেয়ে ক্রিজে আটকে থাকার দিকে। ৫৮ রানে ২ উইকেট নেন বাউন্ডারি থেকে ঋষবের দুর্দান্ত ক্যাচ নেয়া ওকস। ৫৫ রানে ৩ উইকেট নেন প্লাঙ্কেট।
এর আগে সাবধানী শুরুর পর দুই ইংলিশ ওপেনার হাত খোলা শুরু করেন পান্ডিয়া বোলিংয়ে আসার পর। আরো স্পষ্ট করে বললে ভারত ‘ভুলটা’ করার পর। পান্ডিয়ার লাফিয়ে ওঠা বল পুল করতে চেয়েছিলেন রয়। বল তার গ্লাভস ছুঁয়ে আশ্রয় নেয় মাহেন্দ্র সিং ধোনির গ্লাভসে। আপিলও হয়। কিন্তু আম্পায়ার আলিম দার দেন ওয়াইডের সংকেত। রিভিউ নেয়নি ভারত।
ইংল্যান্ড ইনিংসের তখন একাদশতম ওভার। দলীয় রান ৪৯, রয়ের পাশে ২১। পরের দুই বলে টানা ছক্কা-চার হাঁকিয়ে রয় বুঝিয়ে দেন বড় ভুল করে ফেলেছে ভারত। রয়-বেয়ারস্টোর ঐ জুটি থেকেই পরের দশ ওভারে আসে ১০৯ রান। ২২তম ওভারে রয় যখন ফেরেন তখন তার নামের পাশে ৫৭ বলে ৬৬। বিচ্ছিন্ন হয় ১৬০ রানের জুটি।
৩০ ওভারে আসে দলীয় ২০০। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে খুনে মেজাজে ক্রিজে ছিলেন বেয়ারস্টো। ৩৬০-৩৭০ মনে হচ্ছিল খুব সম্ভব। ৩১তম ওভারে ৯০ বলে ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি পূর্ণ করা বেয়ারস্টো আউট হন শামির প্রথম শিকার হয়ে। ১০৯ বলে ১০ চার ও ৬ ছক্কায় ১১১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। নিজের পরের ওভারে অধিনায়ক ইয়ন মরগানকেও ফেরান শামি। ভাটা পড়ে ইংল্যান্ডের রানে। চতুর্থ উইকেটে জো রুট (৫৪ বলে ৪৪) ও বেন স্টোকসের ৭০ রানের জুটিও বিচ্ছিন্ন করেন শামি। ৮ বলে ২০ রান করা জস বাটলারকেও দ্রুত ফিরিয়ে রানে বাধ দেন এই ডানহাতি। নিজের শেষ ওভারে ক্রিস ওকসকে তুলে নিয়ে পূর্ণ করেন ৫ উইকেটের কোটা।
শামি তাণ্ডবের মাঝে বুক চিতিয়ে ব্যাট করেন স্টোকস। বুমরাহর করা ইনিংসের শেষ ওভারের আউট হওয়ার আগে ৫৪ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৯ রান করেন এই অলরাউন্ডার।
ভারতের দুই স্পিনারই ছিলেন খরুচে। ৮৮ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন যোগেন্দ্র চাহাল। যাদব ৭২ রানে নেন ১ উইকেট। শামির ৫ উইকেট আসে ৬৯ রানের খরচায়। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৪৪ রানে ১ উইকেট নেন বুমরাহ।
ইংল্যান্ড : ৫০ ওভারে ৩৩৭/৭
ভারত : ৫০ ওভারে ৩০৬/৫
ফল : ইংল্যান্ড ৩১ রানে জয়ী
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।