বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এদেশের খুব প্রচলিত একটা কথা "রোগীর চেয়ে ডাক্তার বেশি"। কেউ অসুস্থ হলেই যে যার মতো চিকিৎসা পদ্ধতি বাতলে দিতে একদম ই সময় নেন না। কিন্তু এবার বোধহয় এ কথাটি বদলানোর সময় এসেছে। এখন পরিবেশ পরিস্থিতির সাথে মিলিয়ে বলা যেতেই পারে " অভিনেতার চেয়ে ক্যামেরাম্যান বেশি"। এবং এই কথাটি যে একদম ই যথার্থ তা আশে পাশে তাকালেই বেশ মিলিয়ে নেয়া যায়। প্রযুক্তির কল্যানে এখন সবার হাতে হাতেই মোবাইল। যার ফলে কোন ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই আমরা সামাজিক মাধ্যমে এর ভিডিও চিত্র দেখতে পারি। এতে যে আমাদের লাভ হচ্ছে না তাও কিন্তু নয়। কিন্তু সবচেয়ে লজ্জার ব্যপার এই যে মাঝে মাঝে ব্যাপারটি এতটাই দৃষ্টিকটু হয়ে দাঁড়ায় যা আসলেই আমাদের বিবেক কে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলে। কোথাও কোন দুর্ঘটনা ঘটেছে? মানুষজন সাহায্যের জন্য চিৎকার করছে।কিন্তু কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসছে না। সবাই মোবাইলে চিত্রটি ধারণ করতে ব্যস্ত। অথচ তখন ভিডিও এর চেয়ে অনেক অনেক বেশি প্রয়োজন ছিলো আক্রান্ত মানুষটি কে সাহায্য করা। এটা যেন আমাদের দেশে একটা নিত্তনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে গেছে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই এই একই ঘটনা লক্ষ করা যায়। এ দেশের মানুষের বিবেক যেনো স্তব্ধ হয়ে গেছে। অথচ এই জাতির কাছেই আছে পৃথিবীর একমাত্র ভাষার জন্য আন্দোলন ও জীবন দান। নিজের দেশকে মুক্ত করতে ৭১ এর মতো যুদ্ধ। আমরা সেই সে জাতি। তাহলে আজ কেনো আমাদের এই অবস্থা? আমরা কেনো আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে পারছি না? সত্যকে সত্য বলতে কেনো আমাদের এত ভয়?
গতকাল প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনায় রিফাত শরীফ নামে এক যুবক কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শত শত মানুষের সামনে তাকে ধারালো চাপাতি দিয়ে আঘাতের পর আঘাত করে নির্মম ভাবে হত্যা করে হয়েছে। তার স্ত্রীর আর্তচিৎকার রাস্তায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা সে মানুষ গুলোর বিবেক কে স্পর্শ করতে পারেনি। অথচ সেখানে যদি আজ কোন চোর ধরা পরতো তাহলে হয়তো এ মানুষগুলোর গণপিটুনি তে জীবন হারাতে হতো। অথচ এত বড় হত্যাকান্ড হয়ে গেলো কিন্তু একটা মানুষ ও সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসলো না। তবে কি শুধু দুর্বলের বিপক্ষেই আমাদের সুপ্ত বিবেক জাগ্রত হয়?
এ ধরনের হত্যাকান্ড যে এদেশের মাটিতে আগেও হয়নি এমনটি ও নয়। বহুবার বহু সময় এ রকম ঘটনা আমরা দেখেছি। কিন্তু বেশীরভাগ সময় ক্ষমতার প্রভাবে অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায়। এত বছরেও বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার হয়নি। রিফাতের ভাগ্যে কি আছে আমার জানা নেই। শুধু মন থেকে একটাই চাওয়া অপরাধীদের যেনো এভাবেই প্রকাশ্য দিবালোকে শাস্তি দেয়া হয় যেনো আর কেউ এধরনের জঘন্য ঘটনা ঘটাতে সাহস না পায়।
পাশাপাশি আমাদের এই মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে সার্কাস দেখার স্বভাবের পরিবর্তন দরকার। কারণ আজ অন্যায়ের প্রতিবাদ না করে আপনি ঠায় দাঁড়িয়ে ভিডিও করতে ব্যস্ত আছেন। কাল হয়তো একই রকম ঘটনায় আপনার ভিডিও সোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হবে। আপনাদের এই অবস্থা থেকে কবিতার কয়েকটি লাইন চলে আসে,
ঠায় দাঁড়িয়ে, বোধ হারিয়ে
মারতে থাকা দেখি,
ক'দিন পরেই, আমার ঘরেই
লোকটা আমি একি!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।