Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০১৯, ১২:০৯ এএম

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীর উপর নির্মিত হাবিলদার আব্দুল হালিম রেলওয়ে ব্রিজ (পুরাতন) ও রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান রেলওয়ে ব্রিজের (নতুন) উপর দিয়ে অবাধে মানুষজন হাটাচলা করছে। জনসাধারণের ব্রিজ পারাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড ঝুলানো থাকলেও ব্রিজের দুই পাড়ে নেই কোন গার্ড। ফলে ব্রিজের সম্মুখে থাকা সাইনবোর্ডের তোয়াক্কা না করে মানুষজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হেঁটেই পাড় হচ্ছে দুই ব্রিজের উপর দিয়ে। ভৈরব-আশুগঞ্জ দুই প্রান্ত দিয়েই অবাধে যাতায়াতের ফলে সেতুর উপর ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। রেলওয়ের নতুন ব্রিজের উপর ছিনতাইকারীদের হাতেও কয়েক মাস আগে নিহত হয়েছে এক পথচারী যুবক। সেতুর প্রবেশমুখ, সেতুর উপরে ও সেতুতে উঠার সিঁড়ির কাছে প্রতিনিয়তই একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র দর্শনার্থী ও পথচারীদের জিম্মি করে লুটে নিচ্ছে মোবাইল ফোন, স্বর্ণের চেইনসহ মুল্যবান জিনিসপত্র। ছিনতাইকারীদের দাঁড়ালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে অহরহ। এসকল ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় হত্যাকান্ডসহ ছিনতাইয়ের ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, পুরাতন রেলব্রিজ ও দ্বিতীয় রেল ব্রিজে পাড়াপাড় নিষেধ থাকলেও দুই প্রান্তে কোন গার্ড না থাকায় দল বেঁধে ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচল করছে শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের লোকজন। এতে নানা দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মানুষজন। স্থানীয়রা আরো জানান, সুযোগ পেলেই ব্রিজ দেখতে আসা দর্শনার্থী ও পথচারীদের জিম্মি করে একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র লুটে নিচ্ছে তাদের মুলবান জিনিসপত্র। দুটি রেলব্রিজ ও একটি সড়ক সেতুর উপর ও আশে পাশের কেপিআইভুক্ত এলাকাতে কোন প্রকার নিরাপত্তা না থাকায় বিগত কয়েক বছরেই ছিনতাইকারীদের হাতে পুলিশ সদস্যসহ বেশ পথচারী ও দর্শনার্থী নিহত হয়েছেন আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক। শুধুমাত্র সাইনবোর্ড লাগিয়েই ব্রিজ কর্তৃপক্ষ তাদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

দর্শনাথীরা জানান, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রায়ই ব্রিজ দেখতে এসে কিছুটা আনন্দ উপভোগ করি। ব্রিজের উপরে কোন র্গাড নাথাকায় অনায়েশে ব্রিজের উপরেও ঘুরাঘুরি করা যায়। এখানে দুই ব্রিজের নিচে একটি পুলিশ ক্যাম্প থাকলেও তাদের দেখা কম পাওয়া যায়। তারা শুধু ক্যাম্পের ভিতরই শুয়ে বসে ডিউটি করেন বলে অভিযোগ করা হয়। বেশ কয়েকটি খুনের ঘটনায় এখানে এসে ছিনতাইকারীদের ভয়ে দর্শনার্থীরা সবচেয়ে আতংকে থাকেন বলে জানান।

ব্রিজের পাশে থাকা পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ৮জন সদস্য ব্রিজঘাট এলাকার সার্বিক নিরাপত্ত¡ার দায়িত্বে নিয়োজিত আছি। সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শিফটে ডিউটি করে থাকি।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মোখলেছুর রহমান বলেন, ব্রিজ এলাকাটি সরকারি কেপিআইভুক্ত হিসেবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অধীনে থাকার পরও ব্রিজের নিরাপত্ত¡ায় আমাদের পুলিশ সদস্যরা দিনে রাতে পাহাড়ার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন।
ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ (পিপিএম) বলেন, রেল ব্রিজ ও রেল লাইনের উপর ১৪৪ ধারা জারি থাকে সবসময়। ব্রিজের উপর দিয়ে মানুষের হাটা চলা সম্পূর্ণ বেআইনী। ব্রিজের উপর দিয়ে হাটা চলার কারণে রেলওয়ে পুলিশ বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে থাকে। অপরদিকে ওই এলাকায় ছিনতাইকারিদের উৎপাত থাকায় বেশ কিছু ছিনতাইসহ হত্যাকান্ডের ঘটনায় সাথে জড়িতদের গ্রেফতারও করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিষেধাজ্ঞা


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ